ঢাকা: মহাজোটগতভাবে পৌরসভা নির্বাচনে অংশগ্রহণের কথা অস্বীকার করেছে মহাজোট প্রধান আওয়ামী লীগ।
শুক্রবার বিকেলে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমণ্ডির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ১৪ দলের সভায় এ প্রসঙ্গে দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ বলেছেন, ‘আমরা মহাজোটগতভাবে নির্বাচনের কথা বলিনি।
১৪ দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সভায় ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান মল্লিক জোটগত নির্বাচনের প্রসঙ্গটি তোলেন। এসময় কাজী জাফরুল্লাহ মহাজোটগতভাবে নির্বাচনের পক্ষে প্রচারণার জন্য মিডিয়ার ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে প্রসঙ্গটি এড়িয়ে যান।
উল্লেখ্য, গত ৩ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় মহাজোটগতভাবে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভা শেষে দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম প্রেস ব্রিফিংয়ে এ সিদ্ধান্তের কথা জনিয়েছিলেন।
সূত্র আরো জানায়, সভায় ১৪ দল নেতারা দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে সরকারের সমালোচনা করেছেন। তারা বলেছেন, ‘কিছু অসৎ ব্যাবসায়ীর কারণে হুট করেই দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাচ্ছে। কিন্তু সরকার এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে পারছে না।
সভায় আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধের বিচার ইস্যুতে জাতীয় কনভেশন করার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয় এবং দ্রুত কনভেশন করার তাগিদ দেওয়া হয়।
সভায় ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন পূর্ববর্তী সভার বেশ কিছু সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, ‘১৪ দলের সভায় যেসব সিদ্ধান্ত হয় তার কোনো বাস্তবায়ন নেই। ’
১৪ দলের গত সভায় জোটকে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে বিস্তৃত করে কার্যক্রম পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত হয়। এ লক্ষে জোটের প্রত্যেক দলের সাধারণ সম্পাদকদের যৌথ সাক্ষরে জেলায় জেলায় চিঠি দেয়ারও সিদ্ধান্ত হয়।
এছাড়া আইন-শৃঙ্খলা কমিটিসহ সরকারের বিভিন্ন কমিটিতে এ জোটের শরিক দলগুলোর প্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করার কথা বলা হয়েছিলো। এসব বিষয়ও উল্লেখ করেন মেনন।
ধানমণ্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ সভায় আরো বক্তব্য রাখেন-জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, গণতন্ত্রী পার্টির সভাপতি আফজাল হোসেন, ন্যাপের অ্যাডভোকেট এনামুল হক, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়–য়া, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের অসিত বরণ রায় প্রমুখ।
গণতন্ত্রী পার্টির সভাপতি আফজাল হোসেন জোটগতভাবে পৌর নির্বাচন করার বিষয়টি নিয়ে সবার সঙ্গে আরো আগে আলোচনা করা উচিত ছিলো বলে মন্তব্য করেন।
সূত্র জানায়, সভায় আওয়ামী লীগ নেতারা দ্রব্যমূল্যসহ সরকারের যেসব দুর্বলতা রয়েছে সেসব কাটিয়ে উঠার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। পাশাপাশি সরকারের যেসব বিষয়ে সফলতা আছে সেগুলো তুলে ধরতে উৎসাহিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যস্ততার কারণে জাতীয় কনভেশনের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা সম্ভব হয়নি। তবে দ্রুতই ১৪ দলের সঙ্গে শেখ হাসিনা বৈঠক করে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানান তারা।
সভায় আওয়ামী লীগের পক্ষ্য থেকে বক্তব্য রাখেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, কাজী জাফরুল্লাহ, ড. মহিউদ্দিন খান আলমগীর, কার্যনির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ নাসিম ও ডা. দীপু মনি।
সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, আহমদ হোসেন, বাহাউদ্দিন নাছিম, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, ন্যাপের আমেনা আহমেদ, অ্যাডভোকেট এনামুল হক, ওয়ার্কার্স পার্টির ফজলে হোসেন বাদশা, কামরুল আহসান, গণতন্ত্রী পার্টির নুরুর রহমান সেলিম, জাসদের শিরিন আক্তার প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১০