ঢাকা, সোমবার, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২০ মে ২০২৪, ১১ জিলকদ ১৪৪৫

রাজনীতি

রাজনৈতিক ঐতিহ্য হারাচ্ছে মির্জা বংশ!

মাহাবুর আলম সোহাগ, রোভিং করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭২৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০১৪
রাজনৈতিক ঐতিহ্য হারাচ্ছে মির্জা বংশ! ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

আটোয়ারি (পঞ্চগড়) থেকে: পঞ্চগড়ের আটোয়ারি উপজেলায় মির্জা বংশের বসবাস। এক সময়  বেশ দাপুটের সঙ্গে চলত তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম।

কিন্তু বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বংশধররা সময়ের সাথে সাথে সেই ঐতিহ্য হারাতে বসেছেন ।

জানা যায়, সর্বশেষ এ এলাকায় মির্জা বংশের রাজনৈতিক অস্বিত্ব ধরে রেখেছিলেন সাবেক আইনমন্ত্রী মির্জা গোলাম হাফিজের ছেলে মির্জা এরফান বাবু।

বর্তমানে তিনি রাজনীতি ছেড়ে সপরিবারে লন্ডনে অবস্থান করছেন। এরপর থেকে আটোয়ারির রাজনীতি অঙ্গনে মির্জা বংশের কোনো ব্যক্তি রাজনৈতিক হাল ধরেননি। ফলে টান পড়ে গিয়েছে ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায়।

এ বংশে একমাত্র আলো ছড়াচ্ছেন যে ব্যক্তিটি তিনি হলেন মির্জা ফখরুল । তবে তিনি পাশের জেলা ঠাকুরগাঁও থেকে এ বংশের ঐতিহ্য রক্ষা করছেন।

সেই সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ছোট ভাই মির্জা ফয়সাল আমিনও ঠাকুরগাঁওয়ের রাজনীতিতে নিজেকে সক্রিয় রেখেছেন।

অন্যদিকে মির্জাপুর এলাকাবাসীর দাবি জনপ্রিয়তার শীর্ষে অবস্থান করছে মির্জা বংশ।

সরেজমিনে বাংলানিউজ প্রতিবেদক মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গ্রামের বাড়িতে ঘুরতে গেলে এসব তথ্যই  জানতে পারেন।

সেখানে কথা হয় মির্জা ফখরুলের চাচা মির্জা নুরুল আমিনের সঙ্গে।

বাংলানিউজকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, মির্জা পরিবার জন্মলগ্ন থেকে রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় ঐতিহ্যবাহী পরিবার।

তিনি বলেন, বর্তমানে রাজনৈতিক অঙ্গনে মির্জা বংশের একমাত্র প্রদীপ এখন আমার ভাতিজা মির্জা ফখরুল। মির্জা ফখরুলের বাবা মির্জা রুহুল আমিন ছিলেন ঠাকুরগাঁওয়ের প্রতিষ্ঠিত নেতা। সেই সূত্রেই সে ও তার ছোট ভাই মির্জা ফয়সালও ঠাকুরগাঁওয়ে প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক নেতা।

ফখরুলের চাচা মির্জা নুরুল আমিন বলেন, মির্জা রুহুল আমিন বিয়ের পরই ঠাকুরগাঁওয়ে অবস্থান শুরু করেন। তিনি আর কখনও আটোয়ারিতে ফিরে আসেন নি।

মির্জা ফখরুলসহ তার পরিবারের সবার জন্ম ঠাকুরগাঁওয়ে। এখন তারা ঠাকুরগাঁওয়ের ঐতিহ্য, এই গ্রামের নয়। তবে তার ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে আমাদের এলাকায়। মাঝে মাঝে পরিবারসহ মির্জা ফখরুল বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আসেন। তবে রাজনৈতিক কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে এখানে আসেন না তারা। এখান থেকে নির্বাচন করার কোনো ইচ্ছে তাদের ছিল না ভবিষ্যতেও নেই বলেই জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, গ্রামে মির্জা ফখরুলের ভিটে-মাটি ছাড়া তেমন কিছু নেই। বাবার সূত্র ধরেই তাদের গ্রামে আসা। গ্রামে তাদের যেসব আবাদি জমি রয়েছে সেগুলোর খোঁজখবরও নেন না তারা।

তিনি জানান, তার বয়স ৬৮ বছর। ফখরুলের চেয়ে মাত্র তিন বছরের বড়। এজন্যই তাদের সম্পর্ক বন্ধুর মত।

আফসোসের সুরে নুরুল আমিন বলেন, আমার চাচাতো ভাই মির্জা গোলাম হাফিজের মৃত্যুর পর মির্জা পরিবারের রাজনৈতিক হাল ধরার মতো আর কেউ নেই।

দীর্ঘ আলাপে একটু ভিন্ন তথ্য জানালেন তিনি। বললেন, মির্জা ফখরুল কিন্তু ভাসানী রাজনীতি করতেন। তারপর বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন।


তিনি বলেন, রাজনীতিতে আমাদের বংশের একমাত্র প্রদীপ এখন মির্জা ফখরুল ।

মির্জা নুরুল আমিনের কথা শেষে কথা হলো মির্জা ফখরুলের প্রতিবেশী আত্মীয় ফখরুল হাসানের সঙ্গে। তিনি অবশ্য আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।

তিনি বলেন, মির্জা বংশের প্রতিটি মানুষের মতো আলমগীর ভাইয়েরও এলাকায় ব্যপক সুনাম রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, মির্জা পরিবার থেকে যে কেউ রাজনীতি করবেন তিনিই সফল হবেন।

কথা হয় মির্জা ফখরুলের ছোট ভাই মির্জা ফয়সাল আমিনের সঙ্গে।

তিনি বলেন, গ্রামের বাড়িতে গিয়ে রাজনীতি করার ইচ্ছে আমাদের কারো নেই। আমরা ঠাকুরগাঁওয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছি সেটিই ধরে রাখা এখন আমাদের মূল কাজ।

বাংলাদেশ সময়: ০৭২৬ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।