ঢাকা, সোমবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

জানাজা শেষে মিরপুরের পথে আকবর আলি খানের মরদেহ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৯, ২০২২
জানাজা শেষে মিরপুরের পথে আকবর আলি খানের মরদেহ

ঢাকা: তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা, মন্ত্রীপরিষদ সচিব ও বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ ড. আকবর আলি খানের জানাজা গুলশান কেন্দ্রীয় (আজাদ) মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (০৯ সেপ্টেম্বর) বাদ জুমা তার নামাজের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

জানাজা পড়ান মসজিদের খতিব মাওলানা আহমদুল হাসান।

জানাজা শেষে ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা জানানো হয়। এরপর উপস্থিত সবাই ১ মিনিট নীরবতা পালন করেন।

জানাজায় উপস্থিত হয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ড. আকবর আলি খান সারাজীবন ধরেই জনগণের স্বার্থে কাজ করেছেন। তার চলে যাওয়ার এ শূন্যতা সহজে পূরণ হবে না। তার অনেকগুলো বই আছে যেগুলো অর্থনীতিকে আজীবন সমৃদ্ধ করবে।

 

জানাজায় উপস্থিত থেকে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, তার মৃত্যুতে জাতির এক অপূরণীয় ক্ষতি গেল। তিনি আমরণ গণমানুষের জন্য কাজ করেছেন।

বৃহস্পতিবার (০৮ সেপ্টেম্বর) রাতে অসুস্থ হয়ে পড়লে আকবর আলি খানকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।  

ড. আকবর আলি খান ১৯৪৪ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ধানমন্ডি গভ: বয়েজ হাই স্কুলে তার পুরো বিদ্যালয় জীবন পার করেন। তিনি ঢাকা কলেজে ভর্তি হন এবং ১৯৬১ সালে আই.এস.সি পাশ করেন। এরপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে অধ্যয়ন করেন এবং সেখান থেকে ১৯৬৪ সালে সম্মান ও ১৯৬৫ সালে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন দুটিতেই প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হন।

সরকারি চাকরিতে যোগদানের পূর্বে তিনি কিছু সময়ের জন্য শিক্ষকতা করেন। ১৯৬৭-৬৮ মৌসুমে তিনি লাহোরের সিভিল সার্ভিস একাডেমিতে যোগ দেন। প্রশিক্ষণ শেষে ১৯৭০ সালে হবিগঞ্জ মহুকুমার এস.ডি.ও হিসেবে পদস্থ হন। তিনি তার এলাকায় সুষ্ঠুভাবে ১৯৭০-এর নির্বাচন পরিচালনা করেন।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি হবিগঞ্জের মহুকুমা প্রশাসক বা এসডিও ছিলেন এবং যুদ্ধকালীন সময়ে সক্রিয়ভাবে মুজিবনগর সরকারের সাথে কাজ করেন। মুক্তিযুদ্ধ কালে পাকিস্তান সরকার তার অনুপস্থিতিতে তার বিচার করে এবং ১৪ বৎসরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে।

 

দেশ স্বাধীন হবার পর তিনি সরকারি চাকরি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতার সাথে যুক্ত ছিলেন। ২০০৬ সালে তিনি রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের একজন উপদেষ্টা ছিলেন। পরবর্তীতে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন না হওযার আশঙ্কায় তিনি তিনজন উপদেষ্টার সাথে একযোগে পদত্যাগ করেন। তিনি রেগুলেটরি রিফর্মস কমিশনের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন।  

আকবর আলি খানের লিখিত গ্রন্থের সংখ্যা ১৮টি। তার ‘হিস্টোরি অব বাংলাদেশ” বা বাংলাদেশের ইতিহাস এশিয়াটিক সোসাইটি কর্তৃক প্রকাশিত। বইটিতে তিনি বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ও সামাজিক উত্থান ও পরিবর্তন নিয়ে গবেষণা করার পাশাপাশি দেশে ইসলাম ধর্মের বিকাশ নিয়ে আলোচনা করেছেন। তার অর্থনীতিবিষয়ক বই ‘পরার্থপরতার অর্থনীতি’ তুমুল আলোচিত হয়। এতে তিনি সরস ও প্রাঞ্জল ভাষায় অর্থনীতির জটিল বিষয়বস্তু ব্যাখ্যা করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৯, ২০২২
এমকে/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।