মৌসুমী, বাবুগঞ্জ, বরিশাল
প্রশ্ন: সেহেরি খাওয়ার সঠিক নিয়ম কী?
উত্তর: রোজার জন্য সেহেরি খাওয়া সুন্নত ও সওয়াবের কাজ। বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তোমরা সেহেরি খাবে, এতে অনেক বরকত আছে।
১. পেট পুরে সেহেরি খাওয়া জরুরি নয়, দুই বা এক লোকমা অথবা খেজুরের টুকরা কিংবা দু’চার দানা খেলেও যথেষ্ট।
২. সুবহে সাদিকের আগে রাতের শেষভাগে সেহেরি খাওয়া মুস্তাহাব।
৩. যদি সেহেরি খেতে বিলম্ব হয়ে যায় এবং প্রবল ধারণা হয় যে, ভোর হওয়ার পর কিছু পানাহার করেছেন, তবে এ অবস্থায় সন্ধ্যা পর্যন্ত পানাহার ত্যাগ করা এবং পরে ওই রোজা কাজা করা ওয়াজিব। (সূত্র: বেহেশতি জেওর: খ- ৩)
সাহানাজ আক্তার, আগারগাঁও, ঢাকা
প্রশ্ন: সুবহে সাদিক পর্যন্ত কি পানাহার করা যাবে?
উত্তর: ইসলামী শরিয়ার আলোকে রোজা শুরু হয় সুবহে সাদিক থেকে। তাই সুবহে সাদিক উদয় না হওয়া পর্যন্ত পানাহারে কোনো আপত্তি নেই। সব কিছুই তখন বৈধ। অনেকে রাতের শুরুতে বা মাঝামাঝি সময়ে সেহরি খেয়ে শুয়ে পড়েন এবং মনে করেন, রোজার নিয়ত করার পর বা সেহরি খেয়ে ফেলার পর আর কিছু পানাহার করা যাবে না। এমন ধারণা সঠিক নয়। সুবহে সাদিক উদয় না হওয়া পর্যন্ত পানাহার করতে কোনো দোষ নেই। তা নিয়ত করা হোক বা না হোক।
(সূত্র: বেহেশতি জেওর, খ- ৩, পৃষ্ঠা ৩)
সিমা আক্তার, বাবুগঞ্জ, বরিশাল
প্রশ্ন: সেহরির পর ঢেকুর আসলে কি রোজা ভেঙে যাবে?
উত্তর: সেহরির সময় কোনো ব্যক্তি এতো পরিমাণ খেয়েছেন যে, সূর্যোদয়ের পর তার মধ্যে ঢেকুর আসতে শুরু করে। সঙ্গে পানিও বের হয়। এর মাধ্যমে রোজার কোনো ক্ষতি হবে না।
(সূত্র : ফাতাওয়া রশিদিয়া, পৃষ্ঠা ৩৭১)
আসমা আক্তার পল্টন , ঢাকা
প্রশ্ন: সেহরি না খেয়ে রোজা রাখলে কি রোজা হবে?
উত্তর: সেহরি খাওয়া সুন্নত, এটি রোজার অংশ নয়। সেহরি না খেলেও রোজা হয়ে যায়।
(মুসনাদে আহমদ ২/৩৭৭; ইমদাদুল ফাত্তাহ ৬৯৭)
আর রমজান মাসে কোনো কারণে রাতে নিয়ত করতে না পারলে এবং সুবহে সাদিকের পর থেকে রোজা ভঙের কোনো কারণ পাওয়া না গেলে দুপুরের আগ (অর্থাৎ সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্তের মধ্যবর্তী সময়ের আগ) পর্যন্ত নিয়ত করার সুযোগ থাকে। তবে রাতে নিয়ত করে নেওয়াই উত্তম।
(শরহু মুখতাসারিত তহাবি ২/৪০৪; কিতাবুল আছার ২/২২৬; ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া ১/১৯৬; বাদায়েউস সানায়ে ২/২২৯)
পলাশ, পাবনা।
প্রশ্ন: কোন অজুহাতে খানাপিনা করা বা স্ত্রী সহবাসে লিপ্ত হলে রোজার বিধান কি হবে?
উত্তর: সুবহে সাদিক হয়ে গেছে জানা সত্ত্বেও আযান শোনা যায়নি বা এখনো ভালোভাবে আলো ছড়ায়নি এ ধরনের ভিত্তিহীন অজুহাতে খানাপিনা করা বা স্ত্রী সহবাসে লিপ্ত হওয়া হারাম। এতে রোজা সহিহ হবে না। আর যদি রোজার নিয়ত করার পর কেউ এমনটি করে থাকেন তাহলে কাযা-কাফফারা দু’টোই জরুরি হবে।
(সূরা বাকারা: ১৮৭; মাআরিফুল কুরআন ১/৪৫৪-৪৫৫)
জবাব প্রদানে
মাওলানা সেলিম হোসাইন আজাদী
লেখক: বিশিষ্ট মুফাস্সিরে কুরআন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব
চেয়ারম্যান : বাংলাদেশ মুফাস্সির সোসাইটি
বাংলাদেশ সময়: ১০৪০ ঘণ্টা, মে ১৯, ২০১৮
জেডএস