ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ মে ২০২৪, ০০ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

ঘুষ ছাড়া ফাইল ছাড়েই না সেরেস্তাদার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০২২
ঘুষ ছাড়া ফাইল ছাড়েই না সেরেস্তাদার

ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের সেরেস্তাদার রাজ মাহমুদের বিরুদ্ধে লাগামহীন ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। এনিয়ে প্রতিবাদ করায় বহু বিচারপ্রার্থী হেনস্থার শিকার হয়েছেন বলে জানা গেছে।

ঘটনাটি নান্দাইল সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে ওপেন সিক্রেট। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয় না। তাই দিন দিন বেপরোয়া হচ্ছেন সেরেস্তাদার রাজ মাহমুদ। আইনজীবীরাও বিষয়টি নিয়ে খুবই বিব্রত।

স্থানীয় এক সংবাদ কর্মী জানান, টাকা ছাড়া কোনো কাজই করেন না সেরেস্তাদার রাজ মাহমুদ। কী কারণে টাকা নেবেন জানতে চাইলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। খারাপ আচরণ তো করেনই, টাকা দিলে কাজ হবে, নয়তো ফিরে যেতে বলেন তিনি।

নান্দাইল উপজেলার আমুদাবাদ গ্রামের দেলোয়ার হোসেন নামে এক ভুক্তভোগী বলেন, আমার একটি আপিল মামলার নথি খুঁজতে গেলে সেরেস্তাদার চার হাজার হাজার টাকা ঘুষ দাবী করেন। টাকা না দেওয়ায় তিনি আমার কাজ করছেন না।

নান্দাইল উপজেলার স্বামী পরিত্যক্তা খাদিজা আক্তার জানান, ফাইল ছাড়তে রাজ মাহমুদ তার কাছে তিন হাজার টাকা চান। না দিলে তিনি আমার খোরপোষের মামলার চেকে স্বাক্ষর করেন না। প্রতি মাসেই তাকে চেকের জন্য ৩ হাজার করে টাকা দিতে হয়। ফলে আমি বা আমার সন্তানের খোরপোষ হয় না।  

একই উপজেলার জালাল নামের অপর আর ভুক্তভোগী বলেন, রাজ মাহমুদ প্রতিনিয়ত তার কাছে ঘুষ দাবি করেন। না দিলে তাকে অকথ্য কথা বলেন। অনেকেই তার বিরুদ্ধে কথা বলতে ভয় পান। বিচারালয়ের এ অবস্থা হলে অসহায় মানুষ কোথায় যাবে, প্রশ্ন করেন তিনি।

ভুক্তভোগীদের ভাষ্য, যে আদালতে ঘুষ ছাড়া কাজ হয় না, সেখানে কীভাবে মানুষ বিচার চাইতে যাবে। সেরেস্তাদার প্রকাশ্যে ঘুষ চায়। কর্তৃপক্ষ এসব জেনেও কিছু বলেন না।

বিষয়গুলো নিয়ে সব অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার চৌকি আদালতের সেরেস্তাদার রাজ মাহমুদ। কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনি সাংবাদিক তাতে আমার কী? আপনাকে বলতে হবে কেন? পারলে আপনি আমার বিরুদ্ধে জজ সাহেবের কাছে নালিশ করেন।

অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে ঈশ্বরগঞ্জ আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শহিদুল ইসলাম মুক্তি বলেন, আমি বিগত সময়ে অনেক সেরেস্তাদার পেয়েছি, তারা যে একটু এদিক সেদিক করেনি তা নয়। কিন্তু সেরেস্তাদার রাজ মাহমুদ নথিপত্র খোঁজার নামে আমাদের মক্কেলদের কাছ থেকে টাকা পয়সা নিয়েও যে ধরনের খারাপ আচরণ করে, তা দৃষ্টিকটু। কাজের প্রয়োজনে তার কাছে সবাই জিম্মি। এ ঘটনার উপযুক্ত শাস্তি হওয়া উচিত।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০২২
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।