ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ মে ২০২৪, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

দল-মত নির্বিশেষে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান ফখরুলের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০২৩
দল-মত নির্বিশেষে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান ফখরুলের কথা বলছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: সরকার পতনের আন্দোলনে দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে গণঅধিকার পরিষদ একাংশের উদ্যোগে ‘গণতন্ত্র, সার্বভৌমত্ব ও রোহিঙ্গা সঙ্কট: শহীদ আবরার ফাহাদের প্রেরণা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ আহ্বান জানান তিনি।



সব রাজনৈতিক দলের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার দেশকে লুটেরাদের স্বর্গরাজ্য পরিণত করেছে। এরা আসবে, লুট করবে- নিয়ে চলে যাবে। কথা বাড়াতে চাই না। কথা এখন একটাই, কোনো কথা-বার্তা না বলে, কালবিলম্ব না করে, আসুন আমরা সবাই দল-মত নির্বিশেষে বাম, ডান, উত্তর-দক্ষিণ বুঝি না, যারা দেশকে ভালোবাসেন তারা সবাই ঝাঁপিয়ে পড়েন।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেবকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি। আওয়ামী লীগের যে কয়েকজন পড়াশোনা জানা মানুষ তাদের মধ্যে তিনি একজন। আমরা তাই জানতাম। কিন্তু তার কি করুণ অবস্থা হয়েছে, সেটা জানতাম না। ইউরেনিয়াম কি জিনিস তাই জানেন না তিনি। এটার জন্যতো বিশেষ কোনো জ্ঞানের প্রয়োজন হয় না। এর আগেও তিনি উল্টা-পাল্টা কথা বলেছেন না? ‘তলে তলে আপস হয়েছে’। এটার জন্য মনে হয় তার মনিব ক্ষুব্ধ হয়েছেন। সেটার জন্য হয়তো তার চেয়ে বেশি বক্তব্য দিচ্ছেন। এটাই হয় আর কি। এসব দল ও সরকারগুলোতে তোষামোদি এমন পর্যায়ে চলে যায় যে, তখন তা হাস্যরসে পরিণত হয়।

ফখরুল বলেন, আমার এক জুনিয়ার বন্ধু বাইরে থাকে। ও আমাকে বলেছে যে, এ ধরনের কথা বলেছে, আপনি কিন্তু এর প্রতিবাদ করতে যাবেন না। কথাগুলো কিন্তু আমাদের জন্য বিনোদনের ব্যাপার হয়ে গেছে। এটা আমাদের জন্য বিনোদন। আমাদের জীবনতো দুর্বিষহ। এটুকু বিনোদন থেকে আমাদের বঞ্চিত করবেন না। আর এসব কথা শুনে অতি দুঃখেও খুবই হাসি পায়।

রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা এমন কোনো কাজ করবেন না যাতে আমাদের ঐক্যের ক্ষতি হয়। অনেকের মধ্যে আমরা এই প্রবণতাটা দেখেছি, অনেক সময় মনগড়া কথা সমাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন। এটা করবেন না। এটা যারা করেন তারা আন্দোলনের জন্য কোনো কাজ করছেন না। আন্দোলনের পেছনে ছুরি মারছেন।

বিগত নির্বাচনের চিত্র তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, নির্বাচন যখন সামনে আসছে তখন একই কায়দায় আজকে আবার বলতে শুরু করেছেন যে, আমার অধীনে নির্বাচন হবে। ওটাই সংবিধান। সংবিধানেতো কাটা-ছেঁড়া করে কিছুই রাখেনি। আর আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র ও জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করে না। তারা মনে করে দেশটা তাদের পৈতৃক সম্পত্তি। এটাকে তারা যেমন ইচ্ছা তেমনভাবে ভোগ করবে। দেশের সর্বনাশ করে দিয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ঘরের মধ্যে সভা করার এখন আর সময় নেই। এখন সময় এসেছে বাইরে রাজপথে আমাদের কথাগুলোকে সামনে নিয়ে আসা এবং এই ভয়াবহ দানবীয় সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে আন্দোলন করে একে সরানো ছাড়া জাতির সামনে আর কোনো বিকল্প নেই।

আওয়ামী লীগ যখন গণতন্ত্রের কথা বলে তখন ভূতের মুখে রাম নাম মন্তব্য করে তিনি বলেন, ঢাকায় লোকের চেয়ে গ্রামের লোকেরা আরও বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে। গ্রাম এবং মফস্বলের মানুষের এই সরকারকে এক মুহূর্তও দেখতে চায় না।  

গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়ার সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম আহ্বায়ক সাদ্দাম হোসেনের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন এবি পার্টির আহ্বায়ক এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, গণঅধিকারের ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব ফারুক হাসান, যুগ্ম আহ্বায়ক কর্নেল (অব.) মিয়া মশিউজ্জামান, ব্যারিস্টার জিসান মহসিন, আবদুল মালেক ফরাজি, যুগ্ম সদস্য সচিব আতাউল্লাহ, তারেক রহমান, সহকারী সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট শিরিন আক্তার শেলী, কেন্দ্রীয় সদস্য আহমেদ ইসমাইল বন্ধন, ইঞ্জিনিয়ার ফাহিম, জাহাঙ্গীর আলম, যুবনেতা ইমরান আল নাজির, ছাত্রনেতা সোহেল মৃধা প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০২৩
টিএ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।