ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

‘মুখে গণতন্ত্র থাকলেও দলে গণতন্ত্র নেই বিএনপির’

মান্নান মারুফ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১০
‘মুখে গণতন্ত্র থাকলেও দলে গণতন্ত্র নেই বিএনপির’

ঢাকা: শীর্ষ নেতাসহ সিনিয়র নেতারা কথায় কথায় এখন গণতন্ত্রের কথা বললেও খোদ বিএনপিতেই নেই গণতন্ত্র। এ দলটির পদে বসাতে কিংবা পদচ্যুত করতে নেই কোনো নিয়ম কানুন, তেমনি দল থেকে বহিস্কার করতেও নিয়মের বালাই নেই।

সর্বশেষ ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার বহিষ্কারের পর এ ধরনের মন্তব্য করেছেন দলটির সঙ্গেই সংশ্লিষ্টরা।

দলের একজন সিনিয়র নেতা বাংলানিউজকে বলেন, ‘এ দলে কে কখন বড় নেতা হয় কে কখন বহিস্কার হয় তা বলা মুসকিল। এখানে পদ পাওয়া যেমন সহজ তেমনি হারানোও সহজ। ’

বিএনপিতে গনতান্ত্রিক চর্চা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এর কারণ পদ পেতে রাজনীতি করতে হয় না। দলের চেয়ার পারসন খালেদা জিয়া অথবা তারই ছেলে তারেক রহমানের আস্থাভাজন হলেই সব কিছূ সম্ভব। ’
 
নাজমুল হুদার অপরাধ দলের কিছূ সিদ্ধান্তের ব্যাপারে সমালোচনা করা। এর একটি জাতীয়তাবাদী আইজীবী ফোরামের কমিটি গঠন।

এই সংগঠনটির নেতা নির্বাচনে ভোটাভুটি না হয়ে পকেট কমিটি করায় তার সমালোচনা করায় এমন অবস্থায় পড়েছেন নাজমুল হুদা। শেষ পর্যন্ত দলটির চেয়ারপারসন খালেদার সংবাদ সম্মেলন ও বাড়ি থেকে উচ্ছেদের ব্যাপরে হরতাল দেয়ার বিষটি ভুল হয়েছে বলে চূড়ান্ত রোষাণলে পড়েন তিনি। আর একারনেই তাকে দলের নীতিনির্ধারনী পর্যায়ের সদস্যরা বহিস্কারের ব্যাপারে মত দেন। এ মতামতের ভিত্তিতে তাকে বহিস্কার করা হয় ২১ নভেম্বর রাত ৮ টায়।
 
বিএনপি থেকে এ পর্যন্ত অর্ধশতাধিক নেতাকে বহিস্কার করা হয়েছে দলের অনুমতি ছাড়া কথা বলার জন্য।

গত একযুগ ধরে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কারণে এই দলটির অর্ধশতাধিক নেতা বহিস্কৃত হয়েছে। বহিস্কৃতদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে বিএনপির সিনিয়র নেতা চৌধূরী তানভীর আহমেদ সিদ্দিকী, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, আব্দুল মান্নান ভুইয়া, ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা, অবসর প্রাপ্ত মেজর জেনারেল জেড এ খান, বিএনপির সাবেক এমপি নজির হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব মো. আশরাফ  হোসেন, শহিদুল হক জাামাল, লুৎফুজ্জামান বাবর, সালাউদ্দিন আহমেদ, সরদার শাখাওয়াত হোসেন বকুল, মফিকুল হাসান তৃপ্তি, অবসর প্রাপ্ত মেজর আখতারুজ্জামান ও আনোয়ার জাহিদ।

এদের মধ্যে নাজমুল হুদা ২১ নভেম্বরের বহিষ্কার নিয়ে তিনদফায়, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী দুই দফা ও আখতারুজ্জামান তিন দফায় বহিষ্কার হন।
 
এদের মধ্যে আব্দুল মান্নান ভুইয়া ও আনোয়ার জাহিদ বহিষ্কারের অপবাদ মাথায় নিয়েই মারা গেছেন। আর সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, লুৎফুজ্জামান বাবর, সালাউদ্দিন আহমেদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।
 
এ ব্যাপারে দলটির চেয়ারপারসনের সাবেক উপদেষ্টা জেড এ খান বাংলানিউজকে বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমি কোন মন্তব্য করতে চাই না। কারণ আমি এখন আর ঐ দলে নেই। সে ছাড়া এটা তাদের দলের ব্যাপার। বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো এভাবেই চলছে। ’
 
নাজমুল হুদার বহিষ্কারের বিষযটি গণতান্ত্রিক পন্থায় হয়েছে কিনা জানতে চাইলে বিএনপি’র সাবেক যুগ্ম মহাসচিব, জাতীয় সংসদের হুইপ মো. আশরাফ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ‘এ দলটির গঠণতন্ত্রই এরকম। আমরা এ ব্যাপারে কথা বলার কারণেই বহিষ্কার হয়েছি। বিএনপি কখনও বহিষ্কার করে আবার দলে ফিরিয়ে নেয়। এ দলটির অতীত থেকেই এরকম।
 
তিনি বলেন, ‘এ দলটির গঠণতন্ত্রই গণতান্ত্রিক নয়। যে কারণে কাউকে আত্মপক্ষ সমর্থন করার সুযোগ পর্যন্ত দেওয়া হয় না। মুখে গণতন্ত্র থাকলেও দলে গণতন্ত্র নেই বিএনপি’র। ’

বাংলাদেশ সময় ০০১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad