ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

দশ ট্রাক অস্ত্র মামলা ॥ তদন্ত প্রতিবেদনে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ

রমেন দাশগুপ্ত, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১০
দশ ট্রাক অস্ত্র মামলা ॥ তদন্ত প্রতিবেদনে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ

চট্টগ্রাম: চাঞ্চল্যকর দশ ট্রাক অস্ত্র মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে কমিটির সদস্য ও পুলিশের বিশেষ শাখার সাবেক ডিআইজি শামসুল ইসলামকে জোরপূর্বক স্বাক্ষর করতে বাধ্য করেছিলেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্র সচিব ওমর ফারুক।

রোববার চট্টগ্রামের একটি আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দীতে তিনি এ তথ্য ফাঁস করেন।

 

জবানবন্দীতে তিনি বলেন, তদন্ত কমিটির প্রধান হিসেবে স্বরাষ্ট্র সচিব তাকে না জানিয়েই প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেন। এমনকি স্বাক্ষর নেওয়ার সময়ও তাকে প্রতিবেদন পড়তে দেওয়া হয়নি।

সাবেক এই পুলিশ কর্মকর্তার চার পৃষ্ঠার জবানবন্দী রেকর্ড করেছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ওসমান গণি।  

জবানবন্দীতে তিনি আরও বলেন, তদন্তের বিভিন্ন পর্যায়ে তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর এবং পুলিশ মহাপরিদর্শক শহীদুল হকের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করেছিলেন তদন্ত কমিটির কর্মকর্তারা। এসব বৈঠকে তদন্তে পাওয়া বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরতেন কমিটির প্রধান স্বরাষ্ট্র সচিব ওমর ফারুকসহ অন্যান্য সদস্যরা। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, সচিব এবং মহাপরিদর্শকের সম্মিলিত মতামতের ওপর ভিত্তি করেই মামলার তদন্ত হয়েছিল।

জবানবন্দী গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মহানগর আদালতের সরকারি কৌসুলি কামালউদ্দিন আহমেদ।

২০০৪ সালের পহেলা এপ্রিল রাতে রাষ্ট্রায়ত্ত সার কারখানা চিটাগং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড (সিইউএফএল)’র জেটিঘাটে খালাসের সময় দশ ট্রাক অস্ত্র ধরা পড়ে। ঘটনা তদন্তে সেসময় তৎকালীন স্বরাষ্ট্র সচিব ওমর ফারুকের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে সরকার। ওই কমিটির সদস্য হিসেবে শামসুল ইসলাম দশ ট্রাক অস্ত্র আটকের ঘটনার তদন্ত করেন।

এর আগে ওই কমিটির অপর দুই সদস্য জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) এর সাবেক পরিচালক এনামুল হক চৌধুরী এবং সিআইডির সাবেক ডিআইজি ফররুখ আহমেদ আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দেন।

এ ঘটনায় অস্ত্র আটক ও চোরাচালান আইনে দায়ের হওয়া দু’টি মামলায় পুলিশ এর আগে চার্জশীট দাখিল করলেও ২০০৮ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি মহানগর দায়রা জজ মামলাটি অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন।

অধিকতর তদন্ত শুরুর পর থেকে মামলার তদন্ত সংস্থা সিআইডি এ পর্যন্ত এনএসআইয়ের সাবেক দুই মহাপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মে. জে. রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, অবসরপ্রাপ্ত ব্রি. জে. আবদুর রহিম, সাবেক পরিচালক উইং কমান্ডার শাহাবুদ্দিন, উপ-পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মে. লিয়াকত হোসেন, ফিল্ড অফিসার আকবর হোসেন, সিইউএফএল’র সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহসিন উদ্দিন চৌধুরী, মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) একেএম এনামুল হককে গ্রেপ্তার করে। এদের মধ্যে কয়েকজন এ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দীও দেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।