ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

হাওয়া ভবনের প্রভাবশালীরা কে কোথায়

মান্নান মারুফ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৯, ২০১০
হাওয়া ভবনের প্রভাবশালীরা কে কোথায়

ঢাকা: ওয়ান-ইলেভেনের প্রেক্ষাপটে দেশে জরুরি অবস্থা জারির পর নানা দুর্নীতি আর অনিয়মের জন্য অভিযুক্ত হাওয়া ভবনের অনেক প্রভাবশালীই এখনো স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি।

দোর্দণ্ড প্রতাপশালী ওইসব নেতার কেউ কেউ এখন নানা অভিযোগে জেল খাটছেন।

স্বল্পমেয়াদি হাজতবাস শেষ হয়েছে কারো কারো। কেউ আবার মামলার খড়গ মাথায় নিয়েও  সক্রিয় আছেন রাজনীতিতে। আবার অনেকেই মামলা ও শাস্তি এড়াতে গোপনে দেশ ছেড়েছিলেন। তাদের অনেকেরই হদিস মেলেনি এখনো।

হাওয়া ভবনের এসব প্রভাবশালীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন- হারিছ চৌধুরী, সালাউদ্দিন আহমেদ, আমান উল্লাহ আমান, জয়নুল আবদীন ফারুক, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নাসের রহমান, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, সাইফুল ইসলাম ডিউক, আশিকুল ইসলাম আশিক, এপিএস আব্দুল মতিন, ডা. ফিরোজ আহম্মেদ, এপিএস সামসুল আলম, সিলভার সেলিম, ইকোনো কামাল, জহির উদ্দিন স্বপন, লুৎফুজ্জামান বাবর, গিয়াস উদ্দিন মামুন, রাশিদুজ্জামান মিল্লাত, হাফিজ ইব্রাহীম, মফিকুল হাসান তৃপ্তি ও আলী আজগর লবি প্রমুখ।

এদের মধ্যে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সালাউদ্দিন আহমেদ, আমান উল্লাহ আমান, প্রচার সম্পাদক জয়নুল আবদীন ফারুক, যুবদল সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু ও নাসের রহমান বর্তমানে রাজনীতিতে সক্রিয় আছেন।

তবে জরুরি অবস্থা জারির পর থেকে এখনো পালিয়ে বেড়াচ্ছেন হারিছ চৌধুরী। তিনি এখন ভারতে আছেন বলে জানিয়েছে দলীয় সূত্র। সূত্র আরো বলছে, আশিক, শামসুল ও ফিরোজ আছেন মার্কিন মুলুকে। মামলা নিয়ে মহাবিপদে আছেন খালেদা জিয়ার ভাগ্নে ডিউক। বর্তমানে হাজতবাসী তিনি। আর যার যার ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত আছেন সেলিম, কামালরা। বিএনপির সঙ্গে আপাতত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন তাদের।

সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগে বিএনপি থেকে বহিস্কৃত হয়েছেন সাবেক সাংসদ জহির উদ্দিন স্বপন। নানা মামলায় জেল খাটছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও  ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন।

এছাড়া রাজনীতিতে একেবারেই নিষ্ক্রিয় আছেন মিল্লাত, তৃপ্তি ও লবি প্রমুখ।

এদিকে হাওয়া ভবনের মূল ক্ষমতাধর ব্যক্তি তারেক রহমান চিকিৎসার জন্য লন্ডনে অনেকটা নির্বাসিত জীবনই কাটাচ্ছেন বলা চলে। তবে ওয়ান-ইলেভেনের পর বিভিন্ন সময়ে বিদেশে পালিয়ে যাওয়া নেতারা তার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
 
এদিকে হাওয়া ভবনে ওঠাবসা ছিলো এমন ক’জন সাংবাদিক, আমলা ও অপেক্ষাকৃত তরুণ রাজনৈতিক কর্মী প্রতি রাতে একটি আড্ডায় একত্র হচ্ছেন বলে জানিয়েছে গোয়েন্দা সূত্র। দলীয় কর্মকাণ্ডে তাদের তেমন একট সম্পৃক্ততা না থাকলেও তারা দেশের রাজনৈতিক খবরাখবর নিয়মিত তারেক রহমানের কাছে পাঠাচ্ছেন।  

হাওয়া ভবনের এক সময়ের প্রভাবশালী নেতা অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বাংলানিউজকে বলেন, ‘বিভিন্ন কারণে অনেকেই দূরে সরে আছেন। হয়তো এ সমস্যা কেটে যাবে। ম্যাড্যাম বুঝতে পেরেছেন অবহেলিতরা আবারও ফিরে আসবেন। ’

তিনি বলেন, ‘বিএনপি একটি বড় দল। এ দলে বিভিন্ন ধরনের লোক আছে। দু’একজনের কারণে অনেকেই এই মুহূর্তে অবহেলিত হয়ে পড়েছেন। ’
 
দুলু বলেন, ‘এও হতে পারে হাইকমান্ডের বিশেষ চিন্তা চেতনা থেকেই হয়তো ওদের সরিয়ে রাখা হয়েছে। আবার কেউ কেউ পদবি না পাওয়ার কারণে দল থেকে সরে আছেন। কিছু লোক ত্যাগী নেতা কর্মীদের কোনো ঠাসা করে রেখেছেন এটাও সত্যি। তবে এই সমস্যা ঠিক হয়ে যাবে। ’
 
প্রসঙ্গত, চার দলীয় জোট ক্ষমতায় থাকাকালে তৎকালীন সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব তারেক রহমানের তত্ত্বাবধানে চেয়ারপারসনের তৎকালীন রাজনৈতিক কার্যালয় হাওয়া ভবনের অনেক নেতাই হয়ে উঠেছিলেন মহাক্ষমতাধর। প্রশাসন থেকে শুরু করে দলীয় পরিমণ্ডলেও এ নিয়ে সমালোচনা হয় প্রচুর। এখনো হাওয়া ভবন ইস্যু বিএনপির প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের অন্যতম সমালোচনার বিষয়।  

বাংলাদেশ সময়: ২৩০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৮, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।