ঢাকা, শনিবার, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৮ মে ২০২৪, ০৯ জিলকদ ১৪৪৫

রাজনীতি

পাবনায় ২ চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধসহ আহত ৭

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১০ ঘণ্টা, মে ৩, ২০২৪
পাবনায় ২ চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধসহ আহত ৭

পাবনা: পাবনার সুজানগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এসময় দুজন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত সাতজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

এ ঘটনায় তিনজনকে দেশীয় অস্ত্রসহ আটক করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (২ মে) সন্ধ্যায় সুজানগর উপজেলার ভায়না ইউনিয়নের কালিরমোড়ে এ ঘটনা ঘটে।  

আহতরা হলেন- ভায়না ইউনিয়নের ভায়না এলাকার রশিদ প্রামাণিকের ছেলে বাদশা প্রামাণিক (৪০), মতিন শেখ (৫০) ও মৃত আজগর আলীর ছেলে আব্দুল আওয়াল (৩৫)। অন্যান্য আহত এবং আটক কারো নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি।

পুলিশ ও নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সন্ধ্যার দিকে ভায়না ইউনিয়নের কালিরমোড়ে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহিনুজ্জামান শাহিনের সমর্থকরা নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল ওহাবের সমর্থক শাহিনের এক সমর্থকের পায়ের ওপর দিয়ে মোটরসাইকেল তুলে দেন। এতে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। একপর্যায়ে আব্দুল ওহাবের সমর্থকরা ভায়না ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আমিন উদ্দিনের লোকজনের সঙ্গে মিলে শাহিনের সমর্থকদের ধাওয়া করেন। এতে সংঘর্ষ ব্যাপক আকার ধারণ করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে শাহিনের সমর্থকরা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান। এতে দুজন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত সাতজন আহত হন।

এ বিষয়ে ভায়না ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিন উদ্দিন বলেন, আমার বাড়ির ওপরে শাহিনুজ্জামান শাহিনের লোকজন হামলা করেছে। আমার বাড়ি ঘর ভাঙচুর করেছে। পরে পুলিশ এসে তাদের প্রতিরোধ করে। এখন তাদের লোকজন কীভাবে আহত হয়েছে, পুলিশই ভালো বলতে পারবে।

এ ব্যাপারে সুজানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জালাল উদ্দিন বলেন, ভায়না ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিন চেয়ারম্যানের বাড়িতে হামলার খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়। পুলিশ যাওয়ার আগেই সেখানে আব্দুল ওহাব ও শাহীন গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি অস্বাভাবিক দেখে সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পুলিশ উভয়পক্ষকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। শাহিনের লোকজন পুলিশের ওপর হামলা করে। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শর্টগানের ফাঁকা গুলি ছুড়ি। এতে একজনের পায়ে গুলি লাগে। ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে দেশীয় অস্ত্রসহ আটক করা হয়েছে।

তবে হামলার জন্য আমিন চেয়ারম্যানকে দায়ী করে চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহিনুজ্জামান শাহিন বলেন, ভোট নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে আমিন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে আব্দুল মজিদ নামে আমার এক সমর্থককে মারধর করা হয়। এটা নিয়েই উত্তেজনা। পরে আমিন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে আমার লোকজনের ওপর গুলি চালানো হয়। এতে আমার কয়েকজন সমর্থক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

হামলার বিষয়ে সাবেক মেয়র উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আব্দুল ওহাব বলেন, সন্ত্রাসের স্বর্গরাজ্য তৈরি করেছে শাহীন। আমার লোকজনের ওপর হামলা করছে, ভয় দেখাচ্ছে। নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করতে তারা সন্ত্রাস করছে। প্রতিকার চেয়ে পুলিশ প্রশাসনসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি, কিন্তু কোনো কিছুই হচ্ছে না। পৌরসভার মেয়র রেজা প্রকাশ্যে আমার সমর্থকদের হুমকি দিচ্ছে, সেই অডিও ভাইরাল হয়েছে। এভাবে নির্বাচন হলে মানুষ ভোট দিতে যাবে না। ভায়নার চেয়ারম্যানের বাড়িতে হামলা করেছে শাহীনের লোকজন। প্রাণ ভয়ে সে আমাকে জানালে তাকে পুলিশে খবর দিতে বলেছি। পুলিশ এলে তারা তাদের ওপরও হামলা করে, কত সাহস দেখেছেন? আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন চাই, আর ওরা সন্ত্রাস করে নির্বাচন করতে চায়।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩০৯ ঘণ্টা, মে ৩, ২০২৪
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।