ঢাকা, রবিবার, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ মে ২০২৪, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

১০ বছর ধরে মহিউদ্দিনের পাখিপ্রেম

ডিষ্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩১ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০২২
১০ বছর ধরে মহিউদ্দিনের পাখিপ্রেম

ভোলা: ভোলার লালমোহনে পাখির প্রতি ভালোবাসার এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন পাখিপ্রেমী মহিউদ্দিন। প্রতিদিন নিদিষ্ট সময়ে পাখি ছুটে আসে তার কাছে।

তখন তিনি স্নেহ-ভালোবাসায় খাবার তুলে দেন ক্ষুদার্থ পাখিদের। টানা ১০ বছর ধরে কয়েক শতাধিক শালিক পাখির একটি ঝাককে খাবার দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। এ যেন মানুষ আর পাখির মধ্যে জমে ওঠা অনন্ত প্রেম।

পাখির প্রতি ভালোবাসার এমন দৃষ্টান্ত দেখতে ভিড় জমান এলাকাবাসি। তাদের প্রশংসায় ভাসেন মহিউদ্দিন। আর তাতে আরও উৎসাহ খুজে পান তিনি।

মহিউদ্দিনের সঙ্গে শালিক দলের এমন ভালোবাসা দেখলে মনে হতে পারে পাখিগুলো যেন তার পোষ মানানো। কিন্তু বাস্তবে তা নয়। খাবার বিতরণ করলেই ছুটে আসে শালিকের ঝাক। তাও আবার একটি দুটি নয়, আসে কয়েক'শ পাখি।

ভোলার লালমোহন উপজেলার সৈনিক বাজারের চায়ের দোকানি মহিউদ্দিন খুব ভোরে এসে নিজের দোকান খোলেন। সেখান থেকে রুটি, বিস্কুট এবং মুড়ি ছিটিয়ে দেওয়া মাত্রই চলে আসে পাখির ঝাক। ভালোবাসার পরশ পেয়ে পাখিগুলো নির্ভয়ে সেই খাবাগুলো গ্রহণ করে আবার চলে যায়। দেখলে মনে হবে পাখিগুলো মহিউদ্দিনের বেশ পরিচিত এবং আপন।

পাখির প্রতি ভালোবাসা থেকেই এমনটা করছেন বলে জানিয়েছেন মহিউদ্দিন।  তিনি বলেন, শুরুতে ৫০ থেকে ৬০টি পাখি আসতো খাবার খেতে। এখন প্রায় ৩৫০ থেকে ৪০০টিরও বেশি পাখি আসে। সেগুলোকে খাবার দিতে আমার খুব ভালো লাগে। পাখিগুলোকে আমি আমার সন্তানের মতো করে ভালোবাসি। যতদিন পারবো তাদের আমি খাবার তুলে দেব।

পাখিপ্রেমী মহিউদ্দিনের বাড়ি ভোলার লালমোহন উপজেলার পশ্চিম চর উমেদ ইউনিয়ন ইলিশাকান্দি গ্রামে। টানা ১০ বছর ধরে তিনি নিজের উপার্জিত টাকার একটি অংশ থেকে পাখিদের খাবার খাওয়াচ্ছেন। সকলের সহযোগীতা পেলে ভবিষ্যতে আরও বেশি পাখির প্রতি ভালোবাসার দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চান তিনি।

মহিউদ্দিনের সঙ্গে শালিকদের এমন ভালোবাসার দৃশ্য দেখতে দূর দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন অনেকে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী শরিফুল ইসলাম রহমান বলেন, আমরা কয়েক বছর ধরে দেখে আসছি মহিউদ্দিন পাখিগুলোকে খাবার তুলে দিচ্ছে। পাখিরা যখন খাবার খেতে আসে তখন দেখতে খুব ভালো লাগে। সবার পাখির এমন ভালোবাসা থাকা উচিত বলে মনে করি।

ন্যাচার কনজারভেশন কমিটি (এনসিসি) ভোলা সমন্বয়কারি জসিম জনি বাংলানিউজকে বলেন, অনেক সময় দেখা যায় বনাঞ্চলে নির্বিচারে গাছ কাটাসহ নানা কারণে দেশীয় পাখি বিলুপ্ত হতে চলছে। এসব পাখিদের অবাদ বিচরণ নিশ্চিত করা জরুরি। পাখিপ্রেমী মহিউদ্দিনেন মতো সমাজের প্রত্যেক মানুষের উচিত পাখিকে ভালোবাসা।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০২২
এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।