ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

উপ-কমিটির সদস্য বাছাইয়ে সতর্ক আওয়ামী লীগ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২৩
উপ-কমিটির সদস্য বাছাইয়ে সতর্ক আওয়ামী লীগ

ঢাকা: আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটি গঠনের কাজ এগিয়ে চলেছে। দ্রুতই এ কমিটিগুলো দেওয়া হবে বলে দলের নেতারা জানান।

তবে এবার উপ-কমিটির সদস্য করার ক্ষেত্রে সতর্ক হয়ে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে বলেও তারা জানান।

প্রায় প্রত্যেক কমিটির মেয়াদেই কোনো না কোনো উপ-কমিটির সদস্যদের নিয়ে বিতর্ক তৈরি হতে দেখা গেছে। উপ-কমিটির সদস্য, এক সময় ছিলো উপ-কমিটির সহসম্পাদক তাদের কেউ কেউ বিভিন্ন ধরনের বিতর্কিত কাজে জড়িয়ে পড়েছেন যার দায় আওয়ামী লীগ বা সরকারের উপর এসে পড়ে।  

সম্প্রতি ব্যাপক সমালোচনা তৈরি হয় রিজেন্ট শাহেদকে নিয়ে। ২০২০ সালে করোনার সময় দলের আন্তর্জাতিক উপ-কমিটির সদস্য শাহেদ হাসপাতাল ব্যবসায় অনিয়ম এবং চিকিৎসা প্রতারণা ও দুনীতি করায় ব্যাপাক সমালোচনায় পড়তে হয় আওয়ামী লীগ ও সরকারকে। তাকে দল থেকে বহিষ্কারও করা হয়।  এছাড়া এ সময়ে হেলেনা জাহাঙ্গীর নামে আরও একজন উপ-কমিটির বিতর্কিত সদস্যকে বহিষ্কার করা হয়।

এদিকে অভিযোগ রয়েছে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য হওয়ার পর অনেকেই এ পদকে ব্যবহার করে বিভিন্নভাবে সুযোগ সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করে। জেলা, উপজেলা পর্যায় থেকে শুরু করে রাজনীতি, প্রশাসনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে প্রভাব বিস্তার ও সুবিধা আদায় করে থাকে। দলের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির এ সদস্য পদকে অনেকেই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং কেন্দ্রীয় নেতা হিসেবে ব্যবহার করে। এ পরিচয়ে তারা বিভিন্ন জায়গায় প্রভাব খাটিয়ে সুবিধা আদায় করে। আবার অনেক সময় দলের জেলার নেতাদেরও এই উপকমিটির সদস্যদের ছাড় দিয়ে চলতে হয়। কেন্দ্রীয় নেতার প্রভাব খাটিয়ে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন নিয়মের সঙ্গে জড়িয়ে কেউ কেউ জড়িয়ে পড়ে। এ বিষয়গুলোর অভিজ্ঞতা থেকে এবারের উপ-কমিটি গঠনের আগে সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে, বিশেষ করে শাহেদের ঘটনাটিকে মাথায় রেখে। যাকে সদস্য করা হবে তার বিভিন্ন দিক বিবেচনা ও যাচাই-বাছাই করে করা হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।

কেন্দ্রীয় উপ-কমিটিগুলো গঠনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিভাগের সম্পাদকদেরই মূল দায়িত্ব পালন করে থাকে। বর্তমানের আওয়ামী লীগের ১৯টি সম্পাদকীয় বিভাগ রয়েছে। গত বছর ২৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলনের পর ১৮টি বিভাগেরই চেয়ারম্যান, কো চেয়ারম্যান এবং সদস্য সচিব করা হয়েছে। শ্রম বিষয়ক সম্পাদক পদটি শূন্য রয়েছে। পদাধিকার বলে প্রত্যেক বিভাগের সম্পাদক হন সংশ্লিষ্ট উপ-কমিটির সদস্য সচিব।

আওয়ামী লীগের সম্পাদক মণ্ডলীর একাধিক সদস্য জানান, উপ-কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সদস্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। যারা দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে আছেন, ছাত্রলীগ করেছেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতির প্রতি যারা প্রতিশ্রুতিশীল তাদেরই কেন্দ্রীয় উপ-কমিটিতে রাখা হয়। কিন্তু এ উপ-কমিটিতে অনেক সময় সুবিধাবাদী বা সুযোগ সন্ধানি কেউ কেউ ঢুকে পড়ে। এর ফলে সমস্যা তৈরি হয়। আর সুযোগ সন্ধানীরা আসে দলের নেতাদের মাধ্যমেই। উপ-কমিটিতে ঢোকার জন্য তারা দলের প্রভাশালী বা সিনিয়র নেতা ও মন্ত্রীদেরও নানাভাবে ধরে তদবির করান। আর ওই পর্যায় থেকে কারো নাম উপ-কমিটিতে রাখার প্রস্তাব এলে তখন সেটা সম্পাদকরা উপেক্ষা করতে পারেন না। তবে এবার এ বিষয়গুলোও ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস বাংলানিউজকে বলেন, উপ-কমিটি গঠনের কাজ চলছে, দ্রতই এ কাজ শেষ হবে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপ-কমিটি নিয়ে অতীতে কোনো কথা ছিল না, ওঠেনি। যারা আওয়ামী লীগে আছেন, ছাত্রলীগ করেছেন, মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের তারাই উপ-কমিটির সদস্য পদ পাবে। এখানে কোনো বিতর্কিত ব্যক্তির আশ্রয় নেওয়ার সুযোগ নেই।

বাংলাদেশে সময়: ১৭৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২৩
এসকে/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।