ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

নিউইয়র্ক

যুক্তরাষ্ট্র-কমনওয়েলথের হতাশা, সংলাপের তাগিদ

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপেন্ডন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৩৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৭, ২০১৪
যুক্তরাষ্ট্র-কমনওয়েলথের হতাশা, সংলাপের তাগিদ

ঢাকা: ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সীমিত পরিসরের অংশগ্রহণ ও ভোটারদের উপস্থিতি কম হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও আন্তর্জাতিক সংগঠন কমনওয়েলথ। একইসঙ্গে সরকার ও বিরোধী দলকে আন্তরিকভাবে অতিসত্বর সংলাপে বসার তাগিদ দেওয়া হয়েছে।



নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংঘটিত সহিংস ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে দ্রুত একটি অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় এগোনোর পথ খুঁজে বের করতে সংলাপ অনুষ্ঠানের তাগিদ দিয়েছে কমনওয়েলথ।

সোমবার কমনওয়েলথ মহাসচিব কমলেশ শর্মা এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের নির্বাচন পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় বলেন, বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত সংসদীয় নির্বাচন কেন্দ্রিক পরিস্থিতি কমনওয়েলথ অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করে আসছে। সহিংসতার ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন। কোনো ধরনের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতেই সহিংসতা গ্রহণযোগ্য নয়।

লন্ডনে কমনওয়েলথ সদর দপ্তর থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, কমনওয়েলথ সনদ অনুযায়ী অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে প্রত্যেক ব্যক্তির অংশগ্রহণের অধিকারসহ গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি সমুন্নত রাখার বিষয়টিতে সরকার, রাজনৈতিক দলগুলো ও সুশীল সমাজের দায়িত্ব রয়েছে। সে কারণে দ্রুত সংলাপের মাধ্যমে একটি অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় পৌঁছানোর পথে অগ্রসর হওয়া বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেখানে জনগণের মতামত পুরোপুরি প্রতিফলিত হতে পারে।

অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে তীব্র হতাশা প্রকাশ করে দ্রুত সংলাপের তাগিদ দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও। সোমবার দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের উপ-মুখপাত্র ম্যারি হার্ফ এক বিবৃতিতে পাঠান।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, এ নির্বাচনের ফলাফলে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের ইচ্ছার প্রতিফলন দেখা যায়নি। এই নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্র হতাশ। এই নির্বাচনে অর্ধেকেরও বেশি আসনে প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন এবং বাকিগুলোর মধ্যে অধিকাংশ আসনেই নামে মাত্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে।

তিনি বলেন, নতুন সরকারের রূপ কি হবে সেটা ভবিষ্যতেই জানা যাবে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার অঙ্গীকার অটুট থাকবে। এই সুবাদে আমরা বাংলাদেশ সরকার ও বিরোধী দলকে অবিলম্বে সংলাপে বসার জন্য উৎসাহিত করছি যার মাধ্যমে তারা যত শীঘ্রই সম্ভব একটি নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথ খুঁজে বের করবে। যেটি হবে অবাধ, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ ও বিশ্বাসযোগ্য এবং যা বাংলাদেশের মানুষের আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটাবে।

রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় সহিংসতা গ্রহণযোগ্য নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানে বিরাজমান রাজনৈতিক অচলাবস্থায় সকল পক্ষ থেকে যে সহিংস কার্যকলাপ ঘটছে যুক্তরাষ্ট্র তীব্র ভাষায় তার নিন্দা জানাচ্ছে। এধরনের সহিংস কার্যকলাপ অবিলম্বে বন্ধ করার জন্য আমরা সকলের প্রতি আহ্বান জানাই।

হার্ফ বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং যারা পরবর্তীতে নেতৃত্ব দেয়ার আকাঙ্ক্ষা পোষণ করেন আইন শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে তাদের পক্ষে যা কিছু করা সম্ভব তাদের তা করতে হবে। পাশাপাশি সহিংসতার প্রতি সমর্থন দেওয়া, বিশেষ করে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর প্রতি সহিংসতায় প্ররোচিত করা থেকে, উস্কানিমূলক বক্তব্য ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করা থেকে তাদের বিরত থাকতে হবে।

একই রকমভাবে সংলাপের তাগিদ দিয়ে সোমবার বৃবিতি দিয়েছেন কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন বেয়ার্ড। তিনি বলেন, কানাডা নতুন করে একটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর আগ্রহকে স্বাগত জানায়। ভবিষ্যৎ নির্বাচন যাতে সত্যিকার অর্থে অংশগ্রহণমূলক হয় এবং তার ফল সকল বাংলাদেশির কাছে বিশ্বাসযোগ্য হয়, সে লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোকে একমতে পৌঁছার আহ্বান জানায় কানাডা।

কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, অর্ধেকের বেশি আসনে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়াই নির্বাচিত হওয়া খুবই হতাশাজনক। কানাডা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছে, নির্বাচনের সময় সহিংসতা ও বিতর্ক দেখা দিয়েছে। ২০১৩ সালে রাজনৈতিক সহিংসতায় শত শত বাংলাদেশি নাগরিক নিহত হয়েছেন। আমরা এই সহিংসতা, বিশেষ করে সমাজের সবচেয়ে দুর্বল জনগোষ্ঠী তথা শিশু, নারী, ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর কাণ্ডজ্ঞানহীন হামলার ঘটনায় কঠোরতম ভাষায় নিন্দা জানাই।

বাংলাদেশ সময়: ০২৩০, জানুয়ারি ০৭, ২০১৪
সম্পাদনা: এম জে ফেরদৌস, নিউজরুম এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

নিউইয়র্ক এর সর্বশেষ