ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

যশোরে হার্ডলাইনে আওয়ামী লীগ, বিএনপিকে হুঁশিয়ারি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩২ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০২৩
যশোরে হার্ডলাইনে আওয়ামী লীগ, বিএনপিকে হুঁশিয়ারি

যশোর: যশোর শহরের টাউন হল মাঠে শনিবার (২৭ মে) আওয়ামী লীগ সমর্থিত সম্মিলিত শ্রমিক ঐক্য পরিষদ ও ভোলাট্যাংক রোডে বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে চরম উত্তেজনা ছড়িয়েছে। একইদিন পাল্টাপাল্টি এই কর্মসূচির উত্তাপের মধ্যেই জেলা আওয়ামী লীগ ও জেলা বিএনপি নেতাদের চ্যালেঞ্চ ছোঁড়া বক্তব্য যেন আগুনে ঘি ঢেলেছে।

এতে শহরবাসীর দৃষ্টি এই দুই কর্মসূচিতে।  

পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির অগের দিন শুক্রবার (২৬ মে) বিকেলে শহরের টাউনহল ময়দানে জেলা আওয়ামী লীগের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতির বক্তব্যে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ইন্ধনে প্রধানমন্ত্রীকে হত্যা হুমকি দিয়েছেন রাজশাহীর বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ। এই বক্তব্যের কারণে চাঁদকে আজীবন জেলখানায় পঁচতে হবে তবে তারেক রহমানকে লন্ডনে ‘মরলেও’ তার মরদেহ বাংলাদেশে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না বলেও উল্লেখ করেন মিলন।

এছাড়াও সমাবেশে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার বলেন, যশোরে বিএনপির সমাবেশে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করলে যুবলীগ, ছাত্রলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ পাঠিয়ে দেব, তারাই ঠাণ্ডা করে দিবে। বিএনপি হুমকি দিয়েছে শনিবার (আজ) নাকি যশোর অচল করে দিবে। যদিও আমি দেশের অন্য জেলার কথা বলতে পারবো না, তবে যশোরে অগ্নিসন্ত্রাস করতে এলে বিএনপিকে ঘরে থাকতে দেব না। বিএনপির তারেক লন্ডন বসে দেখেন, এক রাতের ম্যাসাজে শহরে জনস্রোত হয়েছে। শনিবার খেলা হবে বিএনপির সঙ্গে। কিভাবে তারা সমাবেশ করে দেখা যাবে। শুনলাম বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুখ ইসলাম আলমগীর ভয়ে পালিয়েছে। সে আর যশোরে আসবে না বলেছে।

এর আগে, গত বৃহস্পতিবার প্রেসক্লাব যশোরে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে জেলা বিএনপি। এতে বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও তরিকুল ইসলাম পুত্র অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, আমাদের জনসভা বানচাল করতে সরকারপন্থিরা যে হুমকি ধামকি দিচ্ছে তাতে পূর্ব ঘোষিত সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটবো না আমরা। বাধা বিপত্তি উপেক্ষা করে সব উপজেলা থেকে নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ সমাবেশে যোগ দেব। পরে ওই রাতেই তাদেরকে টাউন হল মাঠের ২শ’-৩শ’ গজ দূরে ভোলাট্যাংক রোডে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়।

শুক্রবার আওয়ামী লীগের সমাবেশে শাহীন চাকলাদার আরও বলেন, আওয়ামী লীগ একটি গণতান্ত্রিক দল। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রকে সম্মান করে। জামায়াত-বিএনপির কাছে ধ্বংস হওয়া গণতন্ত্রে আওয়ামী লীগ প্রাণ প্রতিষ্ঠা করেছে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য রক্ত দিয়েছে। গণতন্ত্রকে পাকাপোক্ত করার জন্য শেখ হাসিনার নেতৃত্বে লড়াই করেছে। আর বিএনপির জন্ম গণতন্ত্রের মাধ্যমে হয়নি। তারা পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে। জোর করে ক্ষমতা দখল করেছে। আমরা যখন রাজপথে নামবো তখন কিন্তু আপনারা রাজপথে জায়গা পাবেন না। কর্মসূচির নামে এই শান্তিপ্রিয় যশোরে আগুন সন্ত্রাস নিয়ে যদি খেলা করেন; তার পরিণাম ভালো হবে না। যশোরের তৃণমূল আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে আগুন সন্ত্রাস রুখে দেওয়া হবে। মনে রাখবেন আওয়ামী লীগ ধরলে ছাড়ে না। ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগকে নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র কাজে আসেনি।

সমাবেশে যশোর-২ আসনের সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) অধ্যাপক ডা. নাছির উদ্দিন বলেন, জামাত-বিএনপি সবসময় ষড়যন্ত্র করে আর এই ষড়যন্ত্র নির্বাচন আসলে বেশি শুরু করে। বঙ্গবন্ধুর কন্যা দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সবসময় এ ষড়যন্ত্র নৎসাত করেছে। তাই আগামী নির্বাচনের সামনে রেখে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমাদের সবাইকে এক থাকতে হবে এবং শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে। এক থেকে সামনের নির্বাচনে নৌকাকে বিজয়ী করতে হবে।

যশোর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম মাহমুদ হাসানে পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও পৌরসভার মেয়র সাজ্জাদ গণি খান পলাশ,  সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহিত কুমার নাথ,  যশোর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মুন্সী মহিউদ্দিন, শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক শেখ আতিকুর বাবু, উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক লুৎফুল কবীর বিজু, কৃষকলীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট মোশারফ হোসেন, মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি লাইজু জামান, সাধারণ সম্পাদক জোৎস্না আরা মিলি, শ্রমিক লীগের সভাপতি সাইফুর রহমান, যুবলীগ নেতা শফিকুল ইসলাম জুয়েল, রওশন ইকবাল শাহী, যুবমহিলা লীগের সভাপতি মুঞ্জুন্নাহার নাজনীন সোনালী ও ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানজীব নওশাদ পল্লব প্রমুখ।

এরআগে, শুক্রবার বিকেলে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কবরে পাঠানোর হুমকির প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে জেলাশহর ছাড়াও আট উপজেলার হাজার হাজার নেতা-কর্মীরা মিছিল সহকারে শহরের টাউনহল ময়দানে সমাবেশস্থলে আসেন। সমাবেশস্থলে তিল ধারণের ঠাঁই মেলেনি। এছাড়াও সমাবেশ শেষে শহরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩০ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০২৩
ইউজি/এসএ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad