ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং

জোয়ারের তোড়ে বিধ্বস্ত সড়ক, চলাচলে ভরসা নৌকা 

মো. নিজাম উদ্দিন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২১ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০২২
জোয়ারের তোড়ে বিধ্বস্ত সড়ক, চলাচলে ভরসা নৌকা 

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার লরেন্স-নবীগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কটি জোয়ারের পানির তোড়ে বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে গত ২৪ অক্টোবর রাতে সড়কটি ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

 

সড়কের পাশে থাকা কাদির পণ্ডিতেরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় হাজারো লোকের চলাচল এখন বন্ধ হয়ে গেছে। তাই বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়েই শিক্ষার্থী এবং স্থানীয়দের নৌকা দিয়ে ভাঙা অংশ পার হতে হচ্ছে।  

স্থানীয় বাসিন্দা মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, গত ২৪ অক্টোবর ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর রাতে মেঘনা নদীতে কয়েক ফুট উচ্চতায় জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পায়। তখন জোয়ারের পানির তোড়ে ভেঙে গেছে রাস্তাটি।  

তিনি জানান, ভাঙা অংশে আগে একটি কালভার্ট ছিল। সেখান দিয়ে চর লরেন্স থেকে নবীগঞ্জ, চৌধুরী বাজার, তালতলি মাছঘাট, মুন্সিরহাট, মতিরহাটসহ উপজেলার বিভিন্নস্থানে যাতায়াত করা যেত। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করত। সব রকম যানবাহনও চলাচল করেছে এখান দিয়ে। বিগত দুই বছর আগের জোয়ারের তোড়ে কালভার্টটি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর জোয়ারের পানিতে উপকূল প্লাবিত হওয়ার পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে। এখন লোকজনের চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। কালভার্টের পাশে একটি উচ্চ বিদ্যালয় আছে। সেখানকার শিক্ষার্থীরাও এখন চলাচল করতে পারছে না।  

তিনি বলেন, আপাতত নৌকা দিয়ে আশপাশের লোকজন এবং বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ভাঙা অংশ পারাপার হচ্ছে।  

বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী পিয়াস, দশম শ্রেণির সিহাব, ৬ষ্ঠ শ্রেণির সাফায়েত ও মিহাদ বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত হয়েছে। এখন আমাদের বিদ্যালয়ে আসতে সমস্যা হচ্ছে। আমরা খুব ঝুঁকি নিয়ে ভাঙা অংশ নৌকা দিয়ে পারাপার হচ্ছি। আমাদের দাবি- প্রশাসন যাতে ভাঙা অংশ মেরামতে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেয়। আমরা যাতে নিরাপদভাবে বিদ্যালয়ে আসতে পারি।  

বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মতিউর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে চার শতাধিক ছেলে মেয়ে লেখাপড়া করে। বিদ্যালয়টি মেঘনা নদীর খুব কাছে। নদীর তীরে বেড়িবাঁধ না থাকায় পানি খুব সহজে নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে ঢুকে পড়ে। জোয়ার এলেই স্কুলের মাঠে পানি উঠে যায়। দুই বছর আগে জোয়ারের অতিরিক্ত পানির চাপে স্কুলের সামনের কালভার্টের অংশ আংশিক বিধ্বস্ত হয়। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের রাতে জোয়ারের পানি অতিরিক্ত পরিমাণে বাড়ে। পানির তোড়ে রাস্তাটি পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে যায়৷ এখন আমাদের খাল পারি দিয়ে স্কুলে আসতে হয়। আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরা এতে চরম ঝুঁকিতে আছে। তাই অচিরেই শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের চলাচল স্বাভাবিক রাখতে প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধিদের কাছে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।   

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের কমলনগর উপজেলা প্রকৌশলী সোহেল আনোয়ার বাংলানিউজকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমাদের সভায় আলোচনা হয়েছে। ভাঙা অংশের খুব কাছেই নদী চলে আসছে। তাই ভাঙন কবলিত ওই এলাকায় কালভার্ট বা ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া যাচ্ছে না। তবে সাধারণ মানুষ যাতে চলাচল করতে পারে, সে জন্য কাঠের তৈরি পুল নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।