ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

আরও

বড় মসজিদেই ইতিকাফ করেন প্রায় ৫ শতাধিক মুসল্লি 

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩১৮ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০১৯
বড় মসজিদেই ইতিকাফ করেন প্রায় ৫ শতাধিক মুসল্লি  ময়মনসিংহ বড় মসজিদ। ছবি: বাংলানিউজ

ময়মনসিংহ: পবিত্র মাহে রমজানের শেষ ১০ দিনের গুরুত্বপূর্ণ আমল ইতিকাফ। ইতিকাফের অর্থ অবস্থান করা, নিজেকে আবদ্ধ রাখা। ইতিকাফের নিয়তে নিজেকে নির্দিষ্ট জায়গায় নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত আবদ্ধ করাই বিশেষ এ ইবাদতের উদ্দেশ্য। ইতিকাফকারীকে বলা হয় ‘মুতাকিফ’।

ময়মনসিংহের শীর্ষ আলেম মাওলানা শাইখ আব্দুল হকের মতে- ময়মনসিংহে ইতেকাফকারীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। ২৮ বছর আগে ময়মনসিংহ বড় মসজিদে তিনি যখন ইতিকাফ শুরু করেন তখন সংখ্যাটা ছিলো সাকুল্যে আটজন কী দশজন।

বাংলানিউজের সঙ্গে এক আলাপে তিনি এ কথা জানান।

কিন্তু গত বছরও প্রায় ৫ শতাধিক মুসল্লি এখানে ইতিকাফ করেছেন। যাদের অনেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসেছেন। চলতি রমজানে এ সংখ্যাটা বাড়তে পারে।

একটি মহল্লায় একজনও যদি ইতিকাফ না করে তবে সবাই গুনাহগার হবে। আবার একজন করলেও সবাই গুনাহর হাত থেকে রক্ষা পাবেন।

মাওলানা আব্দুল হক ময়মনসিংহ বড় মসজিদের খতিব। দীর্ঘ ২৮ বছর যাবত তিনি ময়মনসিংহ বড় মসজিদেই ইতিকাফ করছেন। আর ব্যক্তিগতভাবে তাঁর ইতিকাফের বর্তমান বয়স ৪৫ বছর।

বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে মাওলানা আব্দুল হক বলেন, ইতিকাফ আল্লাহর নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর প্রিয় সুন্নত। রোজা ফরজ হবার পর থেকেই হযরত মুহাম্মদ (সা:) ইতিকাফ করতেন।

আল্লামা আব্দুল হক স্মরণ করেন, সেই শৈশবকাল থেকেই তিনি ইতিকাফ করেন। পার্থিব সব চিন্তা ভাবনা ও বস্তুবাদ থেকে মনকে গুটিয়ে এনে আল্লাহর দরবারে পড়ে থেকে ইতিকাফ করা সুন্নত।  

তিনি বলেন, ২০ রমজানের সূর্য অস্ত যাওয়ার আগে ইতিকাফের নিয়তে মসজিদে প্রবেশ করতে হয়। আর ঈদের চাঁদ উঠলে ইতিকাফকারী মসজিদ থেকে বের হতে পারবে। তবে ঈদের নামাজ আদায় করে বের হওয়াই উত্তম।  

ময়মনসিংহের ঐতিহ্যবাহী বড় মসজিদের এ খতিব বলেন, ইতিকাফের বড় উদ্দেশ্য লাইলাতুল কদরের অনুসন্ধান। যিনি ইতিকাফ করবেন তাঁর সওয়াব হতেই থাকবে।  

যিনি ইতিকাফ করবেন সেই ব্যক্তি লাইলাতুল কদর অবশ্যই পাবেন। ইতিকাফের নিয়ত করলে লাইলাতুল কদরের ফজিলত পাওয়া যাবে।  

এ অঞ্চলের প্রখ্যাত এ আলেম আরো বলেন, কেউ যদি ১০ দিন ইতিকাফ করেন তবে মহান আল্লাহপাক তাঁর অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেন। কেউ ইতিকাফ করলে ওই পাড়া ও মহল্লার সবাই গুনাহ থেকে মাফ পেয়ে যায়।

ইতিকাফ করা অবস্থায় রোজা, নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত ও জিকির করতে হয়। প্রত্যেক মুমিন মুসলমানের উচিত ইতিকাফ করা।

আল্লামা আব্দুল হক প্রতিটি রমজানে ইতিকাফ করে আসা একজন আলেম। তিনি বলেন, আল্লাহর সান্নিধ্য লাভ প্রতিটি মুসলমানের অভীষ্ট লক্ষ্য।

ত্যাগ ও সংযমের মাস পবিত্র রমজান মানুষের জন্য সেই ফজিলতময় যা তার সামনে বিশাল এক সুযোগ। রমজানের শেষ ১০ দিন ইতিকাফ করা সুন্নতে মুয়াক্কাদা আলাল কিফায়া।

সবশেষে তিনি বলেন, যদি কেউ শুধুমাত্র রাতেও মসজিদে ইতিকাফ করে তবে সেও অনেক ফজিলত পাবে। আর সেটা হবে নফল ইতিকাফ। একদিন ইতিকাফ করলেও দোজখ থেকে এক খন্দক দূরে চলে যাবে। দশ দিনের কম ইতিকাফ করলে সেটি নফল ইতিকাফ হিসেবে বিবেচিত হবে। এজন্য সম্পূর্ণ ইতিকাফ করতে না পারলেও নফল ইতিকাফ করাও গুরুত্বপূর্ণ।

রমজানবিষয়ক যেকোনো লেখা আপনিও দিতে পারেন। লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৮ ঘন্টা, মে ২৬, ২০১৯
এমএএএম/এমএমইউ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আরও এর সর্বশেষ