ঢাকা, রবিবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

চাঁদপুরে ৭ ঘণ্টায় হাজার মণ ইলিশ বিক্রি

মুহাম্মদ মাসুদ আলম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০২২
চাঁদপুরে ৭ ঘণ্টায় হাজার মণ ইলিশ বিক্রি

চাঁদপুর: মা ইলিশ রক্ষায় পদ্মা-মেঘনায় মাছ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে আবারও কর্মচাঞ্চল্য হয়ে পড়েছে দেশের ইলিশের অন্যতম পাইকারি বাজার চাঁদপুর বড় স্টেশন মাছঘাট। নিষেধাজ্ঞা শেষে শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) মধ্য রাতের পর নদীতে ইলিশ শিকারে নামেন জেলেরা।

এরপর তারা ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির বড় বড় মাছ নিয়ে আসছেন আড়তে। শনিবার (২৯ অক্টোবর)সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৮ ঘণ্টায় বরফ ছাড়া হাজার মণ চকচকে রূপালী ইলিশ বিক্রি হয় এ মাছঘাটে।

এদিন সন্ধ্যায় মাছঘাটের প্রায় অর্ধশতাধিক আড়তের ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের ইলিশ ক্রয়-বিক্রয় কাজে ব্যস্ত দেখা যায়।

সকাল ১০টা থেকে মাছঘাটে পুরোদমে ইলিশ বিক্রি শুরু হয়। দুপুর ১২টার মধ্যে বিক্রি করা ইলিশ বক্স করে প্রস্তুত করা হয় রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানোর জন্য। মাছঘাটের সামনের খোলা জায়গায় ইলিশসহ অন্যান্য মাছ শত শত বক্স করে স্তূপ করে রাখা হয়েছে। ট্রাকে এবং ট্রেনে এসব মাছ চালান করা হবে।

মাছঘাটের ব্যবসায়ী হাজী হজরত আলী বেপারী বাংলানিউজকে বলেন, শনিবার সকাল থেকেই আমি আড়তে। পদ্মা-মেঘনার আমদানি করা ১ হাজার মণের বেশি ইলিশ বিক্রি হয়েছে। একই সঙ্গে  পাওয়া গেছে বড় বড় পাঙাশ মাছ। অভিযানের পরে আজকে স্বাভাবিকের চাইতে অনেক বেশি পাঙাশ পেয়েছে জেলেরা। এক জেলে এনেছেন ৩০টি পাঙাশ এবং আরেকজন এনেছেন ২১টি। আজকে ১শ থেকে দেড়শ মণ পাঙাশ বিক্রি হয়েছে।

ভাই ভাই মৎস্য আড়তের মালিক দেলোয়ার হোসেন জমাদার বাংলানিউজকে বলেন, আজকে প্রচুর পরিমাণ পাঙাশের আমদানি হয়েছে। ৬শ টাকা থেকে শুরু করে ৬৫০টাকা কেজি দরে এ মাছ বিক্রি হয়েছে। আর ২ কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৬শ টাকা করে। তবে বড় সাইজের প্রত্যেক ইলিশের পেটেই ডিম আছে। ১ কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৫০ টাকা করে। ৪শ থেকে ৫শ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৬৫০ টাকা কেজি দরে।

তিনি আরও বলেন, অভিযানের সময় নদীতে মাছের বিচরণ অনেকটা নিরাপদ থাকে। যে কারণে সাগর থেকে উঠে মাছ নদীতে আসে। ফলে জেলেরা ইলিশের পাশাপাশি বড় বড় রুই, কাতল, আইড়, পোয়া, বোয়াল, রিটাসহ অন্যান্য মাছ পেয়েছেন।

মেঘনার পশ্চিম পাড় রাজরাজেশ্বর এলাকার জেলে মোছলেম মাঝি বাংলানিউজকে বলেন, তিনি ইলিশের সঙ্গে পাঙাশ পেয়েছেন ৫টি। প্রতি কেজি পাইকারি বিক্রি করেছে ৫৫০টাকা করে। প্রতিটি পাঙাসের ওজন ৮ থেকে ১০ কেজি। আরেক জেলে ছমিদ আলী ইলিশের সঙ্গে পেয়েছেন পাঙাস ও আইড় মাছ। তিনি ৩টি বড় পাঙাস বিক্রি করেছেন একই আড়তে। আইড় মাছ প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৭শ থেকে ৮শ টাকা দরে।

চাঁদপুর মৎস্য ও বণিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজী শবেবরাত বাংলানিউজকে বলেন, শনিবার সকাল থেকেই লোকাল ইলিশের আমদানি শুরু হয়েছে। অধিকাংশ ইলিশের পেটে ডিম আছে। কয়েকদিন গেলে বুঝতে পারব ইলিশ পাওয়া না পাওয়ার পরিস্থিতি।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. গোলাম মেহেদী হাসান বাংলানিউজকে বলেন, এবারের অভিযানে আমরা চেষ্টা করেছি জেলেদেরকে মা ইলিশ ধরা থেকে বিরত রাখতে। কারণ ইলিশ বড় হলে এবং ডিম ছাড়ার সুযোগ পেলে এর সুবিধা তারাই ভোগ করবেন। বড় বড় ইলিশ ও পাঙাস পাওয়াটা স্বাভাবিক বিষয়। কারণ ইলিশ পদ্মা-মেঘনায় বিচরণের সুযোগ পেয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০২২
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।