ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

টংক আন্দোলনের একমাত্র সাক্ষী কুমুদিনী হাজং

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৪, ২০২২
টংক আন্দোলনের একমাত্র সাক্ষী কুমুদিনী হাজং কুমুদিনী হাজং

নেত্রকোনা: ঐতিহাসিক টংক আন্দোলনের একমাত্র সাক্ষী নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার বহেরাতলী গ্রামের কুমুদিনী হাজং। টংক আন্দোলনের নেত্রীর বয়স এখন ১০০।

 

বৃটিশ আমলে সুসং দুর্গাপুরে টংক প্রথার প্রচলন ছিল। জমিতে ফসল হোক বা না হোক টংকের ধান জমিদারদের দিতেই হতো। না দিলে কৃষকদের ওপর জমিদাররা অত্যাচার, নির্যাতন করতেন।

১৯৩৭ সালে কমিউনিস্ট নেতা কমরেড মনি সিংহের নেতৃত্বে কৃষকরা এ প্রথার বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন শুরু করেন।

এই আন্দোলনে কুমুদিনী হাজংয়ের স্বামী লংকেশ্বর হাজং সক্রিয়ভাবে জড়িয়ে পড়েন।
১৯৪৬ সালের ৩১ জানুয়ারি আন্দোলনকারীদের দমন করতে ব্রিটিশ সরকারের সশস্ত্র সেনারা লংকেশ্বরকে ধরতে তার বাড়িতে যায়। স্বামীর অবস্থান জানাতে না চাইলে সেনারা ক্ষিপ্ত হয়ে কুমুদিনী হাজংকে ধরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালায়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে নারী নেত্রী রাশিমনি হাজংয়ের নেতৃত্বে শতাধিক হাজং নারী পুরুষ প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।  

ব্রিটিশ সেনাদের কাছ থেকে কুমুদিনী হাজংকে ছাড়িয়ে নিতে গেলে নৃশংসভাবে তাদের ওপর গুলি চালান সেনারা। এতে রাশিমনি হাজং, সুরেন্দ্র হাজংসহ বেশ কয়েকজন মারা যান।  

সেনারা কুমুদিনী হাজংকে ছেড়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। আন্দোলনের মুখে ১৯৫০ সালে বিলুপ্ত হয় টংক প্রথা। কুমুদিনী হাজং থাকেন দুর্গাপুর উপজেলার বহেরাতলী গ্রামে ছেলে অর্জুন হাজংয়ের সাথে।

অর্জুন হাজংয়ের স্ত্রী আর্মিলা হাজং জানান, কুমুদিনী হাজং প্রায়ই অসুস্থ থাকেন। তার উন্নত চিকিৎসার দরকার।  

দুর্গাপুর উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জামাল তালুকদার বলেন, গৌরবের সংগ্রামী মুখ কুমুদিনী হাজং আমাদের অহংকার। তার প্রতি আমাদের রয়েছে শ্রদ্ধা। তবে তিনি এখনো রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কোনো সম্মাননা না পাওয়াটা আমাদের একটা দুঃখবোধ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৪, ২০২২
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।