ঢাকা: আওয়ামী লীগই দালাল আইন বাতিল করে যুদ্ধাপরাধীদের মুক্ত করে দিয়েছিল বলে দাবি করেছে বিএনপি। দলের চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও সুপ্রীমকোর্ট বারের সভাপতি অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন এ কথা বলেছেন।
তিনি বলেছেন, যুদ্ধকালীন সময়ে তালিকা করে এদেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়।
সোমবার বিকেলে শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবস উপল্েয মহানগর নাট্যমঞ্চে বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
মাহবুব হোসেন বলেন, লাখ লাখ মানুষ শহীদ হলো, হাজারো মা-বোন ইজ্জত লুট হলো অথচ হত্যাকারী ও ধর্ষণকারীদের বিচারের জন্য করা ‘দালাল আইন’ বাতিল করা হলো।
কারা এ আইন বাতিল করলো সে প্রশ্নও তোলেন বিএনপিপন্থি এ আইনজীবী।
পাঁচ হাজারের অধিক তালিকাভূক্ত যুদ্ধাপরাধীদের থেকে মাত্র ৯০০ জনের তালিকা করে আবারো তার থেকে সবাইকে বাদ দিয়ে মাত্র ১৯৫ জন যুদ্ধাপরাধী হিসেবে আওয়ামী লীগই চিহ্নিত করে বলে জানান তিনি। আর এরপর ওই ১৯৫ জনকেও মুক্ত করে দেওয়া হয়।
মাহবুব হোসেন বলেন, ‘আমরা জানতে চাই কোন অধিকারে সেই আওয়ামী সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার থেকে রেহাই দিয়েছিল। ’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, আওয়ামী লীগ এদেশের যুদ্ধাপরাধীদের মুক্ত করে দিয়ে এখন নতুন করে বিচারের উদ্যোগ নিয়ে ইতিহাসে তাদের কলঙ্ক মুছতে চায়। কিন্তু তাদের এ কলঙ্ক মুছতে তারা পারবে না। কেননা তারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের নামে মানবতাবিরোধী অভিযোগে সরকার বিরোধীদের নিশ্চিহ্ন করতে চায়।
আলোচনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, আ ন হ আখতার হোসন প্রমুখ।
এসময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এমকে আনোয়ার ও ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনসহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
শহীদ বুদ্ধিজীবিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক মনিরুজ্জামান মিয়া তার বক্তব্যে বলেন, আমার কি বাংলাদেশ চেয়েছিলাম আর কি বাংলাদেশ পেলাম এটা আজ সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।
মুক্তিযুদ্ধের সময়ে গঠিত মুজিবনগর প্রবাসী সরকারের তিনজন দায়িত্বপ্রাপ্ত একে খন্দকার, মহিদুল ইসলাম ও একজন সামরিক কর্মকতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদের লেখা বইয়ে মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা নিয়ে একটা চ্যাপ্টার আছে যেখানে মেজর জিয়াকে স্বাধীনতার ঘোষক বলা হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে নোবেল বিজয়ী ড. ইউনুসের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যকে মিথ্যাচার বলে অভিযোগ করে অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ বলেন, আমি বিশ্বাস করতে চাই না যে ড. ইউনুস অন্যায় কিছু করেছেন। এছাড়া এ রকম সম্মানিত ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোন কিছু বলার আগে অবশ্যই ঘটনা প্রমানিত হওয়া দরকার ছিল।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও জাতীয় প্রেসকাবের সভাপতি শওকত মাহমুদ বলেন, বর্তমান সরকার ঐতিহাসিক সত্যতা নিয়ে মিথ্যাচার ও কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি করছে। অথচ আব্দুল গাফফার চৌধুরী যিনি আওয়ামী লীগের বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবি তিনি তার বইতে লিখেছেন মেজর জিয়া স্বাধীনতার ঘোষক এবং স্বাধীনতার ঘোষণায় কোথাও শেখ মুজিবুর রহমানের নাম নেই।
বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে জোর করে টেনে হিচরে বাড়ী থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেনানীবাসের বাড়িটি থেকে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বিএনপি সৃষ্টি করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খালেদা জিয়াকে তার বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে বিএনপিকে ধ্বংসের সুস্পষ্ট ষড়যন্ত্র করছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘন্টা, ১৩ ডিসেম্বর, ২০১০