ঢাকা, সোমবার, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ মে ২০২৪, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

দলবদল ডিগবাজি নয়, সাংবিধানিক অধিকার: শাহজাহান ওমর

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬, ২০২৩
দলবদল ডিগবাজি নয়, সাংবিধানিক অধিকার: শাহজাহান ওমর

ঢাকা: বিএনপির বহিষ্কৃত ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। তবে তিনি দলবদলকে ‘ডিগবাজি’ বলতে নারাজ।

দলবদল সাংবিধানিক অধিকার বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির এই সাবেক নেতা।

বুধবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডের ডিবি কার্যালয় থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

এক প্রশ্নের জবাবে শাহজাহান ওমর বলেন, এটাকে ডিগবাজি বলে নাকি? এটা সাংবিধানিক অধিকার, আদর্শগত ব্যাপার। সব সময় সবখানে অ্যাডজাস্টমেন্ট করা সম্ভব নাও হতে পারে। আমি এই বৃদ্ধ বয়সে এসে মনে হলো, জনগণের জন্য কাজ করি, কারণ আমার চাওয়া-পাওয়ার আর কিছু নাই। আমার রাজনীতি করে রুটি-হালুয়া লাগে না, আমার মন্ত্রী হওয়ার দরকার নাই। আমি সব হয়েছি, এই মাটি আমাকে সব দিয়েছে।

তিনি বলেন, একটা দল করা আমার সাংবিধানিক অধিকার। দেশের স্বার্থে জনগণের স্বার্থে বড় বড় রাজনীতিবিদরাও দল পরিবর্তন করেন। আমি পাকিস্তান আর্মিতে ছিলাম, শপথ পাঠ করেই অফিসার হয়েছি। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের সময় আগস্ট মাস থেকে দেশের জন্য যুদ্ধ করেছি।

শাহজাহান ওমর আরও  বলেন, আমি বরিশাল বিভাগের কমান্ডার ছিলাম। দেশের স্বার্থে পাকিস্তান আর্মি ত্যাগ করেছি। কিন্তু আমি তো পাকিস্তান আর্মির শপথ নিয়েছিলাম, পরে তাহলে পাকিস্তানের সাথে বেইমানি করেছি। কিন্তু জনগণের সাথে বেইমানি করতে পারিনি। মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য শেখ মুজিব সরকার আমাকে বীর উত্তম খেতাব দিয়েছে। ইমান একমাত্র আল্লাহর কাছে, বেইমানি তো ধর্মের বিষয়। রাজনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা বেইমানি নয়।

আবারও বিএনপিতে যোগদানের সম্ভাবনা আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে শাহজাহান ওমর বলেন, তওবা আস্তাগফিরুল্লাহ!

সরকারের সঙ্গে আপস করে জামিন পেয়েছেন কি না প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কাশিমপুরে আপস করে কেমন করে। ২৯ নভেম্বর নরমাল প্রসেসে আমার জামিন হয়েছে। ৩০ নভেম্বর তারিখে জয়েন করেছি। জামিন আমার এমনিতেও হতো। ৪ নভেম্বর গ্রেপ্তার হয়েছি, ৬ তারিখে সুপ্রিম কোর্টে জামিনের জন্য আমার দরখাস্ত জমা ছিল। কিন্তু জামিনটি হলো না। পরের তারিখে গেলাম, তখন আমার আইনজীবী আদালতকে বললেন, সাথের তিনজনকে জামিন দেওয়া হয়েছে আমাকে কেন দেওয়া হবে না? এছাড়া, আমি চারবারের এমপি, বীর উত্তম খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা। এজন্য আদালত আমাকে জামিন দিয়েছেন।

নাশকতার মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে শাহজাহান ওমর বলেন, মামলা হতেই পারে, আমি তো ২৮ অক্টোবর ঘটনার দিন মঞ্চে ছিলাম। এটা তো অস্বীকার করতে পারি না। তাই নাশকতামূল যে কোনো মামলা হতেই পারে। তদন্তে সংশ্লিষ্টতা পেলে পুলিশ আমার বিরুদ্ধে চার্জশিট দেবে, বিচারের কাঠগড়ায় পাঠিয়ে দেবে।

ঝালকাঠিতে নিজের নির্বাচনী আসনে সমাবেশে আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা মিস আন্ডারস্ট্যান্ডিং ছিল। আমার লাইসেন্স করা পিস্তল আছে, সেটা সেদিন অনিচ্ছাকৃতভাবে সাথে ছিল। আমার সাথে যারা ছিল তারাও সাথে গেল। এছাড়া, এটা ফরমাল মিটিংও ছিল না। সেদিন আমি শুধু সবাইকে বলেছি, দল পরিবর্তন করা ব্যক্তিগত স্বাধীনতা। আমি আওয়ামী লীগে যোগদান করেছি, আমার সঙ্গের সবাই এখন আওয়ামী লীগে। সামনে একসঙ্গে আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কাজ করব।

ইসিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শাহজাহান ওমর বলেন, এটা ভুল তথ্য। আমার কাছে আচরণবিধি ছিল না, সেটা ইসি থেকে নিয়ে আসছি। সাংবাদিকরা চাইলেই আমার ছবি তুলতে পারেন, কিন্তু অন্তত ন্যূনতম একটু বলা উচিৎ। তাদের বলেছি, লুকিয়ে এদিক-সেদিক থেকে কেন ছবি তুলবেন? তারা একটু কথা বলে যদি ন্যূনতম সৌজন্যতাবোধ দেখান তাহলেই হতো। এরমধ্যে ওরা জিজ্ঞাসা করছেন, আপনি কেন আসছেন? কোন কথা না বলেই জিজ্ঞাসা করে কেন আসছেন? তারা ১০০ বার বলতে পারেন, কিন্তু ন্যূনতম সৌজন্যতাবোধ যদি দেখান, তাহলে সমস্যা হয় না। কিন্তু কারও সাথে কোনো দূর্ব্যবহার করিনি। সেখানে অনেক সাংবাদিক ছিলেন, কেমন করে বেরিয়ে যাব, সেই চিন্তায় ছিলাম।

ডিবিতে আসা প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের এই প্রার্থী বলেন, কোর্ট থেকে এখানে এসেছি একটা ব্যক্তিগত কারণে। আমি আগে বিএনপি করতাম, এখন আওয়ামী লীগে জয়েন করেছি। এরপর থেকে আমি সাইবার বুলিংয়ের স্বীকার হচ্ছি। আমার ছেলে-মেয়ে, স্ত্রী এমনকি আমার জুনিয়র আইনজীবীর ফোনে কল করে নানান কথা বলা হচ্ছে। সেই বিষয়টিই হারুন সাহেবকে জানাতে আসলাম।

আর পড়ুন:
সাইবার বুলিংয়ের অভিযোগ নিয়ে শাহজাহান ওমর ডিবিতে

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৬, ২০২৩
পিএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।