ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

অফবিট

শঙ্কর প্রজননে মানুষ পেয়েছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও

অফবিট ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৫৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৬
শঙ্কর প্রজননে মানুষ পেয়েছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও শঙ্কর প্রজননের বিবর্তনে শক্তিশালী হয়েছে আধুনিক মানুষ, ছবি: সংগৃহীত

শঙ্কর প্রজনন ঘটিয়ে যে পরিবর্তনগুলো আমরা অর্জন করেছিলাম, সেগুলো আমাদের জীবনের গতি বাড়িয়েছে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।

শঙ্কর প্রজনন ঘটিয়ে যে পরিবর্তনগুলো আমরা অর্জন করেছিলাম, সেগুলো আমাদের জীবনের গতি বাড়িয়েছে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।

গত পাঁচ বছর ধরে আমাদের প্রজাতি আধুনিক মানুষ হোমো স্যাপিয়েন্স এবং আমাদের প্রথম পূর্বপুরুষদের মধ্যে পৃথক এ শঙ্কর প্রজননের প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে।

এর প্রথম আবিষ্কার রোমানিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পেস্তেরা কিউ ওয়েসে গুহায় পাওয়া ওয়েসে ২ নামক ৪০ হাজার বছর আগের এক প্রজাতির মানুষের জীবাশ্ম। ওয়েসেরা জন্ম নেয় স্যাপিয়েন্স ও নিয়ান্ডারথালের মিলনের ফসল। ওয়েসেদের ডিএনএ’র ৬ থেকে ৯ শতাংশ ছিল নিয়ান্ডারথালদের কাছ থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া।

বিবর্তনের ধারায় মানবপ্রজাতির ক্রমবিকাশ, ছবি: সংগৃহীতমার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বার্কলের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার বিবর্তনীয় জেনেটিক বিশেষজ্ঞ রাসমান নিলসেন বলেন, ‘যখন আধুনিক মানুষেরা আফ্রিকা ত্যাগ করে, তখন অন্য প্রজাতিতে একীভূত হয়। সুতরাং আমাদেরকে নতুন পরিবেশে দ্রুত ও অনেক বেশি মানিয়ে নিতে সহায়তা করে’।

গবেষকরা আরও বলছেন, আমাদের পূর্বপুরুষেরা অন্যান্য প্রজাতির সঙ্গে সাক্ষাতের সময় জ্ঞান, নতুন অভ্যাস এবং আচরণের পাশাপাশি জিনও ভাগাভাগি করেছে। অন্যান্য প্রজাতিও আমাদের উন্নয়নের উদ্দীপনায় সাহায্য করেছে।

আমাদের কিছু সৃজনশীলতাও বিভিন্ন দলের মধ্যে মিথস্ক্রিয়ায় অর্জিত।

আবার, ডিএনএ’র প্রমাণ ইঙ্গিত দেয় যে, আমরা নিয়ান্ডারথালদের থেকে নির্দিষ্ট রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। আমরা যখন আফ্রিকা থেকে প্রথম ইউরোপে আসি, আমাদের অনাক্রম্য অপরিচিত স্থানীয় রোগের মোকাবেলায় করতে লড়াই বরতে হয়। কিন্তু যখনই নিয়ান্ডারথালের সঙ্গে ইন্টারব্রিডে বংশধর জন্ম নিলো, তখন তা প্রতিরোধে সক্ষম হলাম আমরা।

একই ঘটনা ঘটেছে যখন ইউরোপীয়রা আমেরিকায় অভিবাসন শুরু করে। যেসব রোগ আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জন্য বিপর্যয়কর ছিল, ইউরোপীয় ও উত্তর আমেরিকানদের মধ্যে প্রজননের পর সেগুলো প্রতিরোধের ক্ষমতার সৃষ্টি হলো উভয়েরই শরীরে।

নিলসেন বলেন, ‘নিয়ান্ডারথাল ও আধুনিক মানুষের মধ্যে একাধিক শঙ্করীকরণই আমাদের বিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে’।

দক্ষিণ আফ্রিকার কেপ টাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানী রেবেকা অ্যাকারম্যান যুক্তি দেন যে, ‘আমরা এই প্রাচীন মানুষদের সঙ্গে মিলে সাংস্কৃতিক সাফল্যও পেয়েছি। সাংস্কৃতিক এ মিথস্ক্রিয়া এবং প্রতিষ্ঠান ও অন্য প্রজাতির সঙ্গে মিশ্রণই আমাদের সুসংহত সংস্কৃতি গড়ে তুলতে সাহায্য করেছে, তা আসলে শঙ্করায়নেরই ফল’।

‘অনেক মানব প্রজাতি বিবর্তিত হলেও আজ আমরা হোমো স্যাপিয়েন্সরাই কেবল টিকে আছি। আমাদের জটিল সংস্কৃতিই পরিষ্কারভাবে অন্যান্য প্রজাতির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় আমাদের ক্ষমতাকে সুসংহত করেছে’।

ধীরে ধীরে নতুন সংস্কৃতি অর্জন নেতৃত্বের আসনে বসিয়েছে আমাদের প্রজাতিকে, ছবি: সংগৃহীতঅ্যাকারম্যান বলেন, ‘আমরা শঙ্করায়নে পরিষ্কারভাবে নতুনত্ব ও নেতৃত্ব অর্জন ছাড়াও ভালোভাবে বিবর্তিত হতে পেরেছি’।

যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির শিমোন ব্রুকস বলেন, যে সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যগুলোর কারণে আমাদের প্রজাতি সেরা মানুষে পরিণত হয়েছে, শঙ্করীকরণ সেগুলো অর্জনের প্রক্রিয়ায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে’।

বাংলাদেশ সময়: ১১৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৬
এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।