ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বরগুনায় ঢুকতে দিচ্ছে না ঢাকার কোনো বাস

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩, ২০২২
বরগুনায় ঢুকতে দিচ্ছে না ঢাকার কোনো বাস

বরগুনা: বরগুনায় ঢুকতে দিচ্ছে না ঢাকার কোনো বাস। পুরো মাসব্যাপী চলতে থাকা রূপাতলী-বাকেরগঞ্জ বাসমালিক সমিতির স্বেচ্ছাচারিতায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বরগুনার যাত্রীরা।

কোনো ফেরি ছাড়া সুগম এই বাকেরগঞ্জ-বরগুনা আঞ্চলিক মহাসড়কটি বরগুনা জেলা শহরে প্রবেশের একমাত্র পথ। বিগত কয়েক বছর ধরে এই রুটেই নিয়মিত ঢাকা-বরগুনার বাস চলে আসছিল।  

অভিযোগ উঠেছে, পুরো আগস্ট মাস ধরে রূপাতলী, বাকেরগঞ্জ ও পটুয়াখালী বাসমালিক সমিতি সিন্ডিকেট করে রুট পারমিটের অজুহাত তুলে বাকেরগঞ্জ-বরগুনা রুটে বাস প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। প্রবেশ করতে গিয়ে প্রায়ই লাঞ্ছনার শিকার হচ্ছেন বাসচালকরা। শারীরিকভাবে লাঞ্ছনার পাশাপাশি কান ধরিয়ে যাত্রীদের সামনে চরম অপমান করার অভিযোগও করেন বাসচালকরা। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বরগুনার বাসযাত্রীরা।

বরগুনার মানুষের স্বপ্ন ছিল, পদ্মা সেতুটি চালু হলে মাত্র পাঁচ ঘণ্টায় ঢাকা থেকে বরগুনা আসবে যাত্রীরা। তবে সেই স্বপ্ন সত্যি হতে দেয়নি রূপাতলী বাস মালিক সমিতি।  

বাকেরগঞ্জ পয়েন্টে বাসমালিকদের লোকজন দিয়ে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা বরগুনাগামী বাসগুলোকে ফিরিয়ে দিচ্ছেন প্রতিদিন।  

তখন বাধ্য হয়েই যাত্রীদের নিয়ে পটুয়াখালী-আমতলী রুট হয়ে আমতলীর ফেরি পাড় হয়ে বরগুনা প্রবেশ করতে হচ্ছে।  

অতিরিক্ত পথ ঘুরে আসায় যাত্রীদের ভাড়া যেমন বেশি দিতে হচ্ছে, তেমনি সময়ও লেগে যাচ্ছে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা বেশি।  

দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় দুর্ভোগ আরো কয়েকগুণ বেড়ে যায়। সময় কিছুটা বাঁচানোর জন্য ঝুঁকি নিয়ে যাত্রীদের কখনো কখনো খেয়ায় উত্তাল পায়রা নদী পাড়ি দিতে হচ্ছে।

রশিদ ফরাজী নামের এক যাত্রী বাংলানিউজকে বলেন, ছোট বাচ্চা নিয়ে বাসে ঢাকা থেকে বরগুনা এসেছি। সড়কপথে ঢাকার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ থাকলেও আমতলী ফেরি পার হয়ে বরগুনা আসতে হয়েছে আমাদের। এতে সময় লেগেছে ১০ ঘণ্টারও বেশি। অথচ কয়েক দিন আগে আমি বাসে পাঁচ ঘণ্টায় বরগুনা থেকে ঢাকা পৌঁছেছি। স্বপ্নের পদ্মা সেতুর পরও আমাদের দুর্ভোগ কমেনি। আগের মতোই আছে।

বেসরকারি চাকরিজীবী নুপুর আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, ফেরি পার হয়ে বরগুনা থেকে ঢাকা এবং ঢাকা থেকে বরগুনা যাওয়া-আসা করতে হচ্ছে যাত্রীবাহী বাসগুলোর। তাই সময় লাগছে ১০ ঘণ্টারও বেশি। পদ্মা সেতুর সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছি আমরা। তাই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

সংকটের বিষয়ে বরগুনা বাসমালিক সমিতির সেক্রেটারি মো. ছগির হাওলাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি এ বিষয়ে কিছু বলতে পারবেন না বলে জানান।

বরিশালের বাস মালিক ও শ্রমিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদেরও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাড. ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু এমপি বাংলানিউজকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যেই আমি বাস মালিক ও বিআরটিএ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ সরেজমিনে বিষয়টি তদন্ত করেছেন। বরগুনাবাসীর প্রত্যাশা, এই সংকটের সমাধান হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩, ২০২২
এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।