ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

টানাপোড়েন কাটিয়ে যুগপৎ আন্দোলনের পথে জামায়াত-বিএনপি

আসাদ জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৫, ২০১০
টানাপোড়েন কাটিয়ে যুগপৎ আন্দোলনের পথে জামায়াত-বিএনপি

ঢাকা: দীর্ঘ দিন ধরে চলতে থাকা রাজনৈতিক সম্পর্কে টানাপোড়েন প্রায় কাটিয়ে উঠেছে চার দলীয় জোটের দুই প্রধান শরীক বিএনপি ও জামায়াত। উভয় দলই এখন যুগপৎ আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছে দলীয় সূত্র।



পৃথক পৃথকভাবে দেওয়া বিএনপি ও জামায়াতের সাম্প্রতিক সমান্তরাল কর্মসূচিতেও বিষয়টি পরিস্কার হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

দলীয় সূত্র জানায়, গত ২৭ জুন বর্তমান সরকারের আমলে বিএনপির পক্ষ থেকে ডাকা প্রথম হরতালে জোরালো সমর্থন জানায় জামায়াত। একই সঙ্গে হরতাল সফল করতে রাজপথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাও পালন করে দলটি। কিন্তু হরতালের দুদিন পর ২৯ জুন আমীরসহ শীর্ষ নেতারা গ্রেপ্তার হওয়ার পর জামায়াতের ডাকা বিক্ষোভ কর্মসূচিতে শুধু নৈতিক সমর্থনই দিয়ে যায় বিএনপি; জোটের নেতাদের মুক্তির ব্যাপারে জোরালো কোনও ভূমিকা নেয়নি।

সেই থেকেই দুই দলের মধ্যে সম্পর্কের টনাপোড়েন শুরু। এ কারণে খালেদা জিয়ার বাড়ির ইস্যুতে বিএনপির ডাকা ১৪ নভেম্বরের হরতালে সমর্থন দিলেও হরতালের দিন জামায়াত নেতাকর্মীদের মধ্যে গাছাড়া ভাব দেখা গেছে।

সূত্রের দাবি, সম্পর্কের টানাপোড়েনের সময় জামায়াতের মান ভাঙাতে তেমন কোনো উদ্যোগও নেয়নি বিএনপি। গত ২ নভেম্বর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয় র‌্যাব-পুলিশ ঘেরাও করার ঘটনায় জামায়াতের নীরবতা ও নির্লিপ্ততা এরই প্রমাণ দেয়। অথচ আরেক শরিক দল ইসলামী ঐক্যজোটের নেতারা খালেদা জিয়াকে সমবেদনা জানাতে তার গুলশান কার্যালয়ে গিয়েছিলেন।

এরপর ১৩ নভেম্বর হাইকোর্ট ৩০ দিনের মধ্যে খালেদা জিয়াকে ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি ছাড়ার নির্দেশ দিলে জামায়াতকে ছাড়াই জোটের শরিক ও সমমনা দলগুলোকে নিয়ে মুক্তাঙ্গনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে বিএনপি।

কিন্তু হঠাৎ করেই যেন বিএনপির ডাকা ৩০ নভেম্বরের হরতালে এসে সম্পূর্ণ পাল্টে যায় দৃশ্যপট। ২৫ নভেম্বর জোটের বৈঠকে না এলেও ২৭ নভেম্বর বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে বৈঠক করে নৈতিক ও ২৮ নভেম্বর সংবাদ সম্মেলন করে হরতালের প্রতি পূর্ণসমর্থন জানায় দলটি। ৩০ নভেম্বর হরতালের দিন মাঠেও এর প্রতিফলন দেখা যায়। নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে বিক্ষোভ সমাবেশকালে গ্রেপ্তার হন জামায়াতের বেশ কয়েকজন কর্মী।

সূত্রমতে, মিত্রশক্তি জামায়াতকে পুনরায় পাশে পেয়ে বিএনপিও রাজপথের আন্দোলনে আরও কঠোর অবস্থান নেয়। আন্দোলন কর্মসূচি দেওয়ার ব্যাপারে শক্ত অবস্থান গ্রহণ করে দলটি।

এদিকে, ৩০ নভেম্বর হরতালে পুলিশের হামলা-মামলা ও গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ২ ডিসেম্বর বিএনপি মুক্তাঙ্গনে ও জামায়াত তাদের মহানগর কার্যালয় চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ করে। একই দিনে পৃথক দু’টি সমাবেশ থেকে জামায়াত-বিএনপি ৫ জানুয়ারি উপজেলা, ৭ জানুয়ারি জেলা শহর ও ৯ জানুয়ারি রাজধানীতে একই ধরনের কর্মসূচি ঘোষণা করে।

এ ব্যাপারে জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ‘যে কর্মসূচি দেওয়া হচ্ছে সেগুলো চার দলেরই কর্মসূচি। শরিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে একই ধরনের কর্মসূচি দেওয়া হচ্ছে। এখন এটাকে যুগপৎ বলবেন কিনা সেটি আপনাদের ব্যাপার। ’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ‘চারদলীয় ঐক্যজোট জনগণের মৌলিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের জন্য কাজ করছে। তাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অভিন্ন। সুতরাং কর্মসূচির ধরন তো একই রকম হওয়া উচিৎ। ’

যুগপৎ আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এই স্বৈরাচারী সরকারের কবল থেকে দেশমুক্ত করতে হলে যুগপৎ আন্দোলন ছাড়া আর উপায় কি?’

বাংলাদেশ সময়: ২০৩২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৫, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad