ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনায় উত্তপ্ত সংসদ, বিরোধী দলের ওয়াকআউট

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৬ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০১১
রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনায় উত্তপ্ত সংসদ, বিরোধী দলের ওয়াকআউট

ঢাকা: রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনায় সোমবার উত্তপ্ত হয়ে ওঠে জাতীয় সংসদ। এক পর্যায়ে অধিবেশন থেকে ওয়াকআউট করে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি।



মাগরিবের নামাজের বিরতির পর সরকার দলীয় এমপি নাজমা আক্তার রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর বক্তৃতা দিতে উঠে জিয়াউর রহমানকে খুনি ও খালেদা জিয়াকে পাকিস্তান সৈন্যদের মেহমান বললে বিএনপি সংসদ থেকে ওয়াকআউট করে।

নাজমা আক্তার তার বক্তৃতায় বলেন, এদেশের কোনো আন্দোলন সংগ্রামে যাদের নাম ছিল না তাদের একজন হঠাৎ উড়ে এসে স্বাধীনতার ঘোষক হয়ে গেলেন।

তাহের হত্যা প্রসঙ্গে নাজমা আক্তার বলেন, সম্প্রতি মার্কিন সাংবাদিক লিফশুলজ স্পষ্ট করে বলেছেন জিয়াউর রহমানই কর্নেল তাহেরকে হত্যা করেছে।

স্বাধীনতা যুদ্ধে বিএনপির কোনো অবদান নেই দাবি করে নাজমা আক্তার বলেন, যে খালেদা জিয়া মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক হানাদার বাহিনীর ক্যাম্পে তাদেরকে মেহমানদারী করেছেন সেই খালেদা জিয়ার মুখে স্বাধীনতার কথা মানায় না।

তিনি আরও বলেন, এশিয়া মহাদেশে খালেদা জিয়ার দুই পুত্রের মতো এত বেশি দুর্নীতি আর কেউ করেনি। তাদের মা হয়ে খালেদা জিয়ার মুখে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলা মানায় না।

একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করে বিদেশে পাঠিয়ে তারেক-কোকো আসলেই অসুস্থ কি না তা খতিয়ে দেখার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন নাজমা আক্তার।

তার বক্তব্য শেষ হলে সরকার দলীয় এমপিরা টেবিল চাপড়িয়ে বক্তব্যের সমর্থন জানান।

এরপর বিএনপির পক্ষ থেকে বক্তব্য এক্সপাঞ্জ করার দাবি জানালে ডেপুটি স্পিকার বক্তব্য এক্সপাঞ্জ করতে অস্বীকৃতি জানান। এরপর বিরোধী দলের চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুকের নেতৃত্বে সংসদ থেকে ওয়াকআউট করে বিএনপি।

পরে মিডিয়া সেন্টারে ব্রিফিং এ জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, খালেদা জিয়া, তারেক ও  আরাফাত রহমানের বিরুদ্ধে অশোভন বক্তব্য দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সদস্য নাজমা। আমরা এ বক্তব্য এক্সপাঞ্জ করার দাবি করলেও ডেপুটি স্পিকার তা না করে পপাতমূলক আচরণ করে সময় বাড়িয়ে দিয়েছেন। এ জন্য আমরা ওয়াকআউট করেছি।

রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর বক্তৃতা দিতে উঠে রাশেদ খান মেনন বলেন, বিরোধী দলের নেতা কথায় কথায় বর্তমান সংসদকে অবৈধ বলেন। সংসদ যদি অবৈধ হয় তাহলে সেই সংসদে এসে তিনি বক্তৃতা দেন কীভাবে।

আসলে অবৈধ পন্থায় যে দলটির জন্ম সে দলের পক্ষে বৈধ কিছু মেনে নেওয়া সম্ভব না।

এর আগে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনা করতে গিয়ে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, দেশের মধ্যবিত্ত সমাজ আজ দ্রব্যমূল্যের কষাঘাতে জর্জারিত। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। তবে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণ খতিয়ে দেখতে হবে। বিশ্বব্যাপী কি অবস্থা তা বিচার করতে হবে।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দ্রব্যমূল্য ২০ ভাগ বেড়েছে। অথচ বিরোধী দলের নেতা খালেদা জিয়া এ ব্যাপারে মিথ্যা বক্তব্য দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করেছেন।

আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দর বাড়লেও সরকারের সময় মতো সঠিক পদক্ষেপের কারণে খাদ্যের জন্য গ্রাম-গঞ্জে কোনো হাহাকার নেই। পার্শ্ববর্তী দেশের তুলনায় আমাদের দেশে দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে।

অবিলম্বে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন করে জণগণকে কলঙ্কের হাত থেকে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, শেয়ার কেলেঙ্কারি হলেও প্রধানমন্ত্রী সঠিক পদক্ষেপ নেওয়ায় এখন স্থিতিশীল পরিবেশ ফিরে এসেছে। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে সেজন্য এর সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

বিরোধী দলের সংসদ সদস্য নিলুফার ইয়াসমীন মনি বলেন, সরকার একদিকে বলছে ইসলামী ব্যাংকের টাকায় জঙ্গির পৃষ্ঠপোষকতা হয়। অন্যদিকে বিশ্বকাপ উপলক্ষে ইসলামী ব্যাংকের টাকায় সাড়াদেশে নৌকা আর ইসলামী ব্যাংকের পোস্টার মিলে মিশে একাকার হয়ে গেছে। জনগণ এ ব্যাপারে তাদের অবস্থান জানতে চায়।

এডভোকেট সালমা ইসলাম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, আপনি যদি আপনার ভাই হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে সঙ্গে নিয়ে উন্নয়ন কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েন তাহলে বিরোধী দলের আন্দোলন সংগ্রাম মাঠে মারা যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১২১ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।