ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

দলীয় সতীর্থদের হাতে প্রহৃত জ্বালানি উপদেষ্টার এপিএস

জাহিদুর রহমান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১০

সাভার: ধামরাইতে এবার নিজদলের নেতা-কর্মীদের হাতে প্রহৃত হলেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক ই ইলাহীর সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) মনোয়ার হোসেন।

শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে ধামরাই ইসলামপুর বাস স্ট্যান্ডে তাকে পিটুনি দেয় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।



স্থানীয় সরকার দলীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব বেনজীর আহমদকে  গালিগালাজ করার জের ধরে ুব্ধ আওয়ামী কর্মীরা তাকে এ গণপিটুনি দেয়।

এ ছাড়াও তার বিরুদ্ধে অস্ত্র ঠেকিয়ে মারধর করার অভিযোগ এনে ধামরাই থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন আওয়ামী লীগ নেতা সোহরাব আলী খান রতন ।

প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা ড.তৌফিক ই-ইলাহী চৌধুরীর সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) মনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার বিষয়টি নিশ্চিত করে ধামরাই থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ মো. আলমগীর হোসেন বাংলানিউজকে জানান, ‘মনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে, গুরুতর আহত অবস্থায় মনোয়ারকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই এলাকায় বিরাজ করছে উত্তেজনা।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্র জানায়, জ্বালানি উপদেষ্টার একান্ত সচিবের সঙ্গে ওই এলাকার ক্ষমতাসীন দলের সাংসদ আলহাজ বেনজীর আহমেদের ছোট ভাই এনামুল হক আইয়ুবের দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলছিলো। এর আগে জ্বালানি উপদেষ্টার প্রভাব দেখিয়ে নিজ এলাকায় পতাকাবাহী গাড়ি ঘোরাফেরা করা নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে মনোয়ারের বিরোধ তীব্র রূপ নেয়। এছাড়া তিনি নিজেকে জ্বালানি উপদেষ্টার সচিব পরিচয় দিয়ে ধামরাইয়ে নিজ এলাকায় এক কৃষককে ভয়-ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি দেন বলেও অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে মনোয়ারের নামে তিনটি সাধারণ ডায়রি (জিডি) করে ওই কৃষক ও তার পরিবার। এ নিয়েও মনোয়ারের ব্যাপারে বিরাজ করছিলো চাপ ক্ষোভ।

শুক্রবার সরকারি ছুটির দিনে নিজ এলাকায় গিয়ে জ্বালানি উপদেষ্টার এপিএস প্রভাব তৈরির চেষ্টা করলে আওয়ামী লীগের একটি অংশ পিছু নেয়। বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে ঢাকায় ফেরার পথে তার গাড়িতে বেরিকেড দেয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় গাড়ি থেকে নামিয়ে তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে তারা। তার সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগটি খোয়া যায়। আহত অবস্থায় তাকে ফেলে রাখা হলে এলাকাবাসী উদ্ধার করে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে।

এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আনোয়ারুল কাদের নাজিম বাংলানিউজকে জানান, মনোয়ার চাপা মার খেয়েছেন। তার শরীরের বিভিন্ন অংশ থেঁতলে গেছে। তার চিকিৎসা চলছে।
ধামরাই থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন বাংলানিউজকে জানান, ঘটনাটি আমরা শুনেছি। তবে কেউ আমাদের কাছে অভিযোগ নিয়ে আসেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ধামরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সাখু বাংলানিউজকে জানান, ুব্ধ কর্মীরা মনোয়ারকে পিটিয়েছে। এর আগেও তিনি নিজের প্রভাব-প্রতিপত্তি বিস্তারের চেষ্টা করলে সাংসদের ভাইয়ের সঙ্গে তার বিরোধ তুঙ্গে ওঠে। পরে সাংসদের মধ্যস্থতায় বিষয়টি সেই সময় মীমাংসা করা হয়।
 
ঘটনাস্থলে তার উপস্থিতি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সাখু বলেন, ‘ঘটনা শুনেই আমি ছুটে গেছি। আমরা না থাকলে মনোয়ারকে আরো কঠিন পরিণতি ভোগ করতে হতো। ’

বাংলাদেশ সময়: ২৩৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।