ঢাকা, রবিবার, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ মে ২০২৪, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

পশ্চিমা বিশ্বের অবস্থান ফখরুল সাহেবকে সাহস জোগাচ্ছে: তথ্যমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০২৩
পশ্চিমা বিশ্বের অবস্থান ফখরুল সাহেবকে সাহস জোগাচ্ছে: তথ্যমন্ত্রী তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। 

ঢাকা: ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে পশ্চিমা বিশ্বের অবস্থান এক দিকে ইসরাইলকে সাহস জোগাচ্ছে, আরেক দিকে মির্জা ফখরুল সাহেবকে সাহস জোগাচ্ছে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।  

তিনি বলেন, একটি বৃহৎ শক্তি নাখোশ হতে পারে।

এজন্য বিএনপি নিশ্চুপ থেকে প্রকৃতপক্ষে বর্বরতা, নির্মমতার, যুদ্ধাপরাধের পক্ষ নিয়েছে এবং ইসরাইলের পক্ষ নিয়েছে ৷ দেশের জনগণ এদের চিনে রাখবে।

সোমবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল সাহেবের একটা কথা খুব আলোচিত হয়েছে, তিনি বলেছেন সরকার পতনের যে চলমান আন্দোলন সেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বিশ্বের সমর্থন তাদের প্রতি আছে এজন্য তারা এগিয়ে যাচ্ছে এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, তিনি যে সমর্থনের কথা বললেন সেটি হলো, তাদের অবস্থান তাদেরকে সাহস জোগাচ্ছে। আসলে তাদের আন্দোলনকে কেউ সমর্থন দেয় না। পাশ্চিমা বিশ্বের অবস্থান যেমন ইসরাইলকে সাহস জোগাচ্ছে। মির্জা ফখরুল ইসলামের বক্তব্য শুনে মনে হচ্ছে তাদের অবস্থান তাদেরকে সাহস যোগাচ্ছে। দুইটার মধ্যে মিল আছে। পশ্চিমা বিশ্বের অবস্থান ইসরাইলকে স্পষ্ট সাহস জোগাচ্ছে এবং পশ্চিমাবিশ্বের বিভিন্ন দেশে ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, অস্টিয়া এমনকি অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশে ফিলিস্তিনিতের পক্ষে কোনো মিছিল, মিটিং,সমাবেশ করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অর্থ্যৎ মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সেখানে দমন করা হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, যেকোন বিষয়ে মত প্রকাশ করতে পারার অধিকারটাই হলো মতপ্রকাশের স্বাধীনতা। এখন ইসরাইলিদের বিপক্ষে যাবে বিধায় ফিলিস্তিনিদের পক্ষে কেউ কথা বলতে পারবে না। ফ্রান্সের আইনমন্ত্রী বলেছেন যে এব্যাপারে কেউ কোনো বক্তব্য রাখলে সেটি আইনত দণ্ডনীয় হিসেবে ধরা হতে পারে। অথ্যৎ পশ্চিমাবিশ্বের অবস্থান একদিকে ইসরাইলকে সাহস জোগাচ্ছে, আরেক দিকে মির্জা ফখরুল সাহেবকে সাহস জোগাচ্ছে। দুইটার মধ্যে প্রচুর মিল আছে দেখা যাচ্ছে।

তিনি বলেন, আসলে তাদের জনগণের ওপর কোনো আস্থা নেই৷ জনগণের ওপর আস্থা নেই বিধায় এখন কাকের মতো দূরদেশ থেকে কে কি বললো সেদিকে তাকিয়ে থাকে। কাক যেমন কেউ খাবাবের উচ্ছিষ্ট ফেললে তাকিয়ে থাকে। আর মির্জা ফখরুল সাহেবেরা জনগণের দিকে না তাকিয়ে কাকের মতো দূরবিশ্বের দিকে তাকিয়ে থাকে।  

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ক্ষমতার মালিক জনগণ। আমরা জনগণের শক্তিতে বলিয়ান। জনগণই এদেশের মালিক, জনগণই নির্ধারণ করবে করা দেশ পরিচালনা করবে। কারা দেশ পরিচালনা করবে না। আমরা জনগণের শক্তিতেই বিশ্বাস করি। পশ্চিমাবিশ্ব, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব এগুলো বলে তাদের কর্মীদের একটু চাঙা রাখার চেষ্টা করছে।

ইসরায়েলের হামলায় বিএনপি একেবারেই নিশ্চুপ, তবে তারেক রহমান বলেছেন আমরা ফিলিস্তিনিদের পক্ষ নেব না, তাহলে আমেরিকা বা পশ্চিমাবিশ্ব ক্ষেপে যাবে। এ বিষয়ে আপনি কি বলবেন এমন প্রশ্নেন জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ইসরাইয়েলিরা পাখি শিকারের মতো ফিলিস্তিনিদের শিকার করছে। যুদ্ধের কথা বলে গাজা উপত্যকায় খাদ্য, পানীয়, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সব কিছু বন্ধ করে দিয়েছে। এমন কি হাসপাতালেও বোমা বর্ষণ হচ্ছে। এটি তো মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘে দাঁড়িয়ে ফিলিস্তিনিদের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছেন। আমি তথ্যমন্ত্রী হিসেবেও এ বিষয়ে বক্তব্য রেখেছি। বিএনপি এবং জামায়াত যখন নির্বাচন আসে তারা তখন কড়া মুসলমান হয়ে যায়। বরং আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অনেক কথা বলে। অথচ আজকে যখন মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘঠিত হচ্ছে সেটি নিয়ে তারা নিশ্চুপ। একটি বৃহৎ শক্তি নাখোশ হতে পারে। সেখানে এ নিশ্চুপ থেকে প্রকৃতপক্ষে বর্বরতা, নির্মমতার, যুদ্ধাপরাধের পক্ষ নিয়েছে বিএনপি এবং ইসরায়েলের পক্ষ নিয়েছে বিএনপি৷ দেশের জনগণ এদের চিনে রাখবে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক নির্বাচনীদল তারা সংলাপের কথা বলেছেন সে বিষয়ে আপনার বক্তব্য কি জানতে চাইলে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, দেখুন আমাদের বন্ধুরাষ্ট্র যেকোনো পরামর্শ দিতে পারে। দেশটা আমাদের এবং দেশের মালিক জনগণ এখন বন্ধুরাষ্ট্র কে কি বলল সেটি গুরুত্বপূর্ণ নয়। দেশের জনগণ কি চায় সেটি হচ্ছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তারা পরামর্শ দিকে পারে সেটা গ্রহণ করবো কি করবো না সেটা সম্পূর্ণ আমাদের এখতিয়ার।  

তিনি বলেন, বিএনপি যেভাবে জননেত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ, সংসদ বাতিল, তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করতে হবে এসমস্ত শর্ত দিয়ে কখনো সংলাপ হতে পারে না।

নির্বাচনকালীন সরকার কি গতবারের মতো হবে নাকি কোনো পরিবর্তন দেখা যাবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের কোনো প্রয়োজন বা বাধ্য বাধকতা নেই। এটি প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার৷ নির্বাচনকালীন সময়ে বর্তমান মন্ত্রীসভার পুরোটা থাকবে কিনা, নাকি সেটি ছোট করবেন কিংবা বড় করবেন সেটি প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। নির্বাচনকালীন সময়ে বর্তমান সরকারই নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করবেন। নির্বাচনকালীন সরকার গঠিত হবে বা হতে যাচ্ছে এ কথাগুলো আসলে সংবিধান সম্মত নয়। সংবিধানে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। এটি সম্পূর্ণভাবে প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার৷  


বাংলাদেশ সময়: ১৪৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০২৩
জিসিজি/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।