ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

রাজনীতি

গাড়িবহরে আতঙ্ক: ঢাকায় ফিরছেন খালেদা

মান্নান মারুফ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০১০
গাড়িবহরে আতঙ্ক: ঢাকায় ফিরছেন খালেদা

খালেদা জিয়ার গাড়ি বহর থেকে: ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েছে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গাড়ি বহর।

যমুনা সেতু পার হয়েই আটকা পড়া বহরটিতে বিরাজ করছে তীব্র আতঙ্ক।

ভাঙচুর, ইটপাটকেল ও ফাঁকা গুলির আওয়াজে বহরে দেখা দিয়েছে চরম অরাজকতা। অনেক যাত্রীই তাদের গাড়ি বা চালককে হারিয়ে ফেলেছেন।

তবে খালেদা জিয়া গাড়ি ঘুরিয়ে যমুনা রিসোর্টের আশ্রয়ে ফিরে যেতে সক্ষম হন। এরপর ঢাকার পথে রওয়ানা হন তিনি।

যমুনা রিসোর্টে যাত্রাবিরতি ও মধ্যাহ্ন ভোজনের পর বিকেল ৩টার পর বহরটি যমুনা সেতু পার হয়। এ সময় সিরাজগঞ্জের জনসভাস্থলের কাছে ট্রেনে কাটা পড়ে প্রায় ২০ জনের মৃত্যু হলে বিুব্ধ জনতা ভাঙচুর শুরু করে। এতে গাড়ি বহরটি উভয় পাশে কয়েক কিলোমিটার যনজটের মাঝে আটকা পড়ে।

এর আগে গাড়ি বহরটি দুপুর দেড়টার দিকে যমুনা রিসোর্টের সামনে থামে। ওখানেই আয়োজন করা হয় মধ্যাহ্নভোজনের। বিএনপি প্রধান এবং তার সফরসঙ্গী নেতাকর্মী, সাংবাদিক ও নিরাপত্তা কর্মীদের জন্য এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আব্দুল আউয়াল মিন্টু ওই আয়োজন করেন। গাড়ি বহরকে সেখানে অভ্যর্থনাও জানান তিনি।

মধ্যাহ্নভোজনে ভেতো বাঙালির জন্য ভাতের সঙ্গে মুরগির ঝাল ফ্রাই, রুই মাছ ভাজা, সবজি আর মুগডালের আয়োজন করা হয়। সঙ্গে ছিলো শসা-টমাটোর সালাদ।

ঘণ্টা দেড়েকের যাত্রাবিরতি শেষে বিকেল ৩টার পরপর গাড়ি বহর আবারো চলতে শুরু করে।

এদিকে হোটেল র‌্যাডিসনের সামনে থেকে সকাল ১১টায় রওয়ানা হওয়া শ’ খানেক গাড়ির বহরটি টঙ্গী-গাজীপুর-কালিয়াকৈর-মির্জাপুর-টাঙ্গাইল পেরিয়ে এসে আকারে প্রায় দ্বিগুণ হয়।

টঙ্গী থেকে ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, চেরাগ আলী থেকে স্থানীয় বিএনপি নেতা হাসান উদ্দিন সরকার ও গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে অধ্যাপক আব্দুল মান্নান, টাঙ্গাইল থেকে ছাত্রদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর নেতৃত্বে আরও প্রায় অর্ধশত গাড়ি বহরে যোগ হয়।

যমুনা সেতুর অ্যাপ্রোচ সড়কে ওঠার আগে আগে ভূয়াপুর থেকে এসে বহরে যোগ হয় ১৮টি বাস।

ঢাকা থেকে যাত্রা শুরুর পর এ পর্যন্ত টঙ্গী ব্রিজ, বোর্ড বাজার, গাজীপুর চৌরাস্তা, কড্ডা, কোনাবাড়ী, কালিয়াকৈর, মির্জাপুর, সখিপুর, টাঙ্গাইল ইত্যাদি স্থানে বিএনপি প্রধানকে স্বাগত জানিয়ে বানানো কয়েক ডজন সুদৃশ্য তোরণ চোখে পড়ে। এছাড়া রাস্তার দু’পাশে হাজার হাজার নেতাকর্মীর হাতে দেখা যায় জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি সম্বলিত ফেস্টুন, নানা স্লোগান সম্বলিত ব্যানার।

গাজীপুর চৌরাস্তায় নেতাকর্মীরা ফুলের পাঁপড়ি ছিটিয়ে গাড়ি বহরকে শুভেচ্ছা জানান।

অফ-হোয়াইট রঙের শাড়ী পরিহিত সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে শতাধিক গাড়ির বহরটি হোটেল র‌্যাডিসনের সামনে থেকে রওয়ানা হয় সকাল ১১টায়।

টঙ্গী ব্রিজ পার হওয়ার পর থেকেই রাস্তার দু’পাশে হাজার হাজার নেতাকর্মীকে দাঁড়িয়ে স্লোগান দিতে দেখা যায়। খালেদা জিয়া হাত নেড়ে তাদের অভিবাদনের জবাব দেন।

বহরে স্থায়ী কমিটি, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদ ও কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা রয়েছেন। তবে অসুস্থ হয়ে পড়ায় বিএনপি মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন এ সফরে শরিক হননি।

প্রসঙ্গত, এ সফরে খালেদা জিয়ার কেবল সিরাজগঞ্জ যাওয়ার কথা ছিলো।

কিন্তু রোববার রাতে সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেন খালেদা জিয়া। টেলিফোনে কথা বলেন বর্তমানে নাটোরে অবস্থানকারী দলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান ও সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে। এরপর সফরসূচিতে  পরিবর্তন আনেন তিনি।

সয়দাবাদ মূলাবাড়ীতে পূর্ব নির্ধারিত গণজমায়েতে অংশগ্রহণ শেষে নাটোরের বনপাড়ায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

নাটোরে গত শুক্রবার আওয়ামী লীগ কর্মীদের হামলায় নিহত বড়াইগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ নূর বাবুর স্ত্রী মহুয়া নূর কচি এবং তিন মেয়ে পূনম (১৬), পরমা (১৪) ও সূরাইয়াকে (৭) সান্ত্বনা দিতেই বিরোধী দলীয় নেত্রীর নাটোর সফর বলে জানিয়েছে দলীয় সূত্র।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।