ঢাকা, শনিবার, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ মে ২০২৪, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়কসহ ১৩ জন কারাগারে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৯ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০২৩
বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়কসহ ১৩ জন কারাগারে

বরিশাল: সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থীর কর্মীকে পিস্তল ঠেকিয়ে মারধর ও হত্যার হুমকির মামলায় কারাগারে গেছেন বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক এবং তার ১২ জন অনুসারী।

সোমবার (১৫ মে) বিকেলে বরিশালের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আল ফয়সাল তাদের জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন আদালত পরিদর্শক শিশির কুমার পাল।

তিনি বলেন, আদেশ অনুযায়ী ১৩ আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এরমধ্যে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। বাকীদের গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশের সদস্যরা।

কারাগারে পাঠানো মামলার এজাহারভুক্ত আসামিরা হলেন- বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রইজ আহমেদ মান্না, তার ছোট ভাই রিসাদ আহমেদ নাদিম, মেহেদী হাসান সম্পদ, পারভেজ হাওলাদার, শান্ত ইসলাম, মামুন ওরফে কসাই মামুন, মিজানুর রহমান শাওন, রাশেদ হাওলাদার, আল আমিন হাওলাদার, নান্টু সন্যামত, ইমরান হোসেন সজিব, মো. আজিজুল হাকিম ফাহিম, মো. সুমন ওরফে টিয়া সুমন।

এদিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করেছেন বলে জানিয়েছেন আদালত পরিদর্শক শিশির কুমার পাল। তবে আদালত আবেদনের বিষয়ে কোনো সিদ্বান্ত এখনও দেয়নি।

উল্লেখ্য, রোববার (১৪ মে) রাতে বরিশাল নগরের কাউনিয়া এলাকায় সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাতের চার কর্মীকে মারধর করা হয়। এতে আহত হয়ে তিনজন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ পৃথক অভিযান চালিয়ে ১০ জন ও র‌্যাব তিনজনকে আটক করে।

হামলায় গুরুতর আহত নগরের বাজার রোড এলাকার বাসিন্দা মনা আহম্মেদ বাদী হয়ে মহানগর পুলিশের কাউনিয়া থানায় মামলা করেন। মামলা মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক ও নগরের ২ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী রইজ আহম্মেদ মান্নাসহ নামধারী ২১ জন অজ্ঞাতনামা ৪০/৫০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।

জেলহাজতে যাওয়া ব্যতিত মামলার অন্য এজাহারনামীয় আসামিরা হলেন- বরিশাল নগরের বাসিন্দা সোহাগ হোসেন মিঠু, ফয়সাল বিন জাবেদ, মো. সবুজ পালোয়ান, মো. মামুন হাওলাদার, মো. রুবেল, মবিনুল ইসলাম রনি, সুমন হাওলাদার, কিশোর কুমার মিস্ত্রী।

মামলায় বাদী উল্লেখ করেছেন, তিনিসহ মামলার নামধারী ৪ সাক্ষী আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহর (খোকন সেরনিয়াবাত) কর্মী এবং তারা নগরের কাউনিয়া থানাধীন এলাকায় প্রার্থীর সমর্থেন বিভিন্ন প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে আসছে। আর এতেই আসামিরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এরআগে গত ৬ মে মামলার এজাহারনামীয় কয়েকজন আসামি সোহাগ নামে অপর এক কর্মীকে পিস্তল, রামদা, হকস্টিক দেখিয়ে হুমকি দেয়। যে ঘটনায় পরের দিন ৭ মে কাউনিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরিও করেন সোহাগ। আর এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সোমবার (১৪ মে) কাউনিয়া থানাধীন বরিশাল নগরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সামনে বসে বাদী ও সাক্ষীদের ঘিরে ফেলে আসামিরা।

ওইসময় আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে প্রচার-প্রচারণা চালানোর কথা জানতে পেরে মামলার ১ নম্বর আসামি বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রইজ আহম্মেদ মান্নার নির্দেশে তার ছোট ভাই রিসাদ আহম্মেদ নাদিম খুন করার উদ্দেশ্যে বাদীর মাথায় ঠেকায়। পরবর্তীতে পিস্তলের বাট দিয়ে পিটিয়ে মাথায় রক্তাক্ত জখম করে। এছাড়া হকস্টিক রড দিয়ে মামলার অন্যান্য আসামিরা বাদীর সঙ্গে থাকা লোকজনকেও বেধম মারধর করে। পরে নৌকার প্রচারণা চালালে- জানে শেষ করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে আসামিরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এরপর বাদীসহ মামলার ১ ও ২ নম্বর সাক্ষীকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কাউনিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হরিদাস নাগ বলেন, হামলার ঘটনার পর আটকদের মামলার নামধারী হিসেবে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালত সবাইকে জেল হাজতে পাঠিয়েছে।

প্রত্যেককে ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবেদন করা হয়েছে জানিয়ে পরিদর্শক হরিদাস নাগ বলেন, রিমান্ড আবেদনের শুনানীর দিন ধার্য্য হয়নি।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৮ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০২৩
এমএস/এসএ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।