ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

পৌরসভা নির্বাচন: নীলফামারীতে প্রার্থী নির্বাচনে জটিলতা, সাংসদ অবরুদ্ধ

ইসরাত জাহান পল্লবী, জেলা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১০
পৌরসভা নির্বাচন: নীলফামারীতে প্রার্থী নির্বাচনে জটিলতা, সাংসদ অবরুদ্ধ

নীলফামারী: নীলফামারী পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে নেতাকর্মীদের মধ্যে।

আওয়ামী লীগের সদস্যপদও নেই এমন অনেকেও পৌর নির্বাচনে দলের মনোনয়ন পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন।

স্বজনপ্রীতি আর অন্তর্কোন্দলের কারণে আওয়ামী লীগের কতিপয় নেতাকর্মী নির্দলীয় প্রার্থীদের নাম সমর্থন করে মনোনয়ন পেতে নেমেছেন মানোনয়ন যুদ্ধে।
 
এবারের পৌরসভা নির্বাচনে নীলফামারীতে বর্তমান পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি দেওয়ান কামাল আহমেদ, নীলফামারীর পলাশবাড়ী কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ আনিস উজ-জামান রুমী ও সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের সাবেক উপসচিব আমিনুল হক আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন চেয়েছেন। এদের মধ্যে আনিসউজ-জামান ও আমিনুল হকের দলীয় সদস্য পদ না থাকার পরও তাদের নিয়ে চলছে লবিং-গ্রুপিং।

কেন্দ্রের নির্দেশ অনুসারে জেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও উপজেলা ও পৌর কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সমর্থনের ভিত্তিতে দলের একজন প্রার্থীর নাম কেন্দ্রে পাঠানোর কথা। সে অনুসারে শুক্রবার নীলফামারী সদর আসনের সাংসদ আসাদুজ্জামান নূর শুক্রবার সন্ধ্যায় পৌরসভা মিলনায়তনে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে কর্মিসভা ডাকেন। সভায় উৎসুক নেতাকর্মীরা প্রার্থীর নাম ঘোষণা হবে- এ আশায় বসে থাকলেও শেষ পর্যন্ত তাদের আশাহত হয়ে ফিরে যেতে হয়।

কর্মিসভার সিদ্ধান্ত অনুসারে শনিবার সকালে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে দলীয় প্রার্থী নির্বাচনে সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান নূরের সভাপতিত্বে জরুরি বৈঠক বসে।

জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক, উপজেলা ও পৌর কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা ওই জরুরি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে পর পর চারবার নির্বাচিত বর্তমান মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি দেওয়ান কামাল আহমেদ, আমিনুল ইসলাম ও আনিস-উজ জামান রুমীর আবেদন নিয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে কমিটির কতিপয় নেতা ভোটাভুটির মাধ্যমে প্রার্থী মনোনয়ন করার প্রস্তাব দিলে সভায় তীব্র উত্তেজনা দেখা দেয়।

উল্লেখ্য, আমিনুল ইসলাম ও আনিস-উজ-জামানের দলীয় সদস্য পদ নেই।

দলের কোনো পর্যায়ের সদস্য না হওয়া ওই দুই প্রার্থীকে নিয়ে দীর্ঘ আলোচনার ঘটনায় বাইরে অপেক্ষমান আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের শত শত নেতাকর্মীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ ও চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। একপর্যায়ে কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই সভা শেষ করে বেরিয়ে আসার সময় কেন্দ্রীয় নেতা আসাদুজ্জামান নূরকে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা অবরুদ্ধ করে দলীয় প্রার্থীকে মনোনয়নের দাবি জানান।

এ ব্যাপারে অধ্যক্ষ আনিস-উজ-জামান বাংলানিউজকে জানান, তিনি ১৯৭৯ সালে আওয়ামী লীগের সদস্যপদ পান। তবে পরে তার সদস্য পদ নবায়ন করা হয়নি।

মানোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে তিনি জানান, কেন্দ্র যাকে মনোনয়ন দেবে সেই প্রার্থী হবে। তিনি কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত তিনি মেনে নেবেন বলে জানান।

সাবেক উপসচিব আমিনুল হক বলেন, ‘দলীয়ভাবে মনোনয়ন না পেলে কী করবো তা এখনই বলতে পারছি না। ’

বর্তমান পৌর মেয়র ও মনোনয়ন প্রার্থী দেওয়ান কামাল আহমেদ বলেন, ‘গত ২০ বছর ধরে পৌরসভার মেয়রের দায়িত্ব পালন করছি। দলীয় নেতাকর্মীদের প্রত্যক্ষ সমর্থনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছি। আশা করছি, জীবনবৃত্তান্ত কেন্দ্রে পৌছার পর মনোনয়ন পাবো। তাই এ ব্যাপারে হতাশ নই। ’

এ ব্যাপারে সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর তার বাসভবনে ফিরে গিয়ে সবার উদ্দেশে বলেন, ‘দীর্ঘ বৈঠকের পরও একজন প্রার্থী নির্বাচন করা সম্ভব হয়নি। তাই তিন প্রার্থীর নাম ও তাদের জীবনবৃত্তান্ত কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। কেন্দ্র যাকে যোগ্য মনে করবে তাকে মনোনয়ন দেবে এবং দলীয় নেতাকর্মীরাও তা মেনে নেবেন। ’

তৃণমূল নেতাকর্মীদের মতে, দলীয় ব্যক্তির বাইরে মনোনয়ন দেওয়া হলে উপজেলা পরিষদের মতো নীলফামারী পৌরসভাও হাতছাড়া হবে আওয়ামী লীগের।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৭২১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।