ঢাকা: সশস্ত্রবাহিনীর কয়েকজন সাবেক কর্মকর্তা বলেছেন, ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি থেকে উচ্ছেদের পর খালেদা জিয়া সম্পর্কে যেসব অপপ্রচার চালানো হচ্ছে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সোমবার দুপুর পৌনে ১টায় বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশানের কার্যালয়ে খালেদা জিয়াকে ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি থেকে উচ্ছেদ ও এ বিষয়ে আইএসপিআরের বিভ্রান্তিকর বক্তব্যের প্রতিবাদে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে তারা এ কথা বলেন।
সাবেক সেনাপ্রধান লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ, মেজর জেনারেল (অব.) রুহুল আলম চৌধুরী, সাবেক বিমানবাহিনী প্রধান এয়ারভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, মেজর (অব.) শাহজাহান ওমর, উইং কমান্ডার (অব.) হামিদুল্লাহ খান (বীর উত্তম), ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আনোয়ার হোসেন চৌধুরীসহ সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর প্রায় ৩০ জন সাবেক কর্মকর্তা সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
সশস্ত্রবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তারা বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি থেকে উচ্ছেদের ঘটনায় যেসব তথ্য প্রচার করা হচ্ছে তার মাধ্যমে সেনাবাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করানোর চেষ্টা চলছে। তবে সেনাবাহিনী এর সঙ্গে জড়িত নয়। ’
তারা বলেন, ‘প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটা অংশকে ব্যবহার করে এসব ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। এর দায়দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রীকেই নিতে হবে। কারণ প্রধান স্বয়ং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে। ’
সাংবাদিক সম্মেলনে বলা হয়, ‘খালেদা জিয়া বাড়ি ছাড়ার আগে সেনাবাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে কোনো সেনা সদস্য উপস্থিত ছিলেন না। উপস্থিতরা সবাই ছিলেন পুলিশের লোক। ’
সেনাবাহিনীকে জড়িয়ে আইএপিআরের বক্তব্যকে সরকারের চক্রান্তের অংশ বলে উল্লেখ করেন সাংবাদিক সম্মেলন আয়োজনকারীরা।
তারা বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে উচ্ছেদের পর মইনুল রোডের বাড়িটি সিলগালা করা হয়। পরের দিন সেখানে লোক ঢুকলো কীভাবে? অসৎ উদ্দেশ্যে পরের দিন সেখানে মিডিয়ার লোক নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সৎ উদ্দেশ্য থাকলেও ওইদিনই সেখানে মিডিয়ার লোক ঢুকতে দেওয়া হতো। ’
সশস্ত্রবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তারা বলেন, ‘ওয়ান-ইলেভের সময়ও খালেদা জিয়ার বাসায় তল্লাশি চালানো হয়। তখন তো তার বাসায় কিছুই পাওয়া যায়নি। খালেদা জিয়াকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে পরিকল্পিতভাবে কিছু জিনিস সেখানে ঢুকিয়ে নাটক সাজানো হয়েছে। ’
তারা বলেন, ‘২০০৮ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের সময় আইএসপিআর কোথায় ছিল। তখন তো তারা এ ধরনের সাংবাদিক সম্মেলন করে কোনো বিবৃতি দেয়নি। ’
সশস্ত্রবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তারা বলেন, ‘সরকার রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করে তা সেনাবাহিনীর ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। ’
এ ঘটনার সঙ্গে সেনাবাহিনী জড়িত নয় বলেও মন্তব্য করা হয় সাংবাদিক সম্মেলন আয়োজকদের পক্ষ থেকে।
তারা বলেন, ‘খালেদা জিয়া কাউকে গালি দেননি। বরং তার সঙ্গে কি ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে তা তিনি জাতিকে জানিয়ে দিয়েছেন। ’
বক্তারা বলেন, ‘খালেদা জিয়ার বাসায় কর্মচারী ছিল মাত্র ১২। অথচ সেটাকে ৬৭ জন বানিয়ে অপপ্রচার চালানো হয়েছে। ’
সশস্ত্রবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তারা আইএসপিআরের এসব কর্মকাণ্ডের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১০