ঢাকা: বাংলাদেশ কওমী মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড ‘বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ’র (বেফাক) নেতারা বলেছেন, ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলে তারা (সরকার) ধর্মের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস করছে। ‘ধর্ম নিরপেক্ষতা মূলত ধর্মহীনতা।
রোববার দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয় শিক্ষানীতি- ২০১০ সম্পর্কে উলামা-মাশায়েখের জাতীয় মতবিনিময় সভায় বেফাক নেতারা এসব কথা বলেন।
সভায় বেফাক নেতারা ধর্মের বিরুদ্ধে সরকারের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সমুচিত জবাব দিতে দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বেফাকের সাবেক নেতা ও হাফেজ্জি হুজুরের বড় ছেলে মাওলানা আহমাদুল্লাহ আশরাফ আওয়ামী লীগ বিএনপিকে সাবেক ও বর্তমান জালেম হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, ‘এদের কাউকে বিশ্বাস করা যায় না। এদের একজন পেটে মারে, আরেকজন পিঠে মারে। ’
তিনি বলেন, ‘এদের একজনের হাতে স্বৈরতান্ত্রিক মার, আরেকজনের হাতে গণতান্ত্রিক মার। এদের দুইজনের উদ্দেশ্যই অভিন্ন। এদের কোনো অবস্থাতেই মেনে নেওয়া যায় না। ’
বেফাক সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা নেজামউদ্দিন বলেন, ‘নারী –পুরুষের সম- অধিকার নয়। চাই ন্যায্য অধিকার। নারী অনেক ক্ষেত্রে পুরুষের থেকে বেশি অধিকার ভোগ করে। সম অধিকারের কথা বলে তারা (সরকার) নারীদের ঠকানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। ’
বেফাকের আরেকজন সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ বলেন, যারা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কথা বলেন তারাই শ্লোগান সন্ত্রাস করছেন। আর এই স্লোগান সন্ত্রাস হচ্ছে ধর্মনিরপেক্ষতা। সরকারকে তিনি এ সন্ত্রাস থেকে বেরিয়ে আসার আহবান জানান।
বেফাক সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি মাওলানা মুশাররফ হোসেন বলেন, ‘যে শিক্ষানীতির মধ্যে ধর্মীয় শিক্ষা নেই। সেই শিক্ষানীতি পূর্ণাঙ্গ নয়। যদি সরকার কওমী ও ইসলামী শিক্ষাকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়, জীবন দিয়ে হলেও প্রতিহত করা হবে। ’
বেফাক রংপুর প্রতিনিধি মাওলানা রবিউল ইসলাম বলেন, কেউ দাওয়াত করে নিয়ে কুকুরের মাংস দিয়ে মেহমানদারী করলে সেটাও মেনে নেওয়া সম্ভব। কিন্তু বর্তমান সরকার যে শিক্ষানীতি চাপিয়ে দিয়েছে তা মেনে নেওয়া সম্ভব না।
বেফাক সহ-সভাপতি মাওলানা আশরাফ আলীর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন, বেফাকের সহ-সভাপতি মাওলানা আনোয়ার শাহ, বেফাকের ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি মাওলানা আব্দুর রহিম, পিরোজপুরের মাওলানা নাছির উদ্দিন, খাগড়াছড়ির মাওলানা ওসমান গণি, নরসিংদীর মাওলানা ইসমাইল হোসে
সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা আশরাফ আলী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় আসার আগে কুরআন ও সুন্নাহ বিরোধী আইন না করার ওয়াদা করেছিলেন। এখন যা কিছু হচ্ছে সব কুরআন সুন্নাহ বিরোধী। ’
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্য তিনি বলেন, ‘গ্যাস-বিদ্যুৎ-সমস্যার সমাধান না করে কুরআন সুন্নাহ’র পেছনে লেগেছেন। এর পরিণতি ভালো হবে না। আগামীতে সংসদে বসতে চাইলে এই অপতৎপরতা থেকে বিরত থাকুন। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১০