ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

নতুন পোশাকে স্বৈরশাসক দেশ চালাচ্ছে: মির্জা ফখরুল

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১০
নতুন পোশাকে স্বৈরশাসক দেশ চালাচ্ছে: মির্জা ফখরুল

ঢাকা: আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারকে স্বৈরশাসক বলে আখ্যায়িত করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বর্তমান সরকারের কার্যক্রম দেখে মনে হয় ভিন্ন বেশে নতুন পোশাকে এক  স্বৈরশাসক দেশ চালাচ্ছে।

রোববার বিকেলে রাজধানীর লেক শো’র হোটেলে দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির উপর বিএনপির তরুণ নীতিনির্ধারকদের সংগঠন জি-৯ প্রকাশিত রিপোর্টের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।



সরকারের কর্মকাণ্ড বর্বর যুগের সঙ্গেও তুলনা করেন বিএনপির এই নেতা।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গত দুই বছর সরকার যেভাবে দেশ চালিয়েছে তাতে বিশ্বাসই হয়না আমরা এই বাংলাদেশে বাস করি। এসব চিত্র আমাদেরকে বর্বর যুগের কথা মনে করিয়ে দেয়। ’

২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে আওয়ামী লীগ মানবাধিকার রক্ষাকে অগ্রধিকার দিয়ে নির্বাচনী বিচার বহির্ভুত হত্যাকাণ্ড বন্ধের ঘোষণা দিলেও সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা হয়নি বলে দাবি করেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক আটকের পর মানুষ নিখোঁজ হচ্ছে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সুসংহত করলেই এ সব মানবাধিকার লংঘন রোধ করা যাবে। কিন্তু বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের গৃহছাড়া করা, হত্যা, খুুন, গুম, বন্ধ না করলে গণতন্ত্র সুসংহত হবে না। ’

আন্তর্জতিক মানবাধিকার দিবস-২০১০ উপলক্ষে ‘রাজনৈতিক অধিকার খর্ব: অশনি সংকেত’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করে জি-৯।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১০ সালের প্রথম ১১ মাসে রাজনৈতিক সহিংসতায় মৃত্যু ২০৮টি, বিচার বহির্ভুত হত্যাকান্ড ১১৫ টি, কারা হেফাজতে মৃত্যু ৯১ টি, সীমান্তে ভারতীয় সীমান্ত রী বাহিনী কর্তৃক মৃত্যু ৬৩টি,  সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা ২৩১ টি এবং ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ১৭৯০টি।
 
অনুষ্ঠানে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য এমকে আনোয়ার বলেন, ‘বর্তমান সরকার দেশ পরিচালনায় চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার বিচার ছাড়া নির্বাচনী ইশতেহারের একটি অঙ্গিকারও বাস্তবায়ন করতে পারেনি সরকার।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, এমপি ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সম্পদের হিসাব দেয়ার কথা ছিল। অথচ বর্তমান সরকারের কেউই তাদের সম্পদের হিসাব দেয়নি। প্রধানমন্ত্রী নিজে সম্পদের হিসাব না দিয়ে বিরোধী দলীয় নেত্রীর সম্পদের হিসাব চাওয়া একটি হাস্যকর বিষয়।

সভাপতির বক্তব্যে জি-৯ এর সভাপতি ও ডিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি এম. সাইফুল ইসলাম বলেন, বিজয়ের মাসে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে মৌলিক অধিকারসহ সাংবিধানিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার আদায়ে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যেতে হবে।  

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জি-৯ এর প্রতিষ্ঠাতা শফিক রেহমান বলেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান রাজিয়া ফয়েজ, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা. জাহিদ হোসেন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন এমপি, ব্যারিস্টার নাসিরউদ্দিন অসীম, ব্যারিস্টার সারওয়ার হোসেন, বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, মহিলা দলের সভানেত্রী নুরে আরা সাফা প্রমুখ ।

অনুষ্ঠানে বিদেশি দূতাবাস ও উন্নয়ন সহযোগীদের মধ্যে- ইউএনডিপি, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, জাপান, ইরান, ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিস্তিনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

সেমিনারের শুরুতে প্রজেক্টরের মাধ্যমে গত এক বছরে সংঘঠিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের নানা চিত্র প্রদর্শন করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।