ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৬ মে ২০২৪, ০৭ জিলকদ ১৪৪৫

নিউইয়র্ক

‘পাকিস্তানি পার্টি’ বিএনপি অস্তিত্বহীন, বললেন অর্থমন্ত্রী

শিহাবউদ্দীন কিসলু, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১৪
‘পাকিস্তানি পার্টি’ বিএনপি অস্তিত্বহীন, বললেন অর্থমন্ত্রী

নিউইয়র্ক: বিএনপিকে ‘পাকিস্তানি পার্টি’ আখ্যা দিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেছেন, দলটি বর্তমানে অস্তিত্বহীন। বিএনপির কবর রচিত হয়ে গেছে।

একইসঙ্গে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেছেন, ‘কোথাকার কোন পাগল-ছাগল, কোন অশিক্ষিতি লোক কী বললো, এসব নিয়ে কথা বলবেন না। ডোন্ট টক অ্যাবাউট ইট। ’

মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে স্থানীয় সময় শনিবার নিউইয়র্কে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেব উপস্থিত থেকে এসব কথা বলেন তিনি।

আগামী ২০১৮ সালের মধ্যেই অর্থাৎ এ সরকারের আমলেই পদ্মাসেতুর কাজ শেষ হবে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নেই পদ্মাসেতু হবে।

তিনি বলেন, দেশের বর্তমান বাজেট দুই লাখ ১১ হাজার কোটি টাকা। পদ্মাসেতুর জন্য ব্যয় হবে ২১-২২ হাজার কোটি টাকা। ৪ বছর মেয়াদী এ প্রকল্পে প্রতিবছর বাজেট থেকে ৫-৬ হাজার কোটি খরচ করতে কোনো অসুবিধা হবে না।

বাংলাদেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ অনেক বেশি হয়ে যাওয়ায় বরং খানিকটা অসুবিধাই হচ্ছে- এমন উষ্মা প্রকাশ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, অবশ্যই এ অর্থ থেকেও পদ্মাসেতুতে বিনিয়োগ করা হবে।

তিনি জানান, বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ ২০ বিলিয়ন ডলার।

মুজিবনগর দিবস উদযাপন সার্বজনীন কমিটি আয়োজিত এ আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিলেট-৪ আসনের সংসদ সদস্য ইমরান আহমেদ।

প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা বিতর্কের প্রতি ইঙ্গিত করে মুহিত বলেন, কেউ ঘোষণা পাঠ করেছেন, তাতেই স্বাধীনতা আসে না। নিউইয়র্কে ২৭ মার্চ বাংলাদেশ লিগ অব আমেরিকা স্বাধীনতা ঘোষণা করে জাতিসংঘ ও মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে চিঠি দিয়েছিল। সুতরাং এসব দাবি অমূলক। দীর্ঘ নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধে দেশ স্বাধীন হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর নামেই স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়েছে, অন্য কারও ঘোষণায় নয়।

বিএনপির কঠোর সমালোচনা করে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে একটি ‘পাকিস্তানি পার্টি’ আছে, সেটা হলো বিএনপি। পাকিস্তানি এ পার্টি বর্তমানে অস্তিত্বহীন। তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলো কি করলো না তাতে কিছু আসে যায় না, নির্বাচনে এলে হয়তো কিছু ভোটও পেতো সিটও পেতো।

তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর তার স্ত্রী খালেদার কখনোই এমন সময় যায়নি, তিনি কোনো না কোনো ক্ষমতায় রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্বে ছিলেন। এই প্রথমবারের মতো রাষ্ট্রে তার কোনো ভূমিকা নেই।

তিনি বলেন, আমার ধারণা এই ‘পাকিস্তানি পার্টি’র কবর রচিত হয়ে গেছে। খামোখা এ নিয়ে কোনো কথা বলবেন না। ‘শি (খালেদা) ইজ নাথিং ইন দ্য কান্ট্রি , তার পার্টি নাথিং ইন দ্য কান্ট্রি , জাস্ট ফরগেট অ্যাবাউট ইট’।

অর্থমন্ত্রী মুহিত তার বক্তব্যে মুজিবনগর দিবস ও স্বাধীনতার ইতিহাস প্রসঙ্গে বলেন, পাকিস্তানে বন্দি থাকলেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামেই স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়েছে। স্বাধীনতা যুদ্ধ বাঙালির ১৫শ’ বছরের অন্দোলন-সংগ্রামের ফসল, যে অন্দোলনে অনেকে অবদান রেখে গেছেন। কিন্তু প্রয়োজন ছিল একটি নেতৃত্বের। সেই স্ফুলিঙ্গ ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। প্রথমবারের মতো একাত্তর সালে এভাবে আমরা স্বাধীন হলাম। প্রথমবারের মতো বাংলা ভাষা হলো আমাদের রাষ্ট্র ভাষা।

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে এবং ন্যাপের সমর্থনে স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, রণক্ষেত্রের বীর মুক্তিযোদ্ধারা ছাড়াও দেশের ৯০ শতাংশ মানুষই বিভিন্নভাবে মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন-এ সত্য স্বীকার করতে হবে।

ইতিহাস বিকৃতির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে এবং সঠিক ইতিহাস জানতে নতুন প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা খুবই উৎসাহিত যে, এই ইতিহাস বিকৃতির মধ্যেও নতুন প্রজন্ম গণজাগরণ মঞ্চ সৃষ্টি করেছে, নিজেরাই নিজেদের সন্ধান পেয়েছে। শেকড় খুঁজে পেয়েছে।

পদ্মাসেতু সম্পর্কে অর্থমন্ত্রী বলেন, আগামী জুনেই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত নির্দেশ দেওয়া হবে। ইতোমধ্যেই দেশবরেণ্য বিশেষজ্ঞ জামিলুর রেজা চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি দল ‘টেকনিক্যাল অ্যাসেসমেন্ট’ বা কারিগরি পর্যালোচনা করে ফেলেছে, এখন ‘ফাইনান্সিয়াল অ্যাসেসমেন্ট’ বা অর্থনৈতিক পর্যালোচনা চলছে।   আরও দু’টি বড় কন্ট্রাক্ট আমাদের করতে হবে, একটি নদী শাসন, আরেকটি ব্রিজ কন্স্ট্রাকশনের জন্য সুপারভিশন কনসালট্যান্ট, এটা জুলাই  মাসের দিকে হবে।
 
সংসদ সদস্য ইমরান আহমেদ বলেন, যারা স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃত করছেন তাদের নিয়ে বিতর্ক করলেই মানুষ মিথ্যায় বিভ্রান্ত হবেন। সুতরাং এসব মিথ্যাচার নিয়ে বিতর্কে সময় নষ্ট না করে সত্য ইতিহাস প্রচার করতে হবে।

বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি কামাল আহমেদের সভাপতিত্বে এবং কাজী কয়েসের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে নিউইয়র্কের কনসাল জেনারেল শামীম আহসান, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সাইফুল ইসলাম রহিম, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সেক্রেটারি জয়নাল আবেদীন, যুবলীগের মিসবাহ আহমেদ, নিউইয়র্ক আওয়ামী লীগের শাহীন আজমলসহ অন্যরা বক্তব্য রাখেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

নিউইয়র্ক এর সর্বশেষ