ঢাকা, রবিবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

উচ্চ আদালতে যাব- ফারহাত কাদের

রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় সাকার জামিন না মঞ্জুর

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০১১
রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় সাকার জামিন না মঞ্জুর

চট্টগ্রাম: রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর জামিন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। বুধবার সকালে চট্টগ্রামের জেলা ও দায়রা জজ আব্দুল কুদ্দুস মিয়া’র আদালতে জামিন শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।



এসময় সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে আদালতে হাজির করা না হলেও তার স্ত্রী ফারহাত কাদের চৌধুরী, ছেলে ফাইয়াজ কাদের চৌধুরী ও হুম্মাম কাদের চৌধরী এবং মেয়ে ফারহানা কাদের চৌধুরী আদালতে প্রাঙ্গণে উপস্থিত ছিলেন।

জামিন নামঞ্জুরের পর সাকা চৌধুরীর স্ত্রী ফারহাত কাদের চৌধুরী উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা উচ্চ আদালতে যাব। জানি সেখানেও বিচার পাবনা। তবুও একজন রাজনীতিবিদ ও তার পরিবারকে কিভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে সেটা জাতিকে জানাতেই উচ্চ আদালতে জামিনের আবেদন করব। ’  

গত ২১ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি থানায় সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন ওই থানার ওসি (প্রশাসনিক) মফিজ উদ্দিন। এ মামলায় ২৬ ডিসেম্বর বিচারক সাকা চৌধুরীকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে ১৯ জানুয়ারি আদালতে হাজিরের নির্দেশ দেন।

আদালতে হাজিরের জন্য মঙ্গলবার বিকেলে তাকে নারায়ণগঞ্জ থেকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়।

সাকাচৌ’র আইনজীবী এনামুল হক জানান, আদালত আবেদনকারী পরে আইনজীবী এবং রাষ্ট্রপরে আইনজীবীর বক্তব্য শুনে জামিনের আবেদন নাকচ করে দেন।

এছাড়া মামলাটির বিচারিক আদালত সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইব্রাহীম মিয়া মামলাটির পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করবেন বলে জানান সাকা’র অপর আইনজীবী অ্যাডভোকেট শফিউল মোরশেদ চৌধুরী।

আর সাকা চৌধুরীকে আদালতে হাজির না করা প্রসঙ্গে জেলা আদালতের পুলিশ পরিদর্শক নিখিল চন্দ্র মণ্ডল বাংলানিউজকে বলেন, ‘জামিন শুনানির জন্য আসামিকে আদালতে নেওয়ার প্রয়োজন হয়না। যেহেতু মিচ (গরঃপয) মামলার কারণে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নির্ধারিত শুনানি হয়নি, তাই আসামিকেও আদালতে হাজির করার প্রয়োজন হয়নি। ’

এদিকে সাকা চৌধুরীকে আদালতে আনা হচ্ছে এমন খবরে আদালত প্রাঙ্গণে জড়ো হন বিএনপির নেতাকর্মীরা। বিএনপি সমর্থক আইনজীবী ও শ’খানেক নেতাকর্মী এসময় সাকা চৌধুরীর মুক্তি দাবি করে মিছিল করে আদালত প্রাঙ্গণ প্রদণি করেন। তবে এ মিছিলে গুরুত্বপূর্ণ কোনও নেতাকে দেখা যায়নি।

এর আগে উপস্থিত সাংবাদিকদের সাকা’র স্ত্রী বলেন, ‘সরকার বলছে তারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় পেয়েছে। কিন্তু গতকাল পৌর নির্বাচনে চট্টগ্রামের রাউজানবাসী তো রায় দিয়েছে যে রাউজানে কোনও যুদ্ধাপরাধী নেই। ’
 
উল্লেখ্য, সাকা চৌধুরীর জš§স্থান রাউজান পৌরসভায় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী কাজী আবদুল্লাহ আল হাসান বিজয়ী হয়েছেন। তবে সাকা’র নির্বাচনী এলাকা পার্শ্ববর্তী রাঙ্গুনীয়া পৌরসভায় আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন।

ফটিকছড়ি থানার রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে, গত বছরের ২০ নভেম্বর সাংসদ সাকা চৌধুরী তার নির্বাচনী এলাকা ফটিকছড়িতে উপজেলা বিএনপি’র সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে বলেন,  ‘১৫ আগস্ট জাতির জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। কারণ, এদিন জাতি একদলীয় শাসন থেকে মুক্তি পেয়েছে। ১৫ আগস্ট না হলে জাতি ভোটের অধিকার ফিরে পেত না। ’

একই সভায় সাকা বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের রায় নিয়ে বলেন, ‘এ রায় জাতি গ্রহণ করেনি। তবে এ হত্যাকাণ্ড থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে’।

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড নিয়ে উষ্কানি ও কটামূলক বক্তব্য দেওয়ার ঘটনায় ১২৪ (ক) এবং ৫০৫ দণ্ডবিধিতে এ মামলা দায়ের করা হয়।    

এর আগে ফটিকছড়ি এলাকার বাসিন্দা ও আওয়ামী লীগকর্মী আবু তাহের গত বছরের ৩ ডিসেম্বর সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে একই অভিযোগ এনে চট্টগ্রামের একটি আদালতে মামলা দায়ের করেছিলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় এ বছরের ৭ অক্টোবর মামলাটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হিসেবে অনুমোদন দেয়।

রমনা থানার একটি মামলায় গত ১৬ ডিসেম্বর গ্রেপ্তার হয়ে সাকা চৌধুরী বর্তমানে কারাগারে অন্তরীন আছেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্যকে যুদ্ধাপরাধের মামলায়ও ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

এদিকে দুপুর ১টার দিকে আদালত প্রাঙ্গণে সাকার স্ত্রী ফারহাত কাদের চৌধুরী এবং নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন একটি মিছিল বের করতে চাইলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এসময় একই স্থানে সাকার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রেদ্রোহ মামলার বাদী আবু তাহেরের নেতৃত্বে অপর একটি মিছিল শুরু হলে উভয় পে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দেয়।

এসময় পুলিশ আদালত প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষুব্ধ বিএনপি সমর্থকদের লাঠিচার্জ করে সরিয়ে দেয়। একইসঙ্গে সরিয়ে দেওয়া হয় সাকা বিরোধী মিছিলকারীদেরও। তবে তাদের ওপর লাঠিচার্জ করা হয়নি।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।