ঢাকা: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করলেন সাবেক পানি সম্পদ মন্ত্রী ও বিএনপির ভাইসচেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।
বুধবার রাত ৯টা থেকে শুরু করে ঘণ্টাখানেক এ বৈঠক হয়।
বৈঠকে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য বাংলাদেশের উজানে হিমালয় কেন্দ্রিক যে ৫৫২টি বাঁধ নির্মাণ হচ্ছে তা নিয়ে আলোচনা হয়। বলা হয়, এখান থেকে ২ লাখ ১২ হাজার ২৭০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করার পরিকল্পনায় বাংলাদেশের কোন সম্পৃক্ততা নেই।
বৈঠকে আলোচনা হয় যে- ভারত, পাকিস্তান, ভুটান ও নেপাল এই চার দেশ পানিবিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষে হিমালয় পর্বতশ্রেণী থেকে উৎপন্ন নদীগুলোতে পরিকল্পিতভাবে ছোট-বড় এসব ড্যাম (বাঁধ) নির্মাণ শুরু করেছে। এ কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছে ভারত। বছরের পর বছর এসব নিয়ে তারা ধীরে ধীরে কাজ করলেও বর্তমানে তা ‘মহাযজ্ঞে’ রূপ নিয়েছে। ক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্বার্থ মারাত্মকভাবে উপেতি হওয়ার আশংকা রয়েছে।
বৈঠকে উষ্মা প্রকাশ করে বলা হয়- দ্বিপাকি ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন চুক্তি, সমঝোতা, সনদ ও স্মারক অনুযায়ী অভিন্ন নদীগুলোকে কেন্দ্র করে যে কোনো প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে বাংলাদেশের সঙ্গে তথ্যের আদান-প্রদানের যে শর্ত রয়েছে, জলবিদ্যুৎ প্রকল্প পরিকল্পনায় সেটা উপো করা হচ্ছে। এসব ড্যাম নির্মাণে পরিবেশ ও প্রতিবেশ হবে বিকলাঙ্গ। সবচেয়ে বড় বিপদ হলো- নদীর প্রবাহ কমে গেলে বঙ্গোপসাগরের লবণাক্ত পানি মূল ভূখণ্ডের অনেক ভেতরে চলে আসবে। এর ফলে ধ্বংস হয়ে যাবে ‘বাংলাদেশের ঢাল’ সুন্দরবন। ফসল জন্মানো কঠিন হয়ে যাবে, সেতু ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে মরিচা ধরবে। বাংলাদেশের নদীগুলো শুকিয়ে যাবে। নদীবাহিত পলিতে, পানিশূন্যতায় ভরাট হয়ে যাবে নদীগুলো। পানিতে বাড়বে লবণ। এতে মারাত্মক বিপর্যয়ে পড়বে বাংলাদেশ। অনিশ্চয়তা আর হুমকির মুখে পড়বে দেশের কৃষি ও খাদ্য উৎপাদন। প্রায় রুদ্ধ হয়ে যাবে পানিসম্পদের বিকাশ।
বৈঠক থেকে বেরিয়ে মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, ‘বৈঠকে ভারতের নেতৃত্বে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে বাংলাদেশের উজানে হিমালয় কেন্দ্রিক ৫৫২টি বাঁধ নির্মাণ হচ্ছে। এখান থেকে ২ লাখ ১২ হাজার ২৭০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করার পরিকল্পনায় বাংলাদেশের কোন সম্পৃক্ততা নেই। এতে বাংলাদেশের কি পরিমান লাভক্ষতি এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে আমরা পরে বিস্তারিত জানাবো। ’
বাংলাদেশ সময়: ২৩২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১০