ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

অফবিট

রোবট চালাবে প্লেন-হেলিকপ্টার!

অফবিট ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫১৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১, ২০১৬
রোবট চালাবে প্লেন-হেলিকপ্টার!

একদিন ছোটবড় প্লেন ও হেলিকপ্টারের ককপিটে কোনো মানুষ পাইলট থাকবেন না, রোবটরাই চালাবে সেগুলো। যাত্রী ও পণ্যবাহী প্লেন ছাড়াও ব্যক্তিগত উড়োজাহাজ ওড়াতেও যে কেউ রোবট পাইলট নিয়োগ দিতে পারবেন।

 

এ ভ্রমণকে একটি স্বয়ংক্রিয় গাড়ি চালনার সমতুল্য বলে বিবেচনা করতে বলছে পাইলটবিহীন উড়োজাহাজ চালানোর পরিচালনাকারী বেসরকারি ফ্লাইট বিজ্ঞান সংস্থা অরোরা।  

ডিফেন্স অ্যাডভান্সড রিসার্চ প্রজেক্টস এজেন্সি’র  অর্থায়নে এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সম্প্রতি ছোট্ট একটি পরীক্ষামূলক উড্ডয়নযাত্রাও সম্পন্ন করেছে অরোরা।  

ছোট বিমানবন্দর ম্যানাসাস থেকে মরুযাত্রী দলকে নিয়ে ওড়ে ফ্লাইটটি। ককপিটের ডান আসনে বসে একটি রোবট পাইলট প্লেন চালাচ্ছিল। বাম আসনে বসে একজন মানুষ পাইলট অবশ্য একটি ইলেকট্রনিক ট্যাবলেট ব্যবহার করে তার বোবা সহকর্মীকে কমান্ড করছিলেন।  

চাপড় মেরে ও গড়িয়ে গড়িয়ে লম্বা টিউব ও সুদৃঢ় রডের শ্বাসনালীর সাহায্যে রোবট পাইলটের সেই প্লেনটির সিঙ্গেল ইঞ্জিন পরিচালনার দৃশ্য অবাক করেছে যাত্রীদের।

পদ্ধতিটি লেবার ইন ককপিট অটোমেশন সিস্টেম বা অ্যালিয়াস নামে পরিচিত।  

অরোরা ও  ডিফেন্স অ্যাডভান্সড রিসার্চ প্রজেক্টস এজেন্সি’র রয়েছে সামরিক বিমান চালানো প্রশিক্ষিত পাইলট সংকট। তাই উভয় প্রতিষ্ঠানের প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা বলছেন, তারা নিরাপদ অভিযাত্রার জন্য একই সময়ে বড় প্লেন বা হেলিকপ্টারে প্রয়োজনীয় পাইলটদের সংখ্যা হ্রাস করার একটি সুযোগও দেখতে পাচ্ছেন এর মধ্যে। রোবট পাইলটকে আরো দক্ষ করার কাজগুলো করছেন তারা।

অরোরা’র চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জন ল্যাংফোর্ড বলেন, ‘এখন মানুষ ও রোবট একসঙ্গে প্রতিটি কাজ করছে। তবে অ্যালিয়াসের রোবট পাইলট পদক্ষেপ আরও এগোবে। যেমন, একটি রোবট ক্যামেরার সাহায্যে সব ককপিট যন্ত্র দেখতে ও পরিমাণ বুঝতে সক্ষম হবে। এটি সুইচের পজিশন বুঝে প্রয়োজনে খোলা ও বন্ধ এবং বিভিন্ন যন্ত্র কাঙ্ক্ষিত অবস্থানে সরাতে-নড়াতে পারবে’।  

‘সমতল থেকে উড়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তার অভিজ্ঞতা না থাকলেও প্লেনের যে টাইপ ফ্লাইটের সমগ্র ইতিহাস থেকে সে শিখবে’।

ল্যাংফোর্ড বলেন, ‘এছাড়া একজন মানুষ পাইলট কী করতে পারেন, কী করতে পারেন না- সেটি বুঝে উইন্ডো আউট চেহারার রোবটের প্রোগ্রামে অভিযোজিত করা যাবে’।  

‘পাইলট হিসেবে রোবট মানুষের চেয়ে উত্তম। এর দ্রুত প্রতিক্রিয়া এবং জ্ঞান তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়। একটি সম্ভাব্য পরিস্থিতির জন্য যে জরুরি চেকলিস্ট আপ কল করা দরকার, সেটিও করতে পারবে রোবট পাইলট’- জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

তারা জানান, অ্যালিয়াসের রোবট একটি ‘ড্রপ-ইন’ প্রযুক্তি, যা কোনো সমতল বা হেলিকপ্টারে ব্যবহারের জন্য তৈরি। এমনকি ১৯৫০ সালে প্লেন ইলেকট্রনিক্স ডিজাইন থেকে নির্মাণ করা হয়েছে।

অ্যালিয়াস কর্মসূচি ব্যবস্থাপক ড্যান প্যাট ডার্পার বলেন, পাইলট হিসেবে রোবট প্রতিস্থাপনে দুই দশক লেগে যেতে পারে। কিন্তু অ্যালিয়াসের প্রযুক্তি উপাদানগুলো আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে গৃহীত হতে পারে।  

কিন্তু ল্যাংফোর্ডের বিশ্বাস, এ রূপান্তর শিগগিরই ঘটবে।

উটাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের চেতনা ও স্নায়ু বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ডেভিড স্ট্রেয়ার অরোরা কর্মকর্তাদের সঙ্গে একমত। মানব ও যন্ত্রের সংযোগস্থল নিয়ে গবেষণা করে তিনি বলেছেন, ‘একজন মানব পাইলটও ভুল করতে পারেন। কিন্তু রোবট পাইলটের দক্ষতা বেশ আশ্চর্যজনক’।

বাংলাদেশ সময়: ০৫১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০১, ২০১৬
এএসআর/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।