ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

মৌলভীবাজারে আ.লীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষ, বোমা বিস্ফোরণ, আহত ১১

জেলা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৩৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০১০
মৌলভীবাজারে আ.লীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষ, বোমা বিস্ফোরণ, আহত ১১

মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজারে আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জেলা আওয়ামী লীগ নেতা নাজমুল হোসেনসহ উভয় গ্রুপের কমপক্ষে ১১ জন আহত হয়েছেন।

নাজমুল হোসেন সাবেক হুইপ ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমানের ছোট ভাই।



রোববার রাতে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার রাত সাড়ে আটটায় শহরের কেন্দ্রস্থল চৌমুহনা এলাকার শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী রেস্তোরাঁর ম্যানেজার স্টলে হামলা চালায় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের একটি গ্রুপ। এ সময় তারা ম্যানেজার স্টলের বর্তমান স্বত্ত্বাধিকারী ও জেলা ছাত্রলীগ আহবায়ক কমিটির সাবেক সদস্য সুমেশ দাশ যিশুকে মারধর করে। যিশু সাবেক হুইপ ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমানের ভাতিজা জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নাহিদ আহমদের অনুসারী।

যিশুকে মারধরের প্রতিবাদে রাত সাড়ে নয়টায় জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নাহিদ আহমদের অনুসারীরা শহরের চৌমুহনা চত্বরে মিছিল বের করে। এক পর্যায়ে তারা যুবলীগ নেতা রাজুর গাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় রাজুর অনুসারীরা নাহিদ অনুসারীদের পাল্টা ধাওয়া করলে দু’পক্ষের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষের সময় সাত-আটটি বোমা বিক্ষোরণ ঘটে। সংঘর্ষে সাবেক হুইপ ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্মসাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমানের ছোটভাই জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ নাজমুল হোসেনের মাথা ফেটে যায়।

জেলা যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক নাহিদ আহমদ বাংলানিউজকে জানান, এছাড়া জেলা ছাত্রলীগ নেতা কামরুল হাসান সোহানসহ ৮ কর্মী আহত হয়েছেন।

এ ঘটনার জন্য তিনি সরাসরি কাউকে দায়ী না করে বলেন, ‘কারা হামলা করেছে তা সবাই দেখেছে। ’

দু’পক্ষের দা ও লাঠি-সোটার পাল্টাপাল্টি হামলায় কমপক্ষে ১১ জন আহত হন। রাজুর অনুসারীরা যিশুর মালিকানাধীন ম্যানেজার স্টল ও রাধিকা স্টল ভাংচুর করে।

উল্লেখ্য, রাজু বর্তমান চিফ হুইপ ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদ সমর্থিত একটি উপগ্রুপের শীর্ষনেতা।

রাত সাড়ে দশটায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ঘটনাস্থলে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন ছিল।

মৌলভীবাজার সদর মডেল থানার ওসি অমূল্য কুমার চৌধুরী জানান, হামলাকারীদের খোঁজে তাদের বাড়ি ঘরে অভিযান চলছে।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নেছার আহমদ রাত ১১টায় বাংলানিউজকে জানান, দু’পক্ষের মারামারির সময় আমি শহরের বাইরে ছিলাম। যা ঘটেছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক।

মৌলভীবাজার-৩ (সদর-রাজনগর) আসনের সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সৈয়দ মহসীন আলী জানান, আমার কোনো নেতা-কর্মী এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। এটা যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের একটি গ্রুপের অভ্যন্তরে দুটি উপ গ্রুপের বিরোধ। আমি সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশকে বলেছি। এ ব্যাপারে আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।

জানা গেছে, সদ্য ঘোষিত জেলা ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে এ বিরোধ শুরু হয়। গত শনিবার রাতে জেলা যুবলীগ সভাপতি ফজলুর রহমানের অনুপস্থিতিতে জেলা যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক নাহিদ আহমদ জেলা যুবলীগের ব্যানারে মিছিল বের করলে রোববার সকাল থেকেই দু’পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নেয়।

বাংলাদেশ সময় : ২৩৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।