ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৬ মে ২০২৪, ০৭ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

‘ছাগল উন্নয়ন খামার’ প্রতিষ্ঠার ৩০ বছরেও কক্ষ পাননি কর্মকর্তারা!

সাগর ফরাজী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০২২
‘ছাগল উন্নয়ন খামার’ প্রতিষ্ঠার ৩০ বছরেও কক্ষ পাননি কর্মকর্তারা! নামফলকেও নেই কোনো কর্মকর্তার নাম। ছবি: বাংলানিউজ

সাভার, (ঢাকা): ৩০ বছর পার হয়ে গেলেও প্রতিষ্ঠানের একটি অফিস কক্ষের নেই কোনো কর্মকর্তার নাম। সাভার সরকারি ছাগল উন্নয়ন খামারের এই কক্ষে ভেটেনারি সার্জন থাকার কথা।

তবে সার্জন ছাড়াই কম্পাউন্ডার ও কর্মী দিয়ে চলছে ৮শ ৭৯টি ছাগলের চিকিৎসা কার্যক্রম। জনবল না থাকায় খামার পরিচালনায় হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। ফলে খামারে ছাগল উৎপাদনে হচ্ছে ব্যাহত।

সরকারি ছাগল উন্নয়ন খামারের কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯২-৯৩ অর্থবছরে সাভারের কলমা এলাকায় ১৪ দশমিক ৫ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয় সরকারি ছাগল উন্নয়ন খামার। সম্ভাবনাময় খামারটি ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল দিয়ে চালু করা হয়। প্রজননের মাধ্যমে খামার চালু হওয়ার পর বর্তমানে ৮শ ৭৯টি ছাগী ও পাঠা ছাগল রয়েছে। এই ছাগলগুলো রাখতে খামারের ৮টি সেডে করা হয়েছে। খাবার বাবদ ব্যয় হয় প্রায় ৬০ লাখ টাকা।

বুধবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে খামারটিতে গিয়ে দেখা গেছে, নিয়ম অনুযায়ী খামারে ছাগলের চিকিৎসার জন্য একজন ভেটেনারি সার্জন থাকার কথা থাকলেও দীর্ঘদিন তালাবদ্ধ রয়েছে অফিস ভবনের নিচতলার কক্ষটি। কক্ষটিতে এখন রাখা হচ্ছে ওষুধ। নামফলকেও নেই কোনো কর্মকর্তার নাম!

প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা ও কর্মচারী সূত্রে জানা গেছে, অফিসে নেই কোনো অফিস সহকারী ও হিসাবরক্ষক কর্মকর্তাও। একজন কর্মকর্তা, একজন কম্পাউন্ডার ছয়জন কর্মচারী ও দুইজন অফিস সহায়ক দিয়ে চলছে প্রতিষ্ঠানটি। একজন নারী কম্পাউন্ডার ও কর্মচারীরা করছেন ছাগলের চিকিৎসা। ফলে অসুস্থতাজনিত কারণে প্রতিবছর ৫ শতাংশ ছাগলের মৃত্যু হচ্ছে।

ছাগল উন্নয়ন খামারের কর্মচারী মো. বাশার বাংলানিউজকে বলেন, দুইজন কর্মচারী আছি। আমরাই সব দেখা শোনা করি। ছাগলের খাওয়া, গোসল, রোগবালাই হলে আমরাই যতটুকু পারি করি। আমি চাকরি নেওয়ার আগেও নাকি এই ভেটেনারি সার্জনের কক্ষ খালিই ছিল। এখনও খালি আছে। কোনো কর্মকর্তা আসেনি।

ভেটেনারি সার্জন না থাকায় প্রাথমিক চিকিৎসার দেখভালের বিষয়টি দেখেন বলে জানিয়েছেন একমাত্র কম্পাউন্ডার উপ-সহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (প্রাণী স্বাস্থ্য) লুৎফুন নেছা।  

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ছাগলের সাধারণ কোনো সমস্যা হলে সেই তা আমিই সমাধানে চেষ্টা করি। আর বড় ধরনের কোনো সমস্যা হলে পার্শ্ববর্তী পশুর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে আমরা সাহায্য নিই।

সরকারি ছাগল উন্নয়ন খামারের প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সমরেশ কুমার বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের এখানে একজন ভেটেনারি পোস্ট আছে। যেটা এই খামারটির জন্মের পর থেকেই খালি রয়েছে। খামারের কাঠামো তৈরির সময় আমাদের অফিসসহ এই ভেটেনারি সার্জনের কক্ষও তৈরি করা হয়েছিল। তবে কোনো কর্মকর্তা এই পোস্টে এখনও আসেনি। ৬ জন ছাগল পরিচর্যাকারী রয়েছেন। তবে তাদের দিয়ে এই বিশাল পরিমাণ ছাগলের দেখভাল করা খুবই কষ্টের বিষয়। অতিরিক্ত গরম ও শীতে ডায়রিয়া, পেট ফাঁপা, স্বাভাবিক জ্বরজনিত রোগে ছাগল অসুস্থ হয়। এতে প্রতিবছর ভালো চিকিৎসার অভাবে প্রায় ৫ শতাংশ ছাগল মারা যাচ্ছে। তাই একজন ভেটেনারি সার্জন আমাদের এখানে নিয়োগ দেওয়া উচিত।

বাংলাদেশ সময়: ০৮২২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০২২
এসএফ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।