ঢাকা, রবিবার, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ১২ মে ২০২৪, ০৩ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

বসুন্ধরা সিটিতে অগ্নি নির্বাপন মহড়া অনুষ্ঠিত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০২২
বসুন্ধরা সিটিতে অগ্নি নির্বাপন মহড়া অনুষ্ঠিত

ঢাকা: হঠাৎ ধোয়ায় চারপাশ অন্ধকার হয়ে এলো। সামনে-পেছনে কিছুই দেখা যাচ্ছিল না।

চারপাশ থেকে ভেসে আসছিল ‘আগুন, আগুন’ চিৎকার। এক থেকে দুই মিনিটের মধ্যে বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সের লেভেল ৮-এর সিনেমা হলের বা পাশে দৌড়ে চলে আসেন ফায়ার ফাইটাররা। কেউ আগুন নেভানোর চেষ্টা করছিলেন আবার অন্য ফাইটাররা রেসকিউ বা উদ্ধার কাজে ব্যস্ত ছিলেন। আগুনে আটকে পড়া নারী-পুরুষদের উদ্ধার করতে ব্যস্ত ছিলেন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স ও বসুন্ধরা সিটি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের (বিসিডিএল) ফায়ার ও সেফটি কর্মকর্তারা।  

এভাবেই আগুন লাগার কথাগুলো বর্ণনা করছিলেন আখি, মোরশেদা, সোহরাব ও শাহীন।

মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর বসুন্ধরা সিটিতে বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের সহায়তায় এবং বসুন্ধরা সিটি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের (বিসিডিএল) ফায়ার ও সেফটি সেকশন পরিচালিত বার্ষিক অগ্নি মহড়া অনুষ্ঠিত হয়।  

অগ্নি প্রতিরোধ, নির্বাপন, উদ্ধার ও জরুরি বহির্গমন বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে আয়োজন করা হয় এ মহড়ার। বিসিডিএল-এর পক্ষে এ মহড়ায় নেতৃত্ব দেন মেজর (অব.) মো. রবিউল ইসলাম।

জানা যায়, এ অগ্নি নির্বাপন মহড়ায় ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের চারটি ইউনিট অংশ নেয়। এছাড়াও তাদের সরঞ্জামের মধ্যে ছিল টার্নটেবিল লেডার (বহুতল ভবন থেকে আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধার করার জন্য এই মেশিন ব্যবহার করা হয়ে থাকে), একটি পানিবাহী গাড়ি, সেকেন্ড কল বা পানির পাম্প যুক্ত গাড়ি, একটি অ্যাম্বুলেন্স, তিনজন করেছেন রোপ রেপলিং। এছাড়া প্রায় ২০ জনকে ট্রলি, হুইলচেয়ার ও কাঁধে করে উদ্ধার করা হয়।

অগ্নি নির্বাপন মহড়া শেষে বসুন্ধরা সিটি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের  (বিসিডিএল) ইন-চার্জ মেজর (অব.) মো. মোহসিনুল করিম বলেন, প্রতিবছর আমাদের এখানে একটা মহড়া হয়। সিভিল ডিফেন্স ও ফায়ার সার্ভিস তারা যে কাজ করেন সেটাই এখানে (মহড়ায়) দেখি। এ মহড়াটা তাদের। মহড়ার পেছনে যে মহড়া আছে সেটা তাদের তত্ত্বাবধানে হয়। তারা জানেন আমাদের পরিকল্পনা।  

মহড়ায় ভালো লাগার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বসুন্ধরা সিটি শপিংমলের ছাদ থেকে রেপলিং করে একজন নেমে আসলেন। মহড়ায় এটা সবচেয়ে বেশি আকর্ষণীয় লেগেছে। রেপলিংটা কি সাধারণ মানুষ বুঝবেন না। এটা সাধারণ কোনো বিষয় নয়।  

তিনি বলেন, বহুতল ভবনে আগুন লাগলে কি হবে আমরা তো দেখছি না। সেটা ভয়াবহ হতে পারে। আমরা চর্চা রাখছি। আমরা সাধারণত ফায়ার সার্ভিস থেকে আশা করি উদ্ধার তৎপরতা কিভাবে করা যায়। বসুন্ধরা সিটি শপিংমলের ভেতরে ফায়ার সার্ভিসের পাইপে পানি দিয়ে আগুন নেভানো সম্ভব নয়। আমাদের হাইডেন পিলার/ হাইডেন পাইপ দিয়ে পানি নেভানো সম্ভব। ফায়ার সার্ভিসের কাজ হিডেন (দৃষ্টির আড়ালে থাকা) পিলার/হিডেন পাইপ ঠিক আছে কিনা পরীক্ষা করা। আমাদের ভুলভ্রান্তি থাকলে দেখিয়ে দেওয়া ও গাইড করা। যাতে আমরাও প্রস্তুত থাকি ফায়ার ফাইটিং করার জন্য।  

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স তেজগাঁও জোন-২ প্রধান মো. আবুল বাশার বলেন, সামান্য আগুনে একটি এস্টিংগুইসার যথেষ্ট। যদি আমি আগুনকে বড় হওয়ার সুযোগ দেই তাহলে আগুন বড় হবে। আজকে সুন্দর একটি মহড়া উপস্থাপন করা হলো। এরকম প্রচেষ্টা চলমান থাকলে দুর্ঘটনায় দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব। কমিয়ে আনাও সম্ভব। পরবর্তীতে বসুন্ধরা কর্তৃপক্ষ নিজেরা এ ধরনের মহড়া আয়োজন করলে ফায়ার সার্ভিস উপস্থিত থাকবে।

মহড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, মহাব্যবস্থাপক (মানবসম্পদ ও প্রশাসন) এবং তত্ত্বাবধানে ছিলেন ফায়ার অ্যান্ড সেফটি শাখার উর্দ্ধতন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর কবির, নির্বাহী পরিচালক (মেকানিক্যাল) মাহবুব মোর্শেদ খান, বিসিডিএল ও বিসিডিএলের বিভিন্ন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০২২
এমএমআই/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।