ঢাকা: তৃণমূলে সাংগঠনিক তৎপরতা বাড়াতে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার নিদেশ দুই মাসেও বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেননি দলের নেতা-কর্মীরা। এর মধ্যে রয়েছে দেশের প্রতিটি থানায় দলের কার্যালয় স্থাপন করে ফোন ফ্যাক্স বসানো এবং তৃণমূল পর্যায় থেকে মাসিক রিপোর্ট নিশ্চিত করা।
দলীয় সূত্র জানিয়েছে, গত ৩১ জুলাই জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভায় তৃণমূলে সাংগঠনিক তৎপরতা বাড়ানোর নির্দেশ দেন বিএনপি চেয়ারপারসন। কিন্তু ওই নির্দেশ বাস্তবায়নের হার এখন পর্যন্ত চরম হতাশাজনক।
তারা বলেন, ওই নির্দেশ বাস্তবায়ন তো দূরের কথা গত দু’মাসে অনেক কেন্দ্রীয় নেতাই কাজ শুরু করেননি তৃণমূলে।
বিভিন্ন স্তরের নিবেদিতপ্রাণ নেতাদের অভিযোগ, দলীয় প্রধানের নির্দেশের পরও কোনো থানা কার্যালয় স্থাপন বা কোনো কার্যালয়ে ফোন-ফ্যাক্স বসানো হয়নি। কোনো থানা থেকেই সাংগঠনিক তৎপরতার কোনো লিখিত রিপোর্ট জমা পড়েনি কেন্দ্রে। মাঠে নামেননি কেন্দ্রীয় নেতারাও।
মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন তার নির্বাচনী এলাকা মানিকগঞ্জে মুষ্টিমেয় সভা ও নদীভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা যথেষ্ট ছিলো না বলেই মনে করেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা। আর সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অনেক দিন ধরেই দেশের বাইরে।
চেয়ারপাসনের নির্দেশ কেন মানা হচ্ছে না জানতে চাইলে বিএনপি’র স্থায়ী কমিটি সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ‘মাঠ পর্যায়ে কাজ করার জন্য মহাসচিব, যুগ্ম-মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদকদের নিয়ে কমিটি করে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। যতটুকু জানি, তারা অবশ্যই তাদের দায়িত্ব পালন করছেন। তবে এক দিনে সব কিছু করে ফেলা সম্ভব নয়। তাই তারা নির্দেশ মানছেন না তা বলা যাবে না। ’
তিনি আরও বলেন, ‘অধিকাংশ থানা ও জেলায় কার্যালয় আছে। যেসব স্থানে কার্যালয় নেই সেগুলোর ব্যবস্থাও হয়ে যাবে। দলের স্বার্থেই টেলিফোন ও ফ্যাক্সসহ আর সব সুবিধা পর্যায়ক্রমে নিশ্চিত করা হবে। ’
খালেদা জিয়ার নির্দেশের পর কোথাও নতুন কার্যালয়, ফ্যাক্স বা ফোন বসানো হয়েছে কিনা জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির অপর সদস্য সাবেক সেনা প্রধান লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘এখনও কোথাও হয়েছে বলে আমার জানা নেই। একটু সময়তো লাগবেই। দলের মধ্যে জেলা ও থানা পর্যায়ের অনেক কমিটি নিয়ে কোন্দল ও রেষারেষি আছে। এগুলো সমাধানে চেষ্টা চলছে। তবে আমাদের জেলা পর্যায়ে কার্যালয় আছে, যেখানে নেই সেখানে করার চেষ্টা করছি। ’
বিএনপি’র সহ-দপ্তর সম্পাদক আসাদুল করিম শাহিন বাংলানিউজকে বলেন, ‘এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া। নির্দেশ মানা না মানার বিষয় নয়। ম্যাডামের নির্দেশের পর আমরা আরও আরও তৎপর হয়েছি। সব কিছুই হবে। তবে কিছু কিছু স্থানে সমস্যা আছে। গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে আওয়ামী লীগের কারণে কার্যালয় স্থাপন সম্ভব হচ্ছে না। দেশের অনেক স্থানেই এ সমস্যা আছে। ’
প্রসঙ্গত, গত ৩১ জুলাই বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভায় জেলা ও থানা পর্যায়ের ৩৬১ নেতা অংশ নেন। বক্তব্য রাখেন জেলা পর্যায়ের ৬০ জনসহ শতাধিক নেতা। ওই সভায় ২৬টি সাংগঠনিক প্রস্তাব ও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ওই সভাতেই থানায় থানায় কার্যালয় স্থাপন এবং প্রতি কার্যালয়ে ফোন ও ফ্যাক্স সুবিধা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১০