ঢাকা, মঙ্গলবার, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২১ মে ২০২৪, ১২ জিলকদ ১৪৪৫

মুক্তমত

ক্রিকেটে বিশ্বে আমাদের জাতীয়তাবোধ-সাবাশ বাংলাদেশ

হাবীব ইমন, অতিথি লেখক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০১৫
ক্রিকেটে বিশ্বে আমাদের জাতীয়তাবোধ-সাবাশ বাংলাদেশ ছবি : সংগৃহীত

ইতিহাসের পাতায় সংযোজিত হলো ২০১৫ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ভারতের কাছে বাংলাদেশের ১০৯ রানের হার। কিন্তু আমাদের কাছে ইতিহাসটা জায়গা পাবে একটু ভিন্ন আঙ্গিকে।

ইতিপূর্বে আমরা মুলতান টেস্টকে স্থান দিয়েছি। সেদিন পাকিস্তানিরা আমাদের জয়কে ছিনিয়ে নিয়েছিল। আজ আরও ন্যাক্কারজনকভাবে ভারত, যার সঙ্গে আমাদের রাষ্ট্রযন্ত্রের সর্বকালের সু-সম্পর্ক বিদ্যমান তারাও আমাদের জয়টাকে জুয়াড়ি করে কেড়ে নিয়েছে।

এ ম্যাচটিতে ভারত জিততে না পারলে নাকি জুয়াড়ি-রা অনেক টাকার ক্ষতিতে পড়তেন। এ জন্য তারা নোংরামীর আশ্রয় নিয়েছেন। তবে যা হয়েছে, তাতে ক্রিকেট নামক ভদ্র খেলার সৌন্দর্য্য হারালো, ক্রিকেটের সবচেয়ে কলঙ্কিত দিন হয়ে থাকলো বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ।

বাংলাদেশ হেরে গেছে। এ হেরে যাওয়ার মধ্যে লজ্জাকর কিছু নেই। মন খারাপের কিছু নেই। বুক ফুলিয়ে বলতে তো পারছি, ‘সততার কাছে আমরা বিজয়ী হয়েছি’। আমরা হেরে গেছি ষড়যন্ত্র-র কাছে, চক্রান্তের কাছে। আমাদের সমস্ত শক্তি দিয়ে হয়তো আরো ভালো করতে পারতাম। ব্যাপার না। আমি মনে করি যা খেলেছি ভালো খেলেছি। আমাদের খেলোয়াড়দের প্রতি আমাদের অনেক সম্মান থাকলো। আস্থা বেড়ে গেল। অভিনন্দন তাদেরকে। ভালো না খেললেও আমাদের ছেলেদের বরণে এদেশের সমর্থকরা পঁচা ডিম নিয়ে কিংবা কোনো ক্রিকেটারদের বাড়িতে হামলা করতে যায় নি। কারণ একটাই ‘কানা হোক খোড়া হোক’ সে আমাদের সন্তান।

আমরা জয়টাকে উপভোগ করি, তেমনি পরাজয়কে মেনে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ী হই। গত কয়েক বছরে খেলায় আমাদের উন্নতি হয়েছে। আর আমাদের সততার দৃষ্টান্তও অনেক। একটি উদাহরণ দেই, রফিক মুলতান টেস্টে ব্যাটসম্যানের ভুল বোঝাবুঝিতে ক্রিজ ছেড়ে দিয়েছে। তাকে রান আউট না করে সুযোগ করে দিয়েছে ক্রিজে আসতে। এমন নজির বহুত।

ভারতের ব্যাটসম্যান যখন পরিস্কার আউট, পুরো পৃথিবীবাসীকে স্তম্ভিত-বিস্মিত করে দিয়ে আম্পায়ার নো বল ডাকলেন। তাকে একটা অতিরিক্ত রান, অতিরিক্তি বল আর নতুন জীবন দেওয়া হলো। জীবন ফিরে পেয়ে রহিত শর্মা আরও ৪৭ করল ২৫ বলে। আর আমাদের যে ছেলেটা পরপর দুবার সেঞ্চুরি করে সব বড় খেলোয়াড়দের নিয়ে তৈরি সেরা বিশ্ব একাদশে জায়গা পেয়েছে, যে চলেছে তার তৃতীয় সেঞ্চুরির দিকে, তার ৬-কে আম্পায়ার আউট দিলেন। এরপর এটা খেলা থাকে না, নির্লজ্জ প্রহসন হয়ে যায়। ভারত কি নিজের যোগ্যতাতেই বাংলাদেশকে হারাতে পারে না? এ জুচ্ছরির কি কোনো দরকার ছিল?

অনেকে বলেছেন ফুল নিয়ে বিমানবন্দরে যাবেন। খেলোয়াড়দের সংবর্ধিত করবেন। এটা আপেক্ষিক বিষয় হতে পারে, কিন্তু তার মধ্য দিয়ে আমরা কতটা বড় মনের পরিচয় দিতে পেরেছি, তা নির্নয় করা জরুরি। আমরা এখনও সুশৃঙ্খল। শান্তিপ্রিয় আমরা। আজ যদি ভারত হেরে যেতো তবে ওদের খেলোয়াড়দের কী অবস্থা হতো, ধোনিরা কী তাদের দেশে নিরাপদে যাওয়ার চিন্তা করতে পারতো!

এবার বিশ্বকাপ ক্রিকেটে আবেগটা জেগে উঠেছে-এর কৃতিত্ব পুরোপুরি টাইগারদের দিতে হয়। মাঠে মাশরাফিদের চোখ রাঙানি, ছেড়ে কথা বলেনি ত্রাস হয়ে ওঠা নিউজিল্যান্ডকেও। আমরা যে ভাল খেলছি-সেটা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। একটা বিজ্ঞাপন দেখে থাকবেন- বিজ্ঞাপনটির ভাষা ছিল এরকম, শুধু গান জানলেই হয় না, দেখতেও সুন্দর হতে হয়। হ্যাঁ, মনে পড়েছে ‘ফেয়ার অ্যান্ড লাভলী’র রং ফর্সা করার বিজ্ঞাপন এটি। বাংলাদেশ-ভারতের আজকের ম্যাচে জয়ের ক্ষেত্রে মাঠে খেলার চেয়ে পর্দার আড়ালে কলকাঠিই বেশি ক্রিয়াশীল ছিল। এটা বুঝতে খুব বেশি ক্রিকেটীয় জ্ঞান থাকার দরকার নেই। এর মাধ্যমে আম্পায়ারদের নোংরামি, ক্রিকেট নামক ভদ্র খেলার সৌন্দর্য্য হারালো, ক্রিকেটের সবচেয়ে কলঙ্কিত দিন হয়ে থাকলো বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে বাংলাদেশ-ভারত/ইন্ডিয়ার ম্যাচ। এ ম্যাচটা আপাতদৃষ্টিতে শুধু যে বাংলাদেশের ক্ষতি করল বিষয়টা এমন সরলীকরণ করলে অন্যান্য দলও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। পরবর্তী টার্গেট ছোট কিংবা বড় দল হতে পারেন! মিস্টার আকসু আপনারা ক্যাসিনো পাহারা দেন, আর পুরো বিশ্বের চোখের সামনে এত বড় নোংরামি হলো সেটা আপনাদের চোখের সামনে ধরা পড়ে না। এ লজ্জা ক্রিকেটের, এ লজ্জা ক্রিকেটপ্রেমী জনগণের। জাতিসংঘের মতো ক্রিকেট কর্তৃপক্ষ আইসিসিও দুই-একটা ক্ষমতাশালী দেশের তল্পিবাহক হয়ে গেল।

এক্ষেত্রে জাতিসংঘের মহাসচিব হিসেবে মায়ানমারের নাগরিক উথান্ট কিংবা বাংলাদেশের আহম মুস্তফা কামালরা নির্বাচিত হবেন। আর তাতেই আমরা খুশি হব এই বলে, এবার বুঝি কিছু করার পালা আমাদের। অবশ্য আহম মুস্তফা কামাল আইসিসি থেকে পদত্যাগ করবেন বলে বিবৃতি দিয়েছেন। এখন এই পদত্যাগ ভবিষ্যতে কোনো কার্যকর ভূমিকা রাখবে না। পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ছিল মাঠে যখন খেলা চলছিল।

ইংল্যান্ডের সঙ্গে বাংলাদেশের বিজয়, কোয়ার্টার ফাইনালে বাংলাদেশে উঠে আসা, ভারত কিংবা ওই দেশের মানুষের কাছে এটি ভালো লাগছে না। প্রতিনিয়ত তারা মানসিকভাবে আঘাত করার চেষ্টা করেছে। নানান মন্তব্য ছুঁড়ে যাচ্ছিল। কটাক্ষ করে যাচ্ছিল। সেগুলো অধিকাংশই অপমানসূচক। প্রথম শুরুটা করেছে পশ্চিমবঙ্গের নায়ক, যিনি বাংলাদেশের মানুষের কাছে সম্মানিত, প্রসেনজিতের একটি স্ট্যাটাস থেকে শুরু হয় বাংলাদেশকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করার পর্ব। এটি খুব দুঃখজনক। প্রসেনজিৎ বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ প্রযোজনার ছবিতে অভিনয় করেছেন। আরো একটি ছবিতে করার অভিনয় কথা রয়েছে। এ তো কিছুদিন আগে মমতার সঙ্গে তিনি বাংলাদেশে এসেছিলেন। কেন্দ্রিয় শহীদ মিনারে মহান ভাষা সংগ্রামীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। বাংলাদেশের মানুষ তাকে মাথা তুলে নেচেছে। তার বিনিময়ে তিনি তার সততা দেখাতে পারেননি বলে আমি মনে করি। অথবা বাংলাদেশের আতিয়েতা, ভালোবাসা, শ্রদ্ধার যোগ্য তিনি নন!

আনন্দবাজার পত্রিকা, ভারতের কয়েকজন সাম্প্রদায়িক ক্রিকেটার-রা বাংলাদেশকে অবজ্ঞা করা শুরু করছে।
পেপসির নামে এই ম্যাচকে সামনে রেখে একটি বিজ্ঞাপন দেখা গেছে। বিজ্ঞাপনটি অবমাননাকর। ‘মওকা মওকা’ নামের ওই বিজ্ঞাপনে দেখা যায়- একটি ছেলে, যার বুকে লেখা ‘ইন্ডিয়া’, সে ঘরের ভেতর বসে পেপসি পান করছে। এমন সময় তার বাসার কলবেল বেজে ওঠে। দরজা খুলে দেখে বুকে ‘বাংলাদেশ’ লেখা একটি ছেলে দাঁড়িয়ে আছে। ছেলেটির হাতে পূজার ফুল ও প্রসাদ। তার দিকে তাচ্ছিল্যের দৃষ্টিতে তাকিয়ে বুকে ‘ইন্ডিয়া’ লেখা ছেলেটি দেয়ালের দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করে। দেয়ালে একটি বিশ্ব মানচিত্র রয়েছে। সেখানে ভারতের পাশে বাংলাদেশকে দেখাচ্ছে। সেখানে লেখা-‘১৯৭১, India created Bangladesh.’। অর্থাৎ, ১৯৭১ সালে ভারত বাংলাদেশকে সৃষ্টি করেছে। ’ এমনটি দেখার পর বুকে ‘বাংলাদেশ’ লেখা ছেলেটি বুকে ‘ইন্ডিয়া’ লেখা ছেলেটির পায়ে ফুল দিয়ে প্রণাম করে চলে যায়।

এর মানে কি? বাংলাদেশের স্বাধীনতায় ভারতের বিরাট অবদান রয়েছে, এ কথা সত্য। কিন্ত বাংলাদেশতো ভারতের দান নয়। created অবশ্যই নয়। একটা রক্তের গঙ্গায় ভাসতে ভাসতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সূর্যটা উঠেছে। লাখ লাখ মানুষ প্রাণ দিয়েছে। মান দিয়েছে। লড়াই শুরু হয়েছে সেই ১৯৫২ থেকে। তারও আগ থেকে। পেপসির নাম ব্যবহার করে যে বদ এটা বানিয়েছে তারওতো কাণ্ডজ্ঞান থাকার দরকার ছিল।

ভারতের কিছু মানুষের এ চরিত্র আজ হয়তো ক্রিকেট বিশ্বকাপকে উপলক্ষ করে ব্যাপকভাবে প্রকাশিত হয়েছে। ফলাও হয়েছে। তারা সবসময় এ কাজটি করে। সুযোগ পেলে তারা এ কাজটি করতে দ্বিধা রাখে না। বাংলাদেশ ক্রিকেট নিয়ে ঠাট্টা করা, নানাভাবে কৌতুক করা, ভারতীয় ক্রিকেট টিমের কাছে এক সময় রোজকার ব্যাপার ছিল। অনেক হিন্দি সিনেমায় বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমের নাম উল্লেখ করে মজার দৃশ্য বানানো হয়েছে।

তাদের মধ্যে এ অন্ধত্বটা সাংঘাতিক, তারা তা প্রমাণ করছে। এর আগে পশ্চিমবঙ্গের জি-বাংলায় মীরাক্কেল অনুষ্ঠানে বাংলাদেশকে অসম্মান করার প্রবণতা দেখেছি। কেউ কেউ হয়তো এটা তাদের জাতীয়তাবোধ অহংকার বলে প্রশ্রয় দিবেন। কিন্তু আমার মনে হয় তাদের সঙ্গে দ্বন্দ্বটা, পাকিস্তানের সঙ্গে যেমন আমাদের রয়েছে। একবার ভেবে দেখুন তো, ওরা আমাদেরকে কী সম্মান দেবে! যখন বিশ্বকাপে ভারত হারলো, তখন তারা সৌরভ গাঙ্গুলির বাড়িতে হামলা করেছে, নিজের দেশে খেলোয়াড়দের সম্মান দিতে ওদের বড় পরিচয়ের অভাব রয়েছে। ভারতের প্রতি আমাদের বিশ্বাস এইরকম না, যেইরকম বিশ্বাস তারা প্রদর্শন করে।

আসলে ব্যাপারটি হচ্ছে, ভারত বাংলাদেশকে শক্ত প্রতিপক্ষ ভেবেছে। ভেতরে ভেতরে তারা বেশ চাপ নিচ্ছে। বাংলাদেশকে তারা আতঙ্ক ভাবছে। বিষয়টি ভাবলে শিহরিত হই। খেলার প্রথম অবস্থা যখন শুরু হলো, কলকাঠি নাড়া শুরু করলো, হুমম, ভারতীয়দের ভীতি এক্কেবারে অমূলক ছিল না, আগামী দিনে বাংলাদেশ জিতবে এবং বিশ্বকাপ নেবে। এইটা ভারত বুঝতে পারছে। কিন্তু আমাদের খেলোয়াড়দের এই আত্মতুষ্টিতে ভোগা যাবে না, তাদেরকে অগ্রসর হতে হবে।

আমি বলবো না, আমাদের দেশের জনগণের ভারত বিদ্বেষ নেই, বাগযুদ্ধে আমরাও লিপ্ত হইনি। কিন্তু প্রথম আঘাতটা তো ওদের কাছ থেকে এসেছে। আমরা এতোটা আবেগপ্রবণ, কিছুদিনের মধ্যে আমরা এইসব ভুলে যাবো। পুষিয়ে রাখবো না।  

ভারত আমাদের বন্ধুপ্রতীম দেশ। ঐতিহাসিকভাবেই ভারত আমাদের মিত্র হবার কথা। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় এদেশটি আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল। আমাদের এক কোটি শরণার্থীকে তারা সাহায্য করেছিল। এর জন্য আমরা ভারতের কাছে কৃতজ্ঞ। সঙ্গতকারণে ভারতের প্রতি আমাদের ভালোবাসা রয়েছে। দুর্বলতা আমাদের রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিদের আমরা আপন ভাবি। তাদের কয়েকজনের সঙ্গে আমার বেশ ভালো সম্পর্ক রয়েছে, আমাদের যাতায়াত রয়েছে। সবসময় দেখেছি বাংলাদেশ সম্পর্কে তাদের ধারণা, সম্মান অনেক উঁচুতে, আমাদের প্রতি তারা অনেক আন্তরিক। তাদের প্রতি আমরা শ্রদ্ধা রাখি।

দ্বিজাতিত্বত্তের ভিত্তিতে ভারত-পাকিস্তান ভাগ হয়েছে। ব্রিটিশ সরকার থেকে ভারত-পাকিস্তান ভিক্ষা চেয়ে, দেন-দরবার করে স্বাধীন রাষ্ট্র হয়েছে। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের পেছনে আমাদের সূর্যসেন, প্রীতিলতার অবদান কম নয়। আমরা ভিক্ষা চাইনি। দয়া চাইনি। মরণপণ যুদ্ধ করে আমরা স্বাধীন হয়েছি। একটি ভাষার পতাকাতলে আমরা সমবেত হয়েছি। বাংলা ভাষা। মোদের গরব, মোদের আশা-আমরি বাংলা ভাষা। পশ্চিমবঙ্গেও একদিন এ বাংলাভাষা ছিল। এখনও আছে। তবে ছিটেফোঁটা। সেখানে বাংলা ভাষা অনুপস্থিতির মাত্রা বাড়ছে। ক্রমশঃ ওখানে খুব একটা বাঙালি জাতীয়তাবোধ, বাঙালি সংস্কৃতি কোনোটি নেই।

আমাদের স্বাধীনতার একটি মূল্য রয়েছে। যেন-তেনোভাবে পাওয়া নয়। অসংখ্য মানুষের রক্তের দাম আছে। ছোট দেশ বলে আমরা সার্বভৌমত্ব হারাইনি। কখনো হারাবো না, আমরা লড়াই করবো। আমরা লড়াই করতে জানি, তা কী নতুন করে বলতে হবে! ভিক্ষা চেয়ে, দয়া নিয়ে জয়ী হবো না। ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে মাথা ঠাণ্ডা রেখে সমন্বিত প্রচেষ্টায় ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং ঠিক মতো খেললে ভারত কুপোঘাত হতোই, কোনো সন্দেহ নেই। আমাদের হেরে যাওয়াটা গৌরবের। আমরা দেখিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছি, আমরা কতটা সুশৃঙ্খল, মনের দিক থেকে কত বড়, ক্রমাগত যাত্রায় আত্মশক্তিতে বলিয়ান হয়ে উঠছি আমরা।

ধন্যবাদ বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের বীর যোদ্ধাদের, বাংলাদেশের জনগণকে, যারা মাঠের বাইরে এক একজন যোদ্ধায় পরিণত হয়েছেন। কিছু ইতর শ্রেণীর সাম্প্রদায়িক মন্তব্য ছাড়া এইটা খুব পরিস্কার দল-মত-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আমরা সবাই বাঙালি, বাংলাদেশি। আর কিছু না হোক এ জাতীয়তাবোধ আমরা দেখাতে পেরেছি। আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি, কোটি কণ্ঠে আওয়াজ তুলেছি, ভালোবাসি লাল সবুজে আঁকা বাংলাদেশকে।

সাবাশ বাংলাদেশ টিম, আমরা গর্বিত তোমাদের জন্য।

হাবীব ইমন: কবি, কলামলেখক, রাজনৈতিক কর্মী
[email protected]

বাংলাদেশ সময়: ১২৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।