ঢাকা, শুক্রবার, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ মে ২০২৪, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

নির্বাচনের ৩ মাস আগে সংসদ ভেঙে দিতে হবে: খেলাফতের কাদের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩১ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০২৩
নির্বাচনের ৩ মাস আগে সংসদ ভেঙে দিতে হবে: খেলাফতের কাদের

খুলনা: খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেছেন, ‘আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তিন মাস আগেই ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। আর পদত্যাগের মধ্যদিয়েই জাতীয় সংসদ ভেঙে দিতে হবে।

তারপরই নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সব দলের অংশ গ্রহণে জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। ’

বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) বিকেলে নগরীর নিউ মার্কেট সংলগ্ন বায়তুন নূর জামে মসজিদ চত্বরে অনুষ্ঠিত দলের খুলনায় বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।  

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ, নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন, গ্রেপ্তার আলেম-ওলামা ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মুক্তি এবং জাতীয় সংকট উত্তোরণসহ ৮ দফা দাবিতে খেলাফত মজলিশ খুলনা বিভাগের পক্ষ থেকে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।  

প্রধান অতিথির বক্তব্যে খেলাফত মজলিসের মহাসচিব বলেন, দেশ আজ এক মহাসংকটে পড়েছে। একদলীয় শাসনে সাধারণ মানুষ শোষিত হচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের চরম ঊর্ধ্বগতি সরকার রোধ করতে ব্যর্থ হয়েছে। বিরোধী দলগুলোর রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। ঢাকায় আওয়ামী লীগ-বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এ পরিস্থিতি থেকে জাতিকে বাঁচাতে হবে।  

সংঘাতমুক্ত পরিস্থিতি তৈরি করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেন, আমরা সংঘাত চাই না, দেশবাসী সংঘাত চায় না। সংঘাত থেকে উত্তরণে এই সরকারের পদত্যাগের কোনো বিকল্প পথ নেই। যদি সংঘাত না চান, তাহলে পদত্যাগ করে সংঘাতমুক্ত পরিস্থিতি তৈরি করুন।  

সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরও বলেন, এখনও সময় আছে- পদত্যাগ করুণ। পদত্যাগ করে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। (নইলে) কঠোর আন্দোলনের মধ্যদিয়ে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের মাধ্যমে জনতার সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।  

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন দলের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ও খুলনা বিভাগীয় সমাবেশ আয়োজনের তত্ত্বাবধায়ক মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন।  

সভাপতির বক্তব্যে দলের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ও খুলনা বিভাগীয় সমাবেশ আয়োজনের তত্ত্বাবধায়ক মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন বলেন, খুলনা বিভাগীয় সমাবেশ করার জন্য নগরীর সোনালী ব্যাংক চত্বর এবং ডাকবাংলা চত্বর ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে খুলনার পুলিশ কমিশনার বরাবর আবেদন করা হয়। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসে এ দুটি স্থানের কোনোটিতে সমাবেশ করার অনুমতি দেয়নি। ফলে বাধ্য হলে বায়তুন নূর মসজিদ চত্বরে সমাবেশ করতে হয়েছে। যে কারণে সকল প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও পরিপূর্ণ আয়োজন সম্ভব হয়নি।  

তারপরও বৈরী আবহাওয়াসহ সার্বিক পরিস্থিতিতে দলীয় নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষ সমাবেশে অংশ নেওয়ায় কৃতজ্ঞা জ্ঞাপন করেন তিনি।  


সমাবেশে বিশেষ অতিথির ভাষণে দলের নায়েবে আমির অধ্যাপক সিরাজুল হক বলেন, ১৯৭১ সালের লড়াই ছিল জালেমের বিরুদ্ধে মজলুমের লড়াই। কিন্তু স্বাধীনতা অর্জনের ৫০ বছরেও সেই জালেমদের উৎখাত করতে পারিনি। আজকেও সেই জালেমরাই ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত রয়েছে।  

তিনি বলেন, পাকিস্তানি ও ব্রিটিশদের তাড়িয়েছি। কিন্তু সেই ব্রিটিশদের প্রেতাত্মা আজও রয়েছে বাংলাদেশে। এই দেশে ধনী আরও ধনী হয়েছে, গরিব আরও গরিব হয়েছে। তাই আন্দোলনের মাধ্যমে চূড়ান্তভাবে জালিমদের পরাজিত করে মজলুমদের রাজত্ব কায়েম করতে সকলের প্রতি আহ্বান জানাই।

সমাবেশে বিশেষ অতিথির ভাষণে দলের যুগ্ম মহাসচিব মুহাম্মদ মুনতাসির আলী বলেন, খেলাফত মজলিশ বাংলাদেশে আপোসহীন রাজনীতি করে আসছে। খেলাফত মজলিশ মনে করে বাংলাদেশে যে রাজনৈতিক সংঘাত ও সংকট সৃষ্টি হয়েছে, মানুষের ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছে- তার মূল কারণ হচ্ছে- এ দেশে খেলাফত রাষ্ট্র ব্যবস্থা কায়েম নেই। এ দেশে রাজনৈতিক অধিকার, সাংবিধানিক অধিকার করতে হলে চূড়ান্তভাবে খেলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করতে হবে।  

সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন - কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মদ আব্দুল মজিদ ও কেন্দ্রীয় পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক একেএম মাহবুব আলম।  

আরও উপস্থিত ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মুফতি আব্দুল হামিদ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য হাফেজ মাওলানা আফতাব উদ্দিন, সমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক মাওলানা নাসির উদ্দিন, খুলনা জোন পরিচালক ডাক্তার মো. আসাদুল্লাহ, কুষ্টিয়া জোন পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম, বাগেরহাট জেলা সভাপতি মাওলানা আমিরুল ইসলাম, খুলনা জেলা সভাপতি মাওলানা এমদাদুল হক, নড়াইল জেলা সভাপতি মাওলানা আব্দুল হান্নান সরদার, চুয়াডাঙ্গা জেলা সভাপতি মাওলানা মনিরুজ্জামান, ঝিনাইদহ জেলা সভাপতি মাওলানা আবুল হাসান, খুলনা মহানগর সভাপতি মাওলানা আলী আহমদ, যশোর জেলা সভাপতি হাফেজ মাওলানা আব্দুল্লাহ, মেহেরপুর জেলা সভাপতি মুফতি সাদিকুর রহমান ও খুলনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এবং সমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব মাওলানা আব্দুল্লাহ যোবায়ের, মাওলানা শফিকুল ইসলাম ইসলাম, অ্যাড. শহিদুল ইসলাম, হাফেজ সাজ্জাদ হোসেন, জামান বিন রায়হান, মো. আকরামুল ইসলাম, হা. শোয়াইব আহমেদ, শেখ মিজানুর রহমান, ইমদাদুল্লাহ আজমী ডালিম, মাওলানা ফয়জুল্লাহ সিদ্দিকী, মাওলানা সাজ্জাদুল্লাহ রায়হানী, মো. মামুনুর রশীদ, মাওলানা আজিজুর রহমান, মাওলানা মোহাম্মাদুল্লাহ, মাসুম বিল্লাহ প্রমুখ।  

এছাড়াও দলের বিভিন্ন জেলা নেতৃবৃন্দ এবং শীর্ষ উলামায়ে কেরাম বক্তব্য রাখেন।  

সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরীর বায়তুন নূর মসজিদ চত্বর থেকে ডাকবাংলা চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ২১২৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০২৩ 
এমআরএম/এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।