ঢাকা: ‘৭১-এর ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নির্বাহী সভাপতি শাহরিয়ার কবির বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে ‘৭২ এর সংবিধান পুনঃপ্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে আপোষের অভিযোগ তুলে এ ধরণের ভারসাম্যের রাজনীতি পরিত্যাগ আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে-বিপক্ষের কোনো ভারসাম্য হতে পারে না।
শুক্রবার দুপুরে পাবলিক লাইব্রেরির শওকত ওসমান স্মৃতি মিলনায়তনে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সপ্তদশ জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ তোলেন।
সকালে শহীদ মিনারে এ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন মক্তিযুদ্ধের ২১ জন বীরঙ্গনা নারী।
শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘আদালতের রায় অনুযায়ী সরকার একদিকে ‘৭২ এর সংবিধান পুন:প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ধর্মনিপেক্ষতা সংবিধানে ফিরিয়ে আনার কথা বলছে, অন্যদিকে সংবিধানের শুরুতে বিসমিল্লাহ ও ধর্মভিত্তিক রাজনীতির সুযোগ রাখছে। এ রকম গোঁজামিলের সংবিধান আমরা দেখিনি। ’
মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ গড়তে হলে নিশ্চিতভাবে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে বলে দাবি করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আগামী রোববার কতিপয় মৌলবাদী সংগঠন জাতীয় শিক্ষানীতি, ‘৭২ এর সংবিধান পুন:প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে হরতাল ডেকেছে। অথচ সরকার হরতাল প্রত্যাহারে তাদের সঙ্গে আপোষ করতে চাচ্ছে কেন?’
সরকার একদিকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলছে, অপরদিকে তাদের সঙ্গে সমঝোতা করছে। এভাবে দেশ চালানো সম্ভব নয়। ’
তিনি সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘মৌলবাদী কালসাপ নিয়ে খেলবেন না। ’
শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘সরকার যেদিন সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করেছে, সেই দিনই শ্রমিক নেত্রী মোশরেফা মিশুকে আটক করেছে। কেন এই ভারসাম্য রক্ষার চেষ্টা?’
আওয়ামী লীগ না করলে দেশপ্রেমিক নয় এ ধারণা মুছে ফেলতে হবে।
মুক্তিযুদ্ধের বীরঙ্গনাদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতির দাবি জানান তিনি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষাবিদ মুস্তফা নূরউল ইসলাম বলেন, ‘জীবনের শেষ প্রান্তে এসে শুধু আশা করছি না, একই সঙ্গে দাবি করছি-যেন একাত্তরের ঘাতকদের শাস্তি জীবিত থাকতে দেখে যেতে পারি।
বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সভাপতি গোলাম মোহম্মদ ইদুর সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন নাট্যবক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, মামুনুর রশিদ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক হাছান আরিফ, বীরঙ্গণা রাহেলা খাতুন প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১০