ঢাকা: বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দেশ ও জনগণের জীবন রক্ষার্থে দলমত নির্বিশেষে সকলকে ঘর থেকে বেরিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন।
তিনি সরকারের প্রতি চূড়ান্ত হুঁশিয়ারী দিয়ে বলেন, বিপর্যয় ঘটে যাওয়ার আগে, চাপের মুখে অসম্মানজনকভাবে বিদায় নিতে না চাইলে অবিলম্বে পদত্যাগ করুন।
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে পিলখানায় বিডিআর হত্যাকা-ে নিহতদের স্মরণে বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
খালেদা জিয়া বলেন, দুই বছর পেরিয়ে গেলেও পিলখানা হত্যাকা-ের সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায্য বিচার আজও হয়নি। দেশবাসী নিশ্চিত এ সরকারের আমলে এই বর্বরোচিত হত্যাকান্ডের সুবিচার হবে না।
খালেদা জিয়া বলেন, মঈনউদ্দিন-ফখরুদ্দিন দুনিয়ার যেখানেই থাকুক তাদের খুঁজে বের করে জনসম্মুখে বিচার করা হবে। আমরা বিনাদোষে জেলখানায় গিয়েছি। আর আপনাদের বিচার হবে অন্যায়ের জন্য।
তিনি বলেন, মূল ষড়যন্ত্রকারীদের সংশ্লিষ্টতা যাতে প্রকাশ না পায় সেজন্য জিজ্ঞাসাবাদের নামে অনেক বিডিআর সদস্যকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে রহস্যজনক মৃত্যুর পথে।
বেগম জিয়া বলেন, পিলখানা হত্যাযজ্ঞের মাধ্যমে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর অপরিসীম ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি ধ্বংস হয়ে গেছে আমাদের ঐতিহ্যবাহী সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিডিআর।
তিনি বলেন, আমরা জানি কারা বিডিআর হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত। সে ভাগ্নে হোক আর ভাগিদারই হোক কাউকেই ছেড়ে দেওয়া হবে না।
খালেদা জিয়া সরকারের ব্যর্থতার সমালোচনা করে বলেন, দুই বছরে সীমাহীন দুর্নীতি ও লুণ্ঠনে দেশ আজ ধ্বংসের দারপ্রান্তে দাঁড়িয়েছে। এবারও তারা ৬৪ হাজার কোটি টাকা লুট করেছে শেয়ারবাজার থেকে।
বিএনপি চেয়ারপারসন প্রধানমন্ত্রী শেখা হাসিনার পুত্র সজিব ওয়াজেদ জয়কে ইঙ্গিত করে বলেন, শাসক পরিবারের এক ভাগ্যের বরপুত্র হাজার হাজার কোটি ডলার লূট করে বিদেশী ব্যাংকে গড়ছে সঞ্চিত অর্থের পর্বত।
তিনি আরও বলেন, আরো ভয়ঙ্কর সব দুর্নীতি, লুট ও জালিয়াতির তথ্য প্রমাণ প্রতিনিয়ত আমরা পাচ্ছি। সময় হলে সেগুলো সবিস্তারে তুলে ধরা হবে।
খালেদা জিয়া বলেন, আমরা অনেক সহ্য করেছি। তারা মনে করেছে ২০০৮ সালের পাতানো নির্বাচন দিয়ে আজীবন ক্ষমতায় থাকবে। তা হবে না। জনগণের দুর্বার আন্দোলনের মুখে ক্ষমতায় টিকে থাকা যায় না।
আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ, ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বীর বিক্রম, বিডিআর এর সাবেক মহাপরিচালক আ ল ম ফজলুর রহমান, সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ঢাবি শিক্ষক ড. মাহবুব উল্লাহ, জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, বিএনপির মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক উইং কমান্ডার (অব.) হামিদুল্লাহ খান প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বিডিআর হত্যাকা- সম্পর্কিত একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন পেশ করেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) মিজানুর রহমান রহমান।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী বীর বিক্রম ও পরিচালনা করেন বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ বিএনপির প্রচার সম্পাদক জয়নুল আবদিন ফারুক।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১১