ঢাকা, সোমবার, ৪ আষাঢ় ১৪৩১, ১৭ জুন ২০২৪, ০৯ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

এডিস মশা ছিল না, হয়তো প্লেনে করে এসেছে: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০২২
এডিস মশা ছিল না, হয়তো প্লেনে করে এসেছে: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী কথা বলছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম। 

ঢাকা: আমাদের দেশে এডিস মশা ছিল না, ফ্লাইটে হয়তো এই মশা আমাদের দেশে আসতে পারে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম।  

একই সঙ্গে ডেঙ্গুতে দেশে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত ৩৩ হাজার ৯৩০ জন আক্রান্ত হয়েছে বলে জানান তিনি।

 

রোববার (৩০ অক্টোবর) সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সারাদেশে মশাবাহিত রোগ-প্রতিরোধ সিটি কর্পোরেশন ও অন্যান্য মন্ত্রণালয়/বিভাগ, দপ্তর/সংস্থার কার্যক্রম পর্যালোচনার জন্য চলতি বছরের ৫ম আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ২০১৯ সাল থেকে ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছি। ২০২০ সালে সফলতা দেখাতে সক্ষম হয়েছি। ২০২২ সালে পরিস্থিতির অবনতি লক্ষ্য করছি। যদিও পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে পরিস্থিতি আরও খারাপ।  

তিনি বলেন, প্রতিবেশী অন্যান্য দেশের তুলনায় দেশে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা কম হলেও অস্বস্তিতে আছে। আমরা তুলনাটা (আক্রান্ত) কেন দেই? কারণ আমাদের এখানেতো এডিস মশা ছিল না, ডেঙ্গু রোগ ছিল না। এটাতো বাহির থেকে এসেছে। ফ্লাইটে করে প্যাসেঞ্জার আসছিল অথবা দুটি মশা আসছে। দুটি মশা এখানে এসে কোন না কোন বাহিত (ডেঙ্গু) ছিল, সে আরও মশা প্রজনন করেছে।

স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ডেঙ্গুতে দেশে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত ৩৩ হাজার ৯৩০ জন আক্রান্ত হয়েছে। অন্য দেশগুলোর তুলনায় তা কম হলেও আমরা আরও ভালো করতে চেয়েছি। আমরা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে চাই।

এখন যে ডেঙ্গু হচ্ছে এটা নির্মূল করার পথ কী আপনাদের কাছে নেই? এ প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, এটা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে বলেইতো অবস্থাটা অন্য দেশের তুলনায় এ রকম (ভালো)। তাদের দেশেওতো ছিল না। এটা ইউরোপে ছিল। ফ্রান্সে দেখা গেছে যে একদিনে ৭/৮ হাজার লোক মারা গেছে৷ এ তথ্য আছে আমাদের কাছে।

তিনি বলেন, এটা আমি বলছি যে হয়তো কোন কারণে অর্থাৎ কোন কোন কারণে আসতে পারে। যেমন আমাদের হয়তো কোন প্যাসেঞ্জার আসছে হয়তো কোভিড যুক্ত তাকে আইডেন্টিফাই করা যায়নি অথবা কেউ জানে না সে এসে নিজে সুস্থ ছিল কিন্তু রোগী সৃষ্টি করেছে, তেমনিভাবে ফ্লাইটে করে একটি মশা আসতে পারে।

মন্ত্রী বলেন, ২০২১ সালে ২০ হাজারের মতো আক্রান্ত হয়। কিছু মৃত্যু হয়। সেটা আমাদের জন্য স্বস্তিদায়ক ছিল। এখন ২০২২ সাল। এই ২০২২ সালে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগের তীব্রতা আমাদের সমসাময়িক দেশগুলোতে মারাত্মকভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে। বাংলাদেশও তার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত।  

সাধারণ আমরা সেপ্টেম্বরের পর থেকে এর নিম্নগামী আমরা লক্ষ্য করেছি। প্রতিটি দেশে ক্লাইমেট চেঞ্জের কারণে এই রোগের একটা সম্পৃক্ততা আমরা লক্ষ্য করেছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত এ বছর অক্টোবর মাস শেষ হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু এখনো এটা নিম্নগামী অবস্থা না আমাদের কাছে।

মশার জন্য কোনো বর্ডার নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের অবস্থার থেকে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশগুলো অনেকের অবস্থা এর থেকে অনেক ভয়াবহ। ভারতে গতকাল পর্যন্ত প্রায় দুই লাখের মতো আক্রান্ত। বিশেষ করে কলকাতায় অসংখ্য এবং মৃত্যুর হার সেখানে বেশি।  

তিনি আরও বলেন, ১ অক্টোবর পর্যন্ত সিঙ্গাপুরে ২৮ হাজার ১৯৬ জন আক্রান্ত। আমার মনে হয় এই সংখ্যাটা এখন অনেক বেড়েছে। মালয়েশিয়াতে ৩৭ হাজার ৯৫০ জন। ইন্দোনেশিয়াতে ৯৪ হাজার ৩৫৫ জন। ফিলিপাইনে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৫০ জন। বাংলাদেশে এখনো পর্যন্ত (২৬ অক্টোবর) ৩৩ হাজার ৯২৩ জন। এটা আমাদের কাছে স্বস্তিদায়ক না।  

মন্ত্রী বলেন, অন্যান্য দেশের সঙ্গে তুলনা করলে যেমন সিঙ্গাপুরে মানুষের সংখ্যা ৫০ লাখের মতো। সেই পরিপ্রেক্ষিতে এবং মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইনের থেকে আমাদের দেশে জনসংখ্যার পরিমাণ বেশি। তা সত্ত্বেও এবং আমাদের জনসংখ্যার ঘনত্ব ভাইরাস ছড়ানোর জন্য বড় কারণ। এটা তো মশাবাহিত ভাইরাস। সে কারণে যদি ওই ফিগার দেখি তাহলে আমাদেরকে সফল বলতে হবে, কিন্তু আমি এটাকে সফল বলবো না। আমাদের টার্গেট ছিল ২০২০ সালে যে দুই হাজার হয়েছিল, তার থেকে আরও নিচে নামিয়ে আনার। এখানে আমাদের মেয়র সাহেবরা কাজ করেনি অথবা আমরা অনুপস্থিত ছিলাম মনিটরিং করতে.... (বিষয়টি তেমন না)।  

তিনি বলেন, মশা নিধনের জন্য যেসব উপকরণ লাগবে, মশা নির্মূলে জন্য যে ওষুধ লাগবে তা বছরের শুরুতে সংগ্রহ করা হয়। তারপর যে মেশিন লাগবে উনারা (মেয়ররা) সংগ্রহ করেন। তারপর লোকবল লাগবে ৩ হাজার করে, উনাদের লোকবল দেওয়া হয়েছে এবং এজন্য অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। দুই কোটি, পাঁচ কোটি করে আমি অর্থ বরাদ্দ দিয়েছি।  

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, মশার ওষুধ আমদানির ক্ষেত্রে এক ধরনের মনোপলি ছিল। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা মনোপলি ভেঙেছি। আমাদের যেসব প্রক্রিয়া হাতে আছে, সেগুলো আমরা করেছি। কিছুদিন আগে অস্ট্রেলিয়ার মনাশ ইউনিভার্সিটি এসিড মশার ওপর একটা স্টাডি করি অবিষ্কার করেছে একজাতীয় মশা যখন এডিস মশার সঙ্গে ক্রস হবে, তখন এডিস মশার জীবাণু বহন করতে পারবে না। আমরা তাদেরকে ওয়েলে কাম করেছি।  

বাংলাদেশ সময়: ১২৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০,২০২২
জিসিজি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।