ঢাকা: সমাজ, সংস্কৃতি, অর্থনীতি ও রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন ও সংস্কারের লক্ষ্যে রাজনৈতিক সহনশীলতা, ঐকমত্য ও সহিষ্ণুতার ডাক দিয়েছে ‘গড়বো বাংলাদেশ’।
‘যোগ্য নেতৃত্বের সন্ধানে আমরা অপেক্ষায় আছি’ শিরোনামে রোববার সামাজিক এ সংগঠনের উদ্যোগে রাজধানীর পল্টন ময়দানে এক মহসমাবেশের আয়োজন করা হয়।
এতে যোগ্য নেতার জন্য ফাঁকা রাখা হয় প্রধান অতিথির চেয়ারটি।
মহাসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপির প্রয়াত মহাসচিব কে এম ওবায়দুর রহমানের স্ত্রী অধ্যাপক ড. শাহেদা বানু (শাহেদা ওবায়েদ)।
তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার ৩৯ বছর পরও চারিদিকে শুধু হাহাকার ও নেই নেই রব। তাই আমরা অতীতে কেমন ছিলাম এখন কেমন আছি এবং ভবিষ্যতে কেমন থাকব তা বলতে এসেছি। ’
তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য বঙ্গবন্ধু, মাওলানা ভাসানীর মতো কাছাকাছি মানের নেতার অপেক্ষায় আছি। তাই আমরা প্রধান অতিথির আসন ফাঁকা রেখেছি। ’
বর্তমান সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘এ সরকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের আদর্শ পরিহার করে ডিজিটাল বাংলাদেশের নামে হত্যা, লুটপাট ও ধ্বংসের রাজনীতিতে লিপ্ত রয়েছে। ’
তবে সরকারের চেয়ে বিরোধীদলের সমালোচনাই বেশি উচ্চারিত হয়েছে তার কণ্ঠে।
তিনি বলেন ,‘দেশে এখন কোনো বিরোধী দল নেই। থাকলে ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি, তারেক-কোকোর প্যারোল নিয়ে ব্যস্ত না থেকে জনগণের হাজারো দুর্ভোগ লাঘবের জন্য সোচ্চার থাকতো। ’
তিনি গাছের দুই ডালের উপর নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য স্বাধীনতার পক্ষের সব নাগরিককে গড়বো বাংলাদেশের ছায়াতলে আসার আহ্বান জানান।
গড়বো বাংলাদেশের মুখপাত্র ও মহাসমাবেশের প্রধান বক্তা কামরুল হাসান নাসিম বলেন, ‘বর্তমান সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে বিরোধী দলের খুুশি হওয়ার কিছু নেই। কারণ জনগণ হাওয়া ভবনের দুঃশাসন অনেক দিন মনে রাখবে। ’
খালেদা জিয়া তিনটি জন্মদিন পালন করে দেশবাসীকে ধোঁকা দিচ্ছেন বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি আরও বলেন, ‘গণতন্ত্রের পুনর্জাগরণ ও সুখী সমৃদ্ধ বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রচলিত আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থার পরিবর্তনের বিকল্প নেই। ’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো দেশ গড়ার পরিবর্তে দলতন্ত্র ও পরিবারতন্ত্র কায়েম করে লুটপাট ও হত্যার রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করেছে। ’
তিনি বক্তব্যে দেশের বর্তমান আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, বিরোধী দলের ভূমিকা, সংবিধান সংশোধনের পদ্ধতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
তিনি ’৭২-র সংবিধানকে ভারত, পাকিস্তান ও ব্রিটিশ সংবিধানের ‘জগাখিচুড়ি’ উল্লেখ করে একে সংশোধনের জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষ ও অভিজ্ঞ পেশাজীবীদের নিয়ে কমিটি গঠনের জন্য সরকারকে অনুরোধ করেন।
সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য রাখেন গড়বো বাংলাদেশের সহযোগী সংগঠন ‘আমরা ছাত্রে’র সভাপতি ফয়েজ চৌধুরী।
সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির (জেপি) অতিরিক্ত মহাসচিব সাদেক সিদ্দিকী, জাতীয় নাগরিক মঞ্চের প্রধান কর্মী লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) ফরিদুল আকবর প্রমুখ।
তবে বক্তারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের উদ্যোগ নেওয়ায় মহাজোট সরকারের প্রশংসা করেন।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালের ৩ মার্চ সংগঠনটি আত্মপ্রকাশ করে।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৭ ঘণ্টা, ১০ অক্টোবর, ২০১০