ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মধ্য অক্টোবরে বসছে রূপপুর এনপিপির দ্বিতীয় ইউনিটের রিঅ্যাক্টর

শামীম খান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২২
মধ্য অক্টোবরে বসছে রূপপুর এনপিপির দ্বিতীয় ইউনিটের রিঅ্যাক্টর রূপপুর এনপিপির দ্বিতীয় ইউনিটের অভ্যন্তরীণ কন্টেইনমেন্টে ডোম স্থাপন হয় গত জুনে

ঢাকা: আগামী অক্টোবর মাসের মাঝামাঝিতে নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের (আরএনপিপি) দ্বিতীয় ইউনিটের রিঅ্যাক্টর ভেসেল স্থাপিত হবে। এ জন্য সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

বাকি রয়েছে শুধু উদ্বোধনের তারিখ নির্ধারণ।

আরএনপিপি’র দ্বিতীয় ইউনিটের রিঅ্যাক্টর ভেসেল স্থাপনের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। করোনা পরিস্থিতির কথা বিবেচনায় রেখে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এ অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান ও রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি করপোরেশনের (রোসাটম) মহাপরিচালক অ্যালেক্সি লিখাচেভ। এছাড়া আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) প্রতিনিধিও উপস্থিত থাকতে পারেন এ অনুষ্ঠানে।

প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যান্যদের উপস্থিতির বিষয়গুলো সমন্বয় করে তারিখ নির্ধারণের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘এখনও তারিখটি চূড়ান্ত হয়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ রিঅ্যাক্টর স্থাপন উদ্বোধন করবেন। তার সময়ের বিষয় রয়েছে। তিনি কখন সময় দিতে পারবেন সেটার উপর তারিখ চূড়ান্ত করার বিষয়টি নির্ভর করছে। ’

তিনি আরও বলেন, ‘এটি অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে হতে পারে ৷ আমাদের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এ প্রকল্পের সব কাজই শিডিউল অনুসারে এগিয়ে যাচ্ছে। ’

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক পরমাণু বিজ্ঞানী ড. শৌওকত আকবরও বাংলানিউজকে বলেন, ‘রিঅ্যাক্টর স্থাপনের সার্বিক প্রস্তুতি শেষ। এখন তারিখ চূড়ান্তের অপেক্ষা। আগামী মাসের মাঝামাঝিতে এটা হতে পারে।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা গেছে, পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পর্যায় হচ্ছে রিঅ্যাক্টর স্থাপন। রিঅ্যাক্টর ভেসেলকে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের হার্ট বা হৃদপিণ্ড বলা হয়। দ্বিতীয় ইউনিটের এই রিঅ্যাক্টর স্থাপনের আগে রিঅ্যাক্টর ভবনের বিভিন্ন স্তরের অবকাঠামোসহ সংশ্লিষ্ট পর্যায়গুলো ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। রিঅ্যাক্টর স্থাপন হলে রূপপুর প্রকল্পের দ্বিতীয় ইউনিটেরও মাইলফলক অগ্রগতিও দৃশ্যমান হবে।

এর আগে ২০২১ সালের ১০ অক্টোবর রূপপুর এনপিপির প্রথম ইউনিটের রিঅ্যাক্টর স্থাপন করা হয়। আগামী বছর শেষ দিকে প্রথম ইউনিটের নিউক্লিয়ার ফুয়েল লোডিং উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। এ সংক্রান্ত প্রস্তুতিও চলছে। ফুয়েল লোডিংয়ের মধ্য দিয়ে উৎপাদনে যাবে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র।

পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে রাশিয়ার সর্বাধুনিক প্রযুক্তি, আর্থিক ও প্রকল্প বাস্তবায়নসহ সার্বিক সহযোগিতায় নির্মিত হচ্ছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এতে স্থাপন করা হচ্ছে রাশিয়ার উদ্ভাবিত সর্বশেষ প্রযুক্তি থ্রি জি(প্লাস) ভিভিইআর ১২০০ মডেলের রিঅ্যাক্টর ৷ রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি করপোরেশনের (রোসাটম) প্রকৌশল শাখা প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।

গত বছর আগস্টে রাশিয়া থেকে দ্বিতীয় ইউনিটের রিঅ্যাক্টরটি দেশে পৌঁছয়। রোসাটমের জেএসসি এইএম টেকনোলোজির ভল্গোদনস্ক শাখার এটোমম্যাস প্লান্টে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের রিঅ্যাক্টরসহ ভারী সরঞ্জামগুলো প্রস্তুত করা হয়েছে।

৩৩৩ দশমিক ৬ টন ওজনের ভিভিইআর-১২০০ রিঅ্যাক্টর ভেসেল প্রস্তুত করতে দুই বছরের বেশি সময় লাগে। এটোমম্যাসের কারখানা থেকে রিঅ্যাক্টর ভেসেল ভল্গোদনস্কের পানির রিজার্ভয়ারে নেওয়া হয়। এরপর বার্জে উঠিয়ে পাঠানো হয় নভোরোসিস্কে। তারপর এটি কৃষ্ণ সাগর ও সুয়েজ খাল হয়ে ১৪ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশের মোংলা বন্দরে আসে। এ কার্গো পরিবহনে ২ মাসের বেশি সময় লাগে।

নির্দিষ্ট ভবনের সার্বিক প্রস্তুতির পর এখন রিঅ্যাক্টরটি স্থাপন হতে যাচ্ছে। দ্বিতীয় ইউনিটটি থেকে ২০২৪ সালে উৎপাদনে যাওয়ার কথা রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২২
এসকে/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।