ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

বাংলানিউজ টি-২০ বিশ্বকাপ-২০২১

রোজায় নারীদের জরুরি মাসাআলা

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৪ ঘণ্টা, মে ২১, ২০১৯
রোজায় নারীদের জরুরি মাসাআলা ছবি: সংগৃহীত

নারী-পুরুষ সবার জন্য রোজার বিধান। তবে ইসলাম ব্যক্তির সুস্থতা-অসুস্থতাকে গুরুত্ব দিয়েছে। সে হিসেবে রোজা পালনে নিয়মসাপেক্ষে সুযোগ-সুবিধাও রেখেছে। রমজানে রোজা পালনে নারীদের বিভিন্ন রকমের নিয়ম-বিধান রয়েছে। সে সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচানা।

♦ রোজা রাখার পর দিনের বেলা পিরিয়ড শুরু হলে নারীর রোজা ভেঙে যায়। এমন নারীর জন্য খাওয়াদাওয়া করা বৈধ।

তবে ওই দিন সম্ভব হলে রোজাদারদের সাদৃশ্য অবলম্বন করে পানাহার থেকে বিরত থাকবে। (ফাতাওয়া হক্কানিয়া : ৪/১৯০)

♦ কোনো নারীর যদি ফজরের আগেই পিরিয়ড শুরু হয়ে যায়, ওই নারীর জন্য দিনের বেলা খাওয়াদাওয়া করা বৈধ। তবে গোপনে পানাহার করা উচিত। (আহসানুল ফাতাওয়া : ৪/৪২৮)

♦ পিরিয়ডের কারণে রোজা না রেখে দিন শুরু করার পর পিরিয়ড বন্ধ হলে দিনের বাকি অংশ রোজাদারদের সাদৃশ্য অবলম্বন করে পানাহার বর্জন করবে। কিন্তু এ দিনের রোজাও পরে কাজা করে নিতে হবে। (আহসানুল ফাতাওয়া : ৪/৪২৮), বাহুরুর রায়েক : ২/২৯১)

♦ রোজা অবস্থায় শিশুকে দুধ পান করালে রোজা ভঙ্গ হয় না। (ফাতাওয়া দারুল উলুম : ৬/৪০৮)

♦ রমজানের রাতে গোসল ফরজ হলে গোসল না করেও দিনে রোজা রাখা বৈধ। গোসল না করায় রোজার ক্ষতি হবে না। তবে ফরজ গোসলে বিলম্ব করা অনুচিত।

♦ নারী যদি নিজের অভ্যাস অনুযায়ী বুঝতে পারে যে আগামীকাল তার মাসিক শুরু হবে, তবু সে রোজা ভাঙবে না যতক্ষণ না সে তার পিরিয়ডের রক্ত দেখতে পায়। (আপকে মাসায়েল : খ. ৩, পৃ. ২৭৮)

♦ ঋতুবতী নারীর জন্য উত্তম হলো স্বাভাবিক অবস্থায় থাকা এবং আল্লাহর ফয়সালায় সন্তুষ্ট থাকা। ওষুধ ব্যবহার করে রক্ত বন্ধ রাখার প্রয়োজন নেই। কেননা ইসলামের মহীয়সী সব নারী এমনটিই করেছেন। তবে যদি ওষুধ দিয়ে রক্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়, তাহলে রোজা রাখা যাবে এবং রোজা হয়ে যাবে। (আপকে মাসায়েল : খণ্ড ৩, পৃ. ২০৭)

♦ অনেক নারী রোজা পালনের সুবিধার্থে ওষুধ খেয়ে স্রাব বন্ধ রাখেন। এতে যদি শারীরিক ক্ষতি না হয়, তাহলে কোনো অসুবিধা নেই।

♦ নেফাজওয়ালা (সন্তান প্রসবকারী) নারী যদি ৪০ দিন হওয়ার আগেই পবিত্র হয়ে যায়, তাহলে রোজা রাখবে। তবে নামাজের জন্য গোসল করে নেবে। আর যদি ৪০ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও রক্ত চলমান থাকে, তাহলে সে রোজা রাখবে ও গোসল করে নেবে। কেননা তার রক্ত ইস্তেহাজা (রোগ) হিসেবে গণ্য করা হবে। (বেহেশতি জেওর : পৃষ্ঠা : ১৬০, শরহে বেকায়া : খ. ১, পৃ. ১২০)

♦ অভিজ্ঞ ডাক্তার যদি অন্তঃসত্ত্বা নারীকে রোজা পালনে নিষেধ করে থাকেন, তাহলে ওই নারীর জন্য রোজা না রাখার অবকাশ আছে। সন্তান প্রসবের পর সুস্থতা লাভ করলে এই রোজা কাজা করে নিতে হবে। এর জন্য কাফফারা আদায় করতে হবে না।

♦ নারীদের অপবিত্র থাকার সময়ে নামাজ পড়া, রোজা রাখা, কোরআন তিলাওয়াত ও মসজিদে প্রবেশ নিষিদ্ধ, যেভাবে তা অপবিত্র পুরুষের জন্য নিষিদ্ধ। কিন্তু তারা বিভিন্ন দোয়া-দরুদ, তাসবিহ-তাহলিল ও জিকির-আজকার করতে পারবেন। এমনকি দোয়া হিসেবে আয়াতুল কুরসি ও কোরআনের বিভিন্ন আয়াত পাঠ করা যাবে। এতে সাওয়াব পাওয়া যাবে, নিরাপত্তাও লাভ হবে।

♦ পারিবারিক ও সামাজিক কারণে আমাদের দেশের নারীরা রমজানে কঠোর পরিশ্রম করে থাকেন। বিশেষত সাহরি ও ইফতারের প্রস্তুতির ভার তাঁদেরই বহন করতে হয়। এ ক্ষেত্রে পুরুষের উচিত নারীদের যথাসম্ভব সহায়তা করা। কেননা পরিবার নারী-পুরুষ সবার। নারীরাও রক্ত-মাংসের মানুষ। তাঁরাও রোজা রাখেন। কাজেই তাঁদের ওপর অতিরিক্ত কাজের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া অনুচিত। মহানবী (সা.) গৃহস্থালি কাজে তাঁর স্ত্রীদের সাহায্য করতেন। তাঁর জীবন ঈমানদারদের জন্য উত্তম আদর্শ।

রমজানবিষয়ক যেকোনো লেখা আপনিও দিতে পারেন। লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৩ ঘন্টা, মে ২১, ২০১৯
এমএমইউ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বাংলানিউজ টি-২০ বিশ্বকাপ-২০২১ এর সর্বশেষ