ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ মে ২০২৪, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

কম্বোডিয়ায় মানবপাচার চক্রের অন্যতম হোতা গ্রেফতার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০২২
কম্বোডিয়ায় মানবপাচার চক্রের অন্যতম হোতা গ্রেফতার

ঢাকা: কম্বোডিয়ায় সাইবার ক্রীতদাস হিসেবে মানবপাচারকারী চক্রের অন্যতম এক হোতাকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

তার নাম মো. হারুন মিয়া (৫৪)।

তিনি কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ থানার ইন্দা চল্লি গ্রামের মৃত হাছান উদ্দিনের ছেলে। অভিযানকালে তার কাছ থেকে ১টি মোবাইল ফোন, ২টি সিমকার্ড এবং ১টি ভুয়া এনআইডি কার্ড জব্ধ করা হয়।

সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে রাজধানীর পল্টন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে র‌্যাব-৩ এর সদস্যরা।

র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক (সিও) লে.কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, প্রাথমিক অনুসন্ধান ও জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, হারুন মানবপাচার চক্রের অন্যতম মূলহোতা। তিনি বাংলাদেশ থেকে উচ্চ বেতনে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে চাকরি দেওয়ার নাম করে দালালদের মাধ্যমে শিক্ষিত, কম্পিউটার বিষয়ে পারদর্শী বেকার যুবক-যুবতী ও তাদের অভিভাবকদের প্রলুব্ধ করেতেন। এরপর কম্বোডিয়ায় পাঠানোর খরচ বাবদ প্রাথমিকভাবে ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা নিয়ে তাদেরকে বিমানযোগে কম্বোডিয়ায় পাঠাতেন।

তিনি আরও  জানান, কম্বোডিয়ায় যাওয়ার পর হারুন মিয়া ও তার সহযোগী কম্বোডিয়া প্রবাসীদের সহায়তায় প্রথমে ভুক্তভোগীদের দেশটির একটি হোটেলে নিয়ে যেত। সেখানে তাদের কাছ থেকে পাসপোর্ট ছিনিয়ে নেওয়া হতো। ওই হোটেলে কিছুদিন রাখার পর ভুক্তভোগীদেরকে কম্পিউটার বিষয়ে প্রশিক্ষণের জন্য একটি বিদেশি ট্রেনিং সংস্থায় নিয়ে যাওয়া হতো। সেখানে বিদেশি প্রশিক্ষকরা ভুক্তভোগীদের গুগল ট্রান্সলেটরের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছদ্মনামে অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করে অন্যদের কীভাবে প্রতারণা করা যায়, ক্লোন ওয়েবসাইট ব্যবহার করে ক্রেডিট কার্ড থেকে টাকা আত্মসাৎ করার কৌশল, নম্বর থেকে ফোন দিয়ে বা চ্যাটিং করে স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়ার নাম করে কৌশলে ডিপোজিট হাতিয়ে নেওয়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভয়েস কল ও ভিডিও কল রেকর্ডিংয়ের মাধ্যমে পরবর্তীতে ব্ল্যাককমেইল করে অর্থ আত্মসাতের কৌশল শেখানো হতো।

লে.কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, মানবপাচারকারীদের ভাষায় সাইবার প্রতারণার বিষয়টি স্ক্যামার হিসেবে পরিচিত। এভাবে তাদের ব্যবহার করে এই চক্রটি সাইবার অপরাধের কার্যক্রম চালায়।

তিনি জানান, সাইবার প্রতারণার কাজে বাংলাদেশিদের ব্যবহার করার কারণ হচ্ছে কম্বোডিয়া যাওয়ার পর পাসপোর্ট ছিনিয়ে নিলে ওই ব্যক্তি পালিয়ে যেতে বা স্থানীয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অভিযোগ করতে পারবে না। বাংলাদেশি ভুক্তভোগীরা উচ্চ বেতনে চাকরির প্রলোভনে পড়ে তার পরিচিতজনদের মাধ্যমেই দালালদের খপ্পরে পড়ে সর্বশান্ত হচ্ছে। ভুক্তভোগীরা দেশে ফিরে বাংলাদেশি দালালদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারলেও, কম্বোডিয়া প্রবাসী দালালরা ধরা ছোঁয়ার বাইরেই থেকে যায়।

গ্রেফতার আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান এই র‌্যাব কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৯ ঘণ্টা অক্টোবর ২৫, ২০২২
এসজেএ/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।