(১) করাঘাতকারী, (২) করাঘাতকারী কি? (৩) করাঘাতকারী সম্পর্কে আপনি কি জানেন? (৪) যেদিন মানুষ হবে বিক্ষিপ্ত পতঙ্গের মতো (৫) এবং পর্বতমালা হবে ধুনিত রঙিন পশমের মতো। (৬) অতএব যার পাল্লা ভারী হবে, (৭) সে সুখী জীবন যাপন করবে (৮) আর যার পাল্লা হালকা হবে, (৯) তার ঠিকানা হবে হাবিয়া।
শানে নুজুল
এ সুরায় আমলের ওজন ও তার হালকা এবং ভারী হওয়ার প্রেক্ষিতে জাহান্নাম অথবা জান্নাত লাভের বিষয় আলোচিত হয়েছে। আমলের ওজন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা সুরা আ’রাফের শুরুতে করা হয়েছে। সেখানে দেখে নেওয়া দরকার। সেখানে এ কথাও লেখা হয়েছে যে, বিভিন্ন হাদিস ও আয়াতের মধ্যে সমন্বয় সাধণ করে জানা যায়, আমলের ওজন সম্ভবত দুবার হবে।
একবার ওজন করে মুমিন ও কাফেরের মধ্যে পার্থক বিধান করা হবে। মুমিনের পাল্লা ভারী ও কাফেরের পাল্লা হালকা হবে। এরপর মুমিনদের মধ্যে সৎকর্ম ও অসৎকর্মের পার্থক্য বিধানের জন্যে হবে দ্বিতীয় ওজন।
এ সুরায় বাহ্যত প্রথম ওজন বোঝানো হয়েছে, যাতে প্রত্যেক মুমিনের পাল্লা ঈমানের অভাবে হালকা হবে, সে যদিও কিছু সৎকর্ম করে থাকে। তাফসিরে মাযহারিতে আছে, কোরআন পাকে সাধারণভাবে কাফের ও সৎকর্মপরায়ণ মুমিনের শাস্তি ও প্রতিদান বর্ণনা করা হয়েছে। মুমিনের মধ্যে যারা সৎ ও অসৎ মিশ্র কর্ম করে, কোরআন পাকে সাধারণভাবে তাদের দান প্রতিদানের কোনো উল্লেখ করা হয়নি।
কেয়ামতে মানুষের আমল ওজন করা হবে— গণনা হবে না। আমলের ওজন এখলাস তথা আন্তরিকতা ও সুন্নতের সঙ্গে সামঞ্জস্যের কারণে বেড়ে যায়। যার আমল আন্তরিকতাপূর্ণ ও সুন্নতের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, সংখ্যায় কম হলেও তার আমলের ওজন বেশি হবে।
পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি সংখ্যায় অর্থাৎ নামাজ, রোযা,সদকা-খয়রাত, হজ-ওমরা অনেক করে,কিন্তু আন্তরিকতা ও সুন্নতের সঙ্গে সামঞ্জস্য কম, তার আমলের ওজন কম হবে।
[তাফসিরে মাআরেফুল কোরআন;হযরত মাওলানা মুফতি মুহাম্মদ শাফী (রহ.)]
সম্পাদনায়:
মাওলানা সেলিম হোসাইন আজাদী
বিশিষ্ট মুফাসসিরে কুরআন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব
চেয়ারম্যান: বাংলাদেশ মুফাসসির সোসাইটি
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩০ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০১৮
এমএ/